Ajker Patrika

ওজন কমাতে মসলা, মানতে হবে নিয়ম

আলমগীর আলম
আপডেট : ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১৬: ০৪
ওজন কমাতে মসলা, মানতে হবে নিয়ম

দ্রুত ওজন কমাতে মসলা খাচ্ছেন?
সেটা করার আগে জেনে নিন, মসলা খাবারের স্বাদ বাড়ায়, সেটি ঠিক। কিছু মসলা খেয়ে ওজন কমানো যায় বলে মানুষ প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে সেগুলো খেয়ে থাকে। কিন্তু এটা জানেন কি, এসব মসলা দ্রুত ওজন কমালেও বিপাকক্রিয়া নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি করে। এর জন্য ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যের বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। মসলা কখনোই খালি পেটে খাওয়া উচিত নয়। এগুলো আপনার অন্ত্রের আস্তরণেরও ক্ষতি করতে পারে। সে জন্য ওজন কমানোর উদ্দেশ্যে মসলা খাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম মানতে হবে।

খালি পেটে মসলা খেলে পেটে অম্ল তৈরি হয়। ফলে গ্যাস ও বুকজ্বালার মতো সমস্যা হতে পারে। শুধু এটিই নয়, আপনার এই অভ্যাস সরাসরি কিডনিতেও প্রভাব ফেলতে পারে। 

যেসব মসলা সকালে খালি পেটে খাওয়া যাবে না দারুচিনি মূলত প্রতিটি রান্নাঘরেই পাওয়া যায়। গুণাবলির কারণে মানুষ এটি কেবল খাবারেই নয়, চায়ের সঙ্গে মিশিয়েও পান করে। দারুচিনির অতিরিক্ত ব্যবহার আপনার লিভারকে মারাত্মক ক্ষতির মুখে ফেলতে পারে। এটি অতিরিক্ত খেলে অ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে, যা মুখে ফোসকা, সাদা দাগ এবং মুখের ভেতরে চুলকানির মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে।

সকালে কোনো খাবারের সঙ্গে গোলমরিচ খেলে পেটের মাইক্রোবায়মের ক্ষতি হবে, যদিও গোলমরিচ হজমে সহায়ক একটি মসলা।

অনেকে জোয়ান, মৌরি ও জিরা দিয়ে পানির কাড়া বানিয়ে সকালে খাওয়ার অভ্যাস করেন। ওজন কমানোর জন্য এই মসলা ব্যবহার করেন তাঁরা। কিন্তু এতে ভালো হওয়ার চেয়ে খারাপ কিছু ঘটতে পারে যদি সকালে খান। খালি পেটে এগুলো, বিশেষ করে গরমের মৌসুমে খেলে বুক জ্বালাপোড়ার শিকার হতে পারেন। অতিরিক্ত খেলে বদহজম ও ডায়রিয়াও হতে পারে। ওজন ঠিকই কমবে। কিন্তু সঙ্গে পেটের সমস্যাও হতে পারে।

ছবি: সংগৃহীতমসলা খাওয়ার ভালো দিক গ্যাস্ট্রিক, বুকজ্বালা, ঢেকুর ইত্যাদি সমস্যার জন্য আমরা সব সময় খাবারের মসলাকে দায়ী করি। আমাদের ধারণা, মসলা খাওয়া ভালো নয়। খাবারে যত কম মসলা যোগ করা যায়, ততই ভালো। কিন্তু বিভিন্ন মসলার নানা ভেষজ গুণ রয়েছে। পেঁয়াজ, মরিচ, হলুদ, রসুন ইত্যাদি আমাদের খাবারের স্বাদ যেমন বাড়ায়, তেমনি আরও কিছু উপকার করে থাকে।

ঠান্ডাজনিত রোগ সারাতে পেঁয়াজ ব্যবহৃত হয়। বদহজম ও রক্তচাপ কমানো, রক্ত জমাট বাঁধা দূর করা ইত্যাদি ক্ষেত্রে পেঁয়াজের উপকারিতা আছে। রসুনে গন্ধক বা সালফার যৌগ আছে। এটি অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে, সর্দি-কাশি সারায়। রসুনের এলিসি নামের উপাদান ওজন কমাতে সাহায্য করে। আদা রক্ত সংবহনে সাহায্য করে। কাশি, বমিভাব কমাতে এবং বদহজমে আদা ব্যবহৃত হয়। আদার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে কাশি কমে। মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতেও আদা উপকারী। হলুদে পর্যাপ্ত আয়রন আছে বলে এটি রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। এটি পাকস্থলীর প্রদাহ কমায়, কফ-ঠান্ডায় উপকারী। হলুদ ত্বকের রং উজ্জ্বল করে। প্রস্রাবের জ্বালা কমাতে হলুদের সঙ্গে মধুর মিশ্রণ উপকারী।

এগুলো সব সময় খাওয়া যাবে—দুপুরে খাওয়া যাবে, রাতেও খেতে বাধা নেই। কিন্তু কোনোভাবেই বেশি মাত্রায় খাওয়া যাবে না।

লেখক: আলমগীর আলম, খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ, প্রাকৃতিক নিরাময় কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত