Ajker Patrika

হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি জানা যাবে মাত্র ৮০০ টাকার রক্ত পরীক্ষায়

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১২ এপ্রিল ২০২৫, ১৮: ৪২
প্রতীকী ছবি। ছবি: এআই দিয়ে তৈরি
প্রতীকী ছবি। ছবি: এআই দিয়ে তৈরি

বিশ্বজুড়ে প্রাপ্তবয়স্কদের মৃত্যুর বড় কারণ হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক। তবে সম্প্রতি ব্রিটিশ একদল গবেষক এমন এক ধরনের রক্ত পরীক্ষার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যাতে আগেভাগেই জানা যাবে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকসহ হৃৎপিণ্ডসংক্রান্ত বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি। আর এতে খরচ পড়বে মাত্র ৫ পাউন্ড স্টারলিং বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮০০ টাকা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

ব্রিটিশ হার্ট ফাউন্ডেশনের (বিএইচএফ) অর্থায়নে ‘জার্নাল অব দ্য আমেরিকান কলেজ অব কার্ডিওলজিতে’ প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী, রোগীদের শরীরে ট্রোপোনিনের মাত্রা পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা অনেক বেশি নির্ভুলভাবে হৃদ্‌রোগসংক্রান্ত ঝুঁকি আগে থেকে বলতে পারবেন।

এই প্রোটিন হৃৎপেশি কোষে পাওয়া যায় এবং হৃদ্‌যন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হলে রক্তে মেশে। হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়ার পরে তা শনাক্ত করতে হাসপাতালগুলোতে ট্রোপোনিন রক্ত পরীক্ষা এরই মধ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে। গবেষণা বলছে, এই সাশ্রয়ী পরীক্ষা হৃদ্‌যন্ত্রের ‘নীরব’ ক্ষতি শনাক্ত করতেও কাজে লাগতে পারে; পাশাপাশি কোনো রোগীর ভবিষ্যতে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কতটা, তা আগে থেকে জানাতে সাহায্য করবে।

জেনারেল প্র্যাকটিশনারের (জিপি) চেম্বারে বা স্থানীয় নিবন্ধিত চিকিৎসকের চেম্বারে কোলেস্টেরলের নিয়মিত পরীক্ষার সঙ্গেই এই পরীক্ষা করা যেতে পারে। এর মাধ্যমে স্ট্যাটিনের মতো প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হবে, যা হাজার হাজার হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের ঘটনা এড়াতে সাহায্য করবে।

লন্ডন স্কুল অব হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিনের কার্ডিওভাসকুলার মেডিসিনের অধ্যাপক এবং এই গবেষণার প্রধান লেখক অনুপ শাহ বলেন, ‘ট্রোপোনিন, স্বাভাবিক মাত্রায়ও নীরব হৃদ্‌পেশির ক্ষতির একটি শক্তিশালী ইঙ্গিত দেয়। কাজেই এই পরীক্ষা তথ্যের একটি অতিরিক্ত স্তর যোগ করে, যা মানুষের ঝুঁকির পূর্বাভাস দেওয়ার সময় আমাদের নির্ভুলতা বাড়াতে কাজে লাগবে। আমরা যত বেশি সম্ভব উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে চাই, যাতে প্রতিরোধমূলক চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ কেউ না হারায়।’

অনুপ শাহ আরও বলেন, হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি মূল্যায়নে বর্তমান নির্দেশিকাগুলোতে ট্রোপোনিন পরীক্ষা যুক্ত করলে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের চিহ্নিত করা সহজ হবে।

গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁদের রক্তে ট্রোপোনিনের মাত্রা বেশি, তাঁদের আগামী ১০ বছরে হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়া বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। মডেল অনুযায়ী, বর্তমানে প্রচলিত হৃদ্‌রোগের স্বাস্থ্যবিষয়ক মূল্যায়নে যাঁরা মধ্যবর্তী ঝুঁকিতে রয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে এই পরীক্ষা করা হলে প্রতি ৫০০ জনে একজনের হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হওয়া বা স্ট্রোকের ঘটনা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।

গবেষকেরা ইউরোপ ও আমেরিকার ৬২ হাজারের বেশি মানুষের স্বাস্থ্যবিষয়ক তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন। প্রত্যেক ব্যক্তির ট্রোপোনিনের মাত্রা এবং বয়স, রক্তচাপ, ডায়াবেটিসের ইতিহাস, ধূমপানের অভ্যাস ও কোলেস্টেরলের মাত্রার মতো প্রচলিত ঝুঁকির কারণগুলোও পরীক্ষা করা হয়। অংশগ্রহণকারীদের এরপর এক দশক ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়, যাতে দেখা যায় তাঁদের হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত বা স্ট্রোক হয়েছে কি না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত