অনলাইন ডেস্ক
হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত মনোরম শহর পেহেলগাম ‘ভারতের সুইজারল্যান্ড’ হিসেবে খ্যাত। গতকাল মঙ্গলবার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের এই জনপ্রিয় পর্যটন এলাকায় জঙ্গি হামলা হয়। আকস্মিক এই হামলায় কমপক্ষে ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়েছেন।
অঞ্চলটিতে এখন পর্যটনের মৌসুম চলছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অমরনাথ যাত্রার জন্যও নিবন্ধন শুরু হয়েছে। গতকাল এই জায়গায় বেশ কিছু পর্যটকের সমাগম হয়েছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় এই হামলার একটি বিবরণ দিয়েছে—
—প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চার সশস্ত্র হামলাকারী পাশের জঙ্গলে লুকিয়ে ছিল।
—হামলাকারীদের হাতে ছিল অটোমেটিক অস্ত্র। জঙ্গল থেকে বের হয়েই তাঁরা পর্যটকদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে।
—প্রত্যক্ষদর্শী এক নারী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, হামলাকারী জঙ্গিরা নারীদের ছেড়ে দিয়ে শুধু পুরুষদের লক্ষ্য করে গুলি করে।
—কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মুসলিমদের বাদ দিয়ে হত্যার জন্য শুধু অমুসলিমদের টার্গেট করা হয়েছিল। তবে এই হামলায় একজন মুসলিম দোকানিও নিহত হয়েছেন।
—প্রত্যক্ষদর্শী আরেক নারী এএফপিকে বলেন, তারা নারীদের ছাড় দিচ্ছিল, কিন্তু পুরুষদের একের পর এক গুলি করছিল—এটা ঝড়ের মতো ভয়াবহ ছিল।
—সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষ আতঙ্কে দৌড়াচ্ছে, একজন নারী তাঁর গুরুতর জখম স্বামীর জন্য চিৎকার করে সাহায্য চাইছেন।
—আহত ব্যক্তিদের ঘোড়ার পিঠে করে প্রথমে নিকটস্থ চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়। কারণ, গাড়ি দিয়ে সরাসরি ওই জায়গায় যাওয়া যায় না।
এই জঙ্গি হামলায় চোখের সামনে স্বামীকে মারা যেতে দেখেন পল্লবী নামের এক নারী। তিনি জানান, শোকে মুহ্যমান অবস্থায় হামলাকারীর মুখোমুখি হয়ে বলেন, স্বামীর সঙ্গে তাঁকেও মেরে ফেলা হোক। তবে ওই সন্ত্রাসী জবাব দেয়, পল্লবী ও তাঁর ছেলের কোনো ক্ষতি করা হবে না, তাঁরা যেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে ঘটনার আদ্যোপান্ত প্রকাশ করেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এই হামলার পটভূমি, সর্বশেষ হামলায় কী ঘটেছিল, কাশ্মীরের জঙ্গিদের সম্পর্কে আমরা কী জানি—এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
কাশ্মীর হামলার পটভূমি কী
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মু ও কাশ্মীর ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিতর্কিত ভূখণ্ড। হিমালয়ের এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশ একাধিক যুদ্ধে জড়িয়েছে এবং এর মধ্যে অসংখ্য ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। ভারত দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ ও অর্থায়নের মাধ্যমে এই অঞ্চলে অস্থিরতা উসকে দেওয়ার জন্য দায়ী করে আসছে।
২০১৯ সালে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাশ্মীরের সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে অঞ্চলটিকে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্বতমালা ও সবুজ উপত্যকার জন্য পরিচিত এলাকাটি আবারও পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছিল।
সর্বশেষ হামলায় কী ঘটল
প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার খবর অনুযায়ী, শ্রীনগর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার (৫৬ মাইল) পূর্বে ‘ভারতের সুইজারল্যান্ড’ হিসেবে খ্যাত পেহেলগামে বেড়াতে আসা পর্যটকদের একটি দলের ওপর নির্বিচার গুলি চালায় বন্দুকধারীরা। হামলাকারীদের খুঁজে বের করার জন্য ঘটনার পরপরই একটি সামরিক অভিযান শুরু করা হয়। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামে পরিচিত ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলে বলেছেন, এই হামলার সঙ্গে তাঁর দেশের কোনো সম্পর্ক নেই।
কাশ্মীরে জঙ্গিদের হামলা অস্বাভাবিক না হলেও পর্যটকদের লক্ষ্যবস্তু করার ঘটনা বিরল। এ ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজনৈতিক সহিংসতা সামগ্রিকভাবে কমে এসেছিল। ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে এই ধরনের ৪৬টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, যা ২০১৮ সালের ২২৮টি ঘটনার তুলনায় অনেক কম।
কাশ্মীরি জঙ্গি সম্পর্কে যা জানা যায়
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, পাকিস্তান তার সীমানার মধ্যে কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের আশ্রয় দেয়। পাকিস্তানভিত্তিক একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠী অতীতে ভারতে বিভিন্ন হামলার দায় স্বীকার করেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
২০০৮ সালে মুম্বাইয়ের হামলা
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর ভারতের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র মুম্বাই শহরের ১২টি স্থানে হামলা চালায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে গড়ে ওঠা লস্কর-ই-তাইয়েবার ১০ জঙ্গি। ওই আক্রমণে ১৮০ জন নিরীহ মানুষ নিহত হন এবং ৩ শতাধিক মানুষ গুরুতর আহত হন, যাঁদের অনেকে পরে মারা যান অথবা সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যান। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল মুম্বাইয়ের দ্য তাজমহল প্যালেস হোটেল ও ওবেরাই ট্রাইডেন্ট হোটেলের হামলা। প্রায় ৬৪ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় সেই হোটেলের ২০০ জিম্মিকে মুক্ত করতে পেরেছিল ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী।
২০০১ সালে দিল্লির পার্লামেন্টে হামলা
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, পাকিস্তানি ইসলামপন্থী সালাফি জিহাদি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবা ও দেওবন্দি ইসলামপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠী জৈস-ই-মহম্মদ বহু আলোচিত এই হামলায় জড়িত ছিল। এই হামলায় একজন সাধারণ নাগরিকসহ ১২ জনের মৃত্যু হয়।
২০১৯ সালে কাশ্মীরের পুলওয়ামার হামলা
২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারির এই হামলায় ৪০ জন সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স বা সিআরপিএফ জওয়ান শহীদ হয়েছিলেন। ৭৮টি বাসে প্রায় আড়াই হাজারের বেশি সিআরপিএফ জওয়ান জম্মু থেকে যাচ্ছিলেন শ্রীনগরে। বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানি মদদপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন জৈস-ই-মহম্মদ এই হামলায় জড়িত ছিল।
জঙ্গিরা সাধারণত নিয়ন্ত্রণরেখা (Line of Control) বরাবর এবং এর আশপাশে চলাচল করে। এই অংশ কাশ্মীরের ভারত ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত অংশকে বিভক্ত করেছে। জঙ্গিরা মূলত বিচ্ছিন্ন ও জনবসতিহীন এলাকায় থাকে। ফলে নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষে তাদের খুঁজে বের করা কঠিন হয়। এই কারণে সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলে কয়েক হাজার ভারতীয় সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের বিষয়টি আবার অনেক স্থানীয় বাসিন্দার মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
কাশ্মীর হামলার প্রতিক্রিয়া
হামলার খবর পেয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে জরুরি বৈঠক করার জন্য শীর্ষ মন্ত্রীদের ডেকে পাঠান। তাঁর সরকার তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বড় ধরনের নিরাপত্তা অভিযান শুরু করেনি।
এর আগে ২০১৯ সালে পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার জবাবে ভারত পাকিস্তানের মাটিতে বিমান হামলা চালিয়েছিল, যা ১৯৭১ সালের পর প্রথম। সেই ঘটনার পর দুই দেশের যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে ডগ ফাইট বা আকাশযুদ্ধ হয়েছিল। এরপর ২০০১ সালে দিল্লির পার্লামেন্টে হামলার পর প্রতিবেশী এই দুই দেশকে সর্বাত্মক যুদ্ধের কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিল।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকালের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে তারা ‘ভারতের অবৈধভাবে’ দখল করা জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায় হামলায় পর্যটকদের প্রাণহানিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত মনোরম শহর পেহেলগাম ‘ভারতের সুইজারল্যান্ড’ হিসেবে খ্যাত। গতকাল মঙ্গলবার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের এই জনপ্রিয় পর্যটন এলাকায় জঙ্গি হামলা হয়। আকস্মিক এই হামলায় কমপক্ষে ২৬ জন পর্যটক নিহত হয়েছেন।
অঞ্চলটিতে এখন পর্যটনের মৌসুম চলছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অমরনাথ যাত্রার জন্যও নিবন্ধন শুরু হয়েছে। গতকাল এই জায়গায় বেশ কিছু পর্যটকের সমাগম হয়েছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় এই হামলার একটি বিবরণ দিয়েছে—
—প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চার সশস্ত্র হামলাকারী পাশের জঙ্গলে লুকিয়ে ছিল।
—হামলাকারীদের হাতে ছিল অটোমেটিক অস্ত্র। জঙ্গল থেকে বের হয়েই তাঁরা পর্যটকদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে।
—প্রত্যক্ষদর্শী এক নারী বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, হামলাকারী জঙ্গিরা নারীদের ছেড়ে দিয়ে শুধু পুরুষদের লক্ষ্য করে গুলি করে।
—কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মুসলিমদের বাদ দিয়ে হত্যার জন্য শুধু অমুসলিমদের টার্গেট করা হয়েছিল। তবে এই হামলায় একজন মুসলিম দোকানিও নিহত হয়েছেন।
—প্রত্যক্ষদর্শী আরেক নারী এএফপিকে বলেন, তারা নারীদের ছাড় দিচ্ছিল, কিন্তু পুরুষদের একের পর এক গুলি করছিল—এটা ঝড়ের মতো ভয়াবহ ছিল।
—সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মানুষ আতঙ্কে দৌড়াচ্ছে, একজন নারী তাঁর গুরুতর জখম স্বামীর জন্য চিৎকার করে সাহায্য চাইছেন।
—আহত ব্যক্তিদের ঘোড়ার পিঠে করে প্রথমে নিকটস্থ চিকিৎসাকেন্দ্রে নেওয়া হয়। কারণ, গাড়ি দিয়ে সরাসরি ওই জায়গায় যাওয়া যায় না।
এই জঙ্গি হামলায় চোখের সামনে স্বামীকে মারা যেতে দেখেন পল্লবী নামের এক নারী। তিনি জানান, শোকে মুহ্যমান অবস্থায় হামলাকারীর মুখোমুখি হয়ে বলেন, স্বামীর সঙ্গে তাঁকেও মেরে ফেলা হোক। তবে ওই সন্ত্রাসী জবাব দেয়, পল্লবী ও তাঁর ছেলের কোনো ক্ষতি করা হবে না, তাঁরা যেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে ঘটনার আদ্যোপান্ত প্রকাশ করেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ এই হামলার পটভূমি, সর্বশেষ হামলায় কী ঘটেছিল, কাশ্মীরের জঙ্গিদের সম্পর্কে আমরা কী জানি—এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
কাশ্মীর হামলার পটভূমি কী
মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জম্মু ও কাশ্মীর ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিতর্কিত ভূখণ্ড। হিমালয়ের এই অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই প্রতিবেশী দেশ একাধিক যুদ্ধে জড়িয়েছে এবং এর মধ্যে অসংখ্য ছোটখাটো সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। ভারত দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ ও অর্থায়নের মাধ্যমে এই অঞ্চলে অস্থিরতা উসকে দেওয়ার জন্য দায়ী করে আসছে।
২০১৯ সালে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কাশ্মীরের সাংবিধানিক বিশেষ মর্যাদা বাতিল করে অঞ্চলটিকে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পর্বতমালা ও সবুজ উপত্যকার জন্য পরিচিত এলাকাটি আবারও পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছিল।
সর্বশেষ হামলায় কী ঘটল
প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার খবর অনুযায়ী, শ্রীনগর থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার (৫৬ মাইল) পূর্বে ‘ভারতের সুইজারল্যান্ড’ হিসেবে খ্যাত পেহেলগামে বেড়াতে আসা পর্যটকদের একটি দলের ওপর নির্বিচার গুলি চালায় বন্দুকধারীরা। হামলাকারীদের খুঁজে বের করার জন্য ঘটনার পরপরই একটি সামরিক অভিযান শুরু করা হয়। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামে পরিচিত ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেলে বলেছেন, এই হামলার সঙ্গে তাঁর দেশের কোনো সম্পর্ক নেই।
কাশ্মীরে জঙ্গিদের হামলা অস্বাভাবিক না হলেও পর্যটকদের লক্ষ্যবস্তু করার ঘটনা বিরল। এ ছাড়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজনৈতিক সহিংসতা সামগ্রিকভাবে কমে এসেছিল। ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে এই ধরনের ৪৬টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে, যা ২০১৮ সালের ২২৮টি ঘটনার তুলনায় অনেক কম।
কাশ্মীরি জঙ্গি সম্পর্কে যা জানা যায়
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, পাকিস্তান তার সীমানার মধ্যে কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের আশ্রয় দেয়। পাকিস্তানভিত্তিক একাধিক জঙ্গিগোষ্ঠী অতীতে ভারতে বিভিন্ন হামলার দায় স্বীকার করেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—
২০০৮ সালে মুম্বাইয়ের হামলা
২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর ভারতের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র মুম্বাই শহরের ১২টি স্থানে হামলা চালায় পাকিস্তানের অভ্যন্তরে গড়ে ওঠা লস্কর-ই-তাইয়েবার ১০ জঙ্গি। ওই আক্রমণে ১৮০ জন নিরীহ মানুষ নিহত হন এবং ৩ শতাধিক মানুষ গুরুতর আহত হন, যাঁদের অনেকে পরে মারা যান অথবা সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে যান। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ ছিল মুম্বাইয়ের দ্য তাজমহল প্যালেস হোটেল ও ওবেরাই ট্রাইডেন্ট হোটেলের হামলা। প্রায় ৬৪ ঘণ্টার প্রচেষ্টায় সেই হোটেলের ২০০ জিম্মিকে মুক্ত করতে পেরেছিল ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী।
২০০১ সালে দিল্লির পার্লামেন্টে হামলা
বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর থেকে জানা যায়, পাকিস্তানি ইসলামপন্থী সালাফি জিহাদি সংগঠন লস্কর-ই-তাইয়েবা ও দেওবন্দি ইসলামপন্থী জঙ্গিগোষ্ঠী জৈস-ই-মহম্মদ বহু আলোচিত এই হামলায় জড়িত ছিল। এই হামলায় একজন সাধারণ নাগরিকসহ ১২ জনের মৃত্যু হয়।
২০১৯ সালে কাশ্মীরের পুলওয়ামার হামলা
২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারির এই হামলায় ৪০ জন সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স বা সিআরপিএফ জওয়ান শহীদ হয়েছিলেন। ৭৮টি বাসে প্রায় আড়াই হাজারের বেশি সিআরপিএফ জওয়ান জম্মু থেকে যাচ্ছিলেন শ্রীনগরে। বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, পাকিস্তানি মদদপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন জৈস-ই-মহম্মদ এই হামলায় জড়িত ছিল।
জঙ্গিরা সাধারণত নিয়ন্ত্রণরেখা (Line of Control) বরাবর এবং এর আশপাশে চলাচল করে। এই অংশ কাশ্মীরের ভারত ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত অংশকে বিভক্ত করেছে। জঙ্গিরা মূলত বিচ্ছিন্ন ও জনবসতিহীন এলাকায় থাকে। ফলে নিরাপত্তা বাহিনীর পক্ষে তাদের খুঁজে বের করা কঠিন হয়। এই কারণে সীমান্তবর্তী এই অঞ্চলে কয়েক হাজার ভারতীয় সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত সেনা মোতায়েনের বিষয়টি আবার অনেক স্থানীয় বাসিন্দার মধ্যে অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
কাশ্মীর হামলার প্রতিক্রিয়া
হামলার খবর পেয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সৌদি আরব সফর সংক্ষিপ্ত করে জরুরি বৈঠক করার জন্য শীর্ষ মন্ত্রীদের ডেকে পাঠান। তাঁর সরকার তাৎক্ষণিকভাবে কোনো বড় ধরনের নিরাপত্তা অভিযান শুরু করেনি।
এর আগে ২০১৯ সালে পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হামলার জবাবে ভারত পাকিস্তানের মাটিতে বিমান হামলা চালিয়েছিল, যা ১৯৭১ সালের পর প্রথম। সেই ঘটনার পর দুই দেশের যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে ডগ ফাইট বা আকাশযুদ্ধ হয়েছিল। এরপর ২০০১ সালে দিল্লির পার্লামেন্টে হামলার পর প্রতিবেশী এই দুই দেশকে সর্বাত্মক যুদ্ধের কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিল।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গতকালের হামলায় নিহত ব্যক্তিদের প্রতি শোক ও সমবেদনা জানিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে তারা ‘ভারতের অবৈধভাবে’ দখল করা জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায় হামলায় পর্যটকদের প্রাণহানিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় সিন্ধু নদী এবং এর শাখানদীগুলোর (ঝিলম, চেনাব, রবি, বিয়াস ও শতদ্রু) পানিবণ্টন নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু চুক্তি হয়। এই চুক্তির সুবিধাভোগী ছিল পাকিস্তানের প্রায় কয়েক কোটি মানুষ। কিন্তু এবার সেই ঐতিহাসিক চুক্তি স্থগিত করা হলো। ফলে পাকিস্তানে পানি সরবরাহ..
৪ ঘণ্টা আগেরানি মেরি ও রাজা ফ্রেডেরিক এক্স-এর জ্যেষ্ঠ কন্যা প্রিন্সেস ইসাবেলা সম্প্রতি রাজপ্রাসাদের নাইটস হলে ছবি তোলেন। ছবিগুলোতে তাঁকে একটি উজ্জ্বল কমলা বলগাউনে দেখা গেছে। তাঁর মাথায় ছিল হীরার টায়রা এবং বুকে ‘অর্ডার অব দ্য এলিফ্যান্ট’ খেতাবসহ তাঁর বাবার একটি ক্ষুদ্র পোর্ট্রেট ধারণ করেছিলেন।
৫ ঘণ্টা আগেসার্ক ভিসায় আসা ভারতে থাকা পাকিস্তানিদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া আগে ইস্যু করা ভিসাও এখন থেকে বাতিল গণ্য হবে বলে জানানো হয়েছে। আজ বুধবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা কমিটির...
৫ ঘণ্টা আগেভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরে ঘুরতে গিয়ে ছোট ছোট ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন মঞ্জু নাথ। কর্ণাটকের এই ব্যক্তি স্ত্রী পল্লবী ও সন্তানকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন। তবে ফিরেছেন লাশ হয়ে। গত মঙ্গলবার সন্ত্রাসীরা তাঁকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে। তবে তাঁর স্ত্রীকে হত্যা করেনি সন্ত্রাসীরা; বরং তাঁকে
৬ ঘণ্টা আগে