Ajker Patrika

ট্রাম্পের ১০০ দিনে মার্কিন অর্থনীতিতে ধস

অনলাইন ডেস্ক
১০০তম কর্মদিবস উপলক্ষে গতকাল মিশিগানের ওয়ারেনের ম্যাকম্ব কমিউনিটি কলেজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত
১০০তম কর্মদিবস উপলক্ষে গতকাল মিশিগানের ওয়ারেনের ম্যাকম্ব কমিউনিটি কলেজে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমেছে। এ সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নতুন এক বাণিজ্য কৌশল বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর দাবি, বিশ্বজুড়ে শুল্ক আরোপ করলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। কিন্তু বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এমন নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি ক্রমাগত সংকুচিত হয়ে পড়েছে এবং অন্যান্য সময়ের তুলনায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে গেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শুরুতে (জানুয়ারি-মার্চ ২০২৫) যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) ০.৩ শতাংশ কমেছে, যা ২০২৪ সালের শেষ প্রান্তিকে ২.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। ২০২২ সালের পর এবারই প্রথম অর্থনীতির এমন সংকোচন, যা যুক্তরাষ্ট্রকে কার্যত একটি মন্দার দ্বারপ্রান্তে দাঁড় করিয়েছে।

ট্রাম্পের নয়া শুল্কনীতি ও এর প্রভাবে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যযুদ্ধে কমেছে ভোক্তাদের আস্থা। এপ্রিল মাসে এটি ৩২ শতাংশ কমে গেছে, যা ১৯৯০ সালের মন্দার পর সর্বনিম্ন স্তরে নেমে এসেছে।

ট্রাম্প প্রথম প্রান্তিকের বেশির ভাগ সময় কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ব্যাপক শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন এবং সাময়িকভাবে বাস্তবায়নও করেছেন। একই সঙ্গে তিনি চীনা রপ্তানির ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করে চীনকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছেন।

দ্বিতীয় প্রান্তিকের প্রথম দিকেই তিনি বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের পণ্যের ওপর আরও শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। পরে অবশ্য চীন ছাড়া সমস্ত দেশের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহার করে নেন। বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী, ট্রাম্প বিশ্বের বেশির ভাগ অংশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ সর্বজনীন শুল্ক এবং চীনের আমদানি পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন। এ ছাড়া মার্কিন শেয়ারবাজারে ব্যাপক ওঠানামার প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প নির্দিষ্ট কিছু দেশের ওপর ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত আরোপিত পারস্পরিক শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেছেন।

তিনি মার্কিন গাড়ি প্রস্তুতকারকদেরও কিছুটা স্বস্তি দিয়েছেন। আগের নির্বাহী আদেশ অনুযায়ী গাড়ি আমদানির ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল। তবে গতকাল মঙ্গলবার তিনি এ–সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে, গাড়ির যন্ত্রাংশ আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি প্রস্তুত করা হলে শুল্ক কিছুটা মওকুফ করা হবে।

এদিকে চীনের সঙ্গে শুল্ক হ্রাসের আলোচনা চললেও সম্পূর্ণ শুল্ক প্রত্যাহার করা হবে না বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। এর জবাবে মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে প্রতিশোধ নিয়েছে চীন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ট্রাম্পের নীতিকে ‘ধমকের কৌশল’ বলে অভিহিত করেছেন।

ট্রাম্প তাঁর নয়া শুল্কনীতি ও অর্থনীতির ওপর এর প্রভাব নিয়ে সমালোচনার প্রতি সংবেদনশীল। গত মাসে ট্রাম্প ফেডারেল রিজার্ভের চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। পাওয়েলের অপরাধ, তিনি বলেছেন, ট্রাম্পের শুল্কনীতি বাজারে স্থায়ীভাবে মূল্যবৃদ্ধি করতে পারে। তবে বাজার পতনের পর ট্রাম্প পিছু হটেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পাওয়েলকে বরখাস্ত করার কোনো উদ্দেশ্য তাঁর ছিল না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত