যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত গতকাল বুধবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ক্ষমতাকে অবৈধ ঘোষণা করে এক যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাণিজ্য অংশীদারদের (বিভিন্ন দেশ) কাছ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর সর্বাত্মক শুল্ক আরোপ করে তাঁর ‘ক্ষমতা অতিক্রম’ করেছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি চান, আইফোন যেন চীন বা ভারতে তৈরি না হয়ে যুক্তরাষ্ট্রেই তৈরি হয়। এ জন্য তিনি অ্যাপলকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘যদি যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি না হয়, তাহলে প্রতিটি আইফোনে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর পণ্য আমদানিতে শুল্ক আরোপ ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল রোববার, ট্রাম্প নিজেই এ কথা নিশ্চিত করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রোববার বলেছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ট্যাংক উৎপাদন বাড়াতে চান, টি-শার্টের নয়। তিনি আরও বলেছেন, তাঁর শুল্ক নীতির লক্ষ্য হলো ট্যাংক ও প্রযুক্তি পণ্যের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বাড়ানো, স্নিকার্স ও টি-শার্ট নয়। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যেকোনো বাণিজ্য চুক্তি ‘হুমকির ভিত্তিতে নয়, বরং সম্মানের ভিত্তিতে’ হতে হবে বলে কড়া বার্তা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গতকাল শুক্রবার ডোনাল্ড ট্রাম্প ইইউ থেকে আসা সব পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দেওয়ার পরই ইইউয়ের বাণিজ্যপ্রধান এই কথা বলেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন আমদানি শুল্কের ফলে অনেক উন্নয়নশীল দেশের বাণিজ্য খরচ বেশ বাড়বে। এ কারণে বৈশ্বিক বাণিজ্যে বৈষম্য বাড়ার ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলো। এ সময় উন্নয়নশীল দেশের রপ্তানি সম্ভাবনা কমবে পোশাক ও কৃষি খাতে। জাতিসংঘের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে আমদানি করা সব পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দিয়েছেন। আজ শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হচ্ছে না!
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিমানবন্দরে ভারতীয় আমের অন্তত ১৫টি চালান আটকে দিয়েছে মার্কিন কর্তৃপক্ষ। দেশে ফিরিয়ে আনতে গেলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে আশঙ্কায় আমগুলো ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রপ্তানিকারকেরা। লস অ্যাঞ্জেলেস, সান ফ্রান্সিসকো, আটলান্টাসহ আরও কয়েকটি বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয় আমগুলো।
চীনের জায়গা দখল করে বিশ্বজুড়ে পণ্য তৈরির কেন্দ্র হয়ে ওঠার বড় একটা স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল ভারত। সেই স্বপ্ন আরও বাস্তব মনে হচ্ছিল, যখন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল ঘোষণা দেয়—তারা আমেরিকায় বিক্রির জন্য আইফোনগুলো এখন থেকে ভারতেই তৈরি করবে।
অংশীজনদের মতামত উপেক্ষা করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশ জারির প্রতিবাদে দ্বিতীয় দিনের মতো সারাদেশে একযোগে কলম বিরতি পালন করছেন প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে কলম বিরতিতে রয়েছেন তাঁরা।
দেশের বিভিন্ন কর অঞ্চল ও কাস্টমস হাউসে কলম বিরতি চলছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে সরেজমিনে দেখা যায়, কর্মকর্তারা যথারীতি দপ্তরে এসেছেন। তবে কোনো দাপ্তরিক কাজ করছেন না তাঁরা। কেবল বাজেট প্রণয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এনবিআরের কর, শুল্ক ও মূসক নীতি বিভাগের কর্মকর্তারা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।
গতকাল সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় শুল্ক ইস্যু নিয়ে আলোচনায় বসে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। সেখানে দীর্ঘ আলোচনার পর একটি চুক্তিতে পৌঁছায় দুপক্ষ। চুক্তি অনুযায়ী, ৯০ দিনের আলোচনা চলাকালে যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক ১৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩০ শতাংশ করবে। অন্যদিকে, চীনও তাদের পাল্টা শুল্ক ১২৫ শতাংশ থেকে কম
বিনিয়োগকারীরাও এই উত্তেজনা প্রশমনের খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। ঘোষণা আসার পরই এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক ৩ দশমিক ২ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়, ডাও জোন্স বেড়েছে ২ দশমিক ৮ শতাংশ এবং নাসডাক বেড়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের মাধ্যমে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধের আশঙ্কা ব্যাপকভাবে চাগিয়ে উঠেছিল। তবে দুই দেশই সেই উত্তেজনা প্রশমনে পদক্ষেপ নিয়েছে। দুই দেশ পরস্পরের ওপর আরোপিত শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলা বাণিজ্যযুদ্ধ বন্ধের একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আলোচনা শুরু করেছেন। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ও আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়া এবং ১৮৪টি দেশ ও অঞ্চলের ওপর শুল্ক আরোপের ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাণিজ্যিক মন্দা দেখা দিয়েছে। শুল্ক হিসাব করলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশ চীন। তবে রপ্তানির তথ্য বলছে, ট্রাম্পের এমন শুল্কের পরও চীনের অর্থনীতি নতুন বার্তা দিচ্ছে।
শুল্ক নিয়ে নতুন চুক্তি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে। এই চুক্তির অংশ হিসেবে নির্দিষ্ট সংখ্যক ব্রিটিশ গাড়ির ওপর আমদানি কর হ্রাস করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্দিষ্ট পরিমাণ ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামও শুল্কমুক্তভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।