Ajker Patrika

টি-ব্যাগে বিশ্বকাপের গল্প

টি-ব্যাগে বিশ্বকাপের গল্প

আজ কেঁপে উঠবে ফুটবলবিশ্ব! আনন্দ ও বিষাদে ভরে উঠবে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের মন। কারণ, আজকেই নির্ধারিত হবে পরের ধাপে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিল যেতে পারবে কি না। উন্মাদনার এই ছোঁয়া লেগেছে পোশাক-আশাকে। চাবির রিং, কানের দুল ইত্যাদির মতো অনুষঙ্গেও প্রিয় ফুটবল টিমের ছাপ থাকছে কোনো না কোনোভাবে। সেগুলোর কথা আমরা জানি।

আর জানি, চায়ের কাপে উঠছে ধোঁয়া। আর্জেন্টিনা কি পারবে? নাকি ব্রাজিল থেকেই যাবে এই রাউন্ডে? ধোঁয়া ওঠা গরম চা ফুরিয়ে গেলেই তো আর গল্প শেষ হয় না। এমনও তো হতে পারে, শেষ চুমুকের পর চায়ের কাপে হেলায় পড়ে থাকা টি-ব্যাগেই জমে উঠতে পারে ফুটবলের নতুন কোনো গল্প!

পরিবেশ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ও পরিবেশদূষণ রোধে এখন অনেক তরুণ নানাভাবে কাজ করছেন। মো. সাদিত উজ জামান তাঁদের মধ্যেই একজন। ব্যবহৃত টি-ব্যাগটি ময়লার ঝুড়িতে ফেলে না দিয়ে বরং সেটা শুকিয়ে পরিষ্কার করে তার ওপরই আঁকেন সমকালীন ঘটনার ছবি। পাশাপাশি জাঙ্ক জার্নিস নামেও তাঁর একটি প্রকল্প রয়েছে। তাঁর আওতায় বেভারেজ ক্যান, ওষুধের স্ট্রিপ, দিয়াশলাই বাক্স, পুরোনো ইনহেলার, বোতল, চিপসের প্যাকেটের মতো জাঙ্ক ম্যাটেরিয়ালও ছবি আঁকার কাজে ব্যবহার করছেন সাদিত।

এমবিএ শেষ করে একটি বিজ্ঞাপনী সংস্থায় চার বছর কাজ করেন সাদিত। এর পর নিজের উদ্যোগে একটি ফ্যাশন হাউস চালু করেন। পাশাপাশি চালাতে থাকেন জাঙ্ক ম্যাটেরিয়ালের ওপর ছবি আঁকার কাজও। সাদিত বলেন, ‘আমরা চারপাশের পরিবেশ সবচেয়ে বেশি নষ্ট করি টি-ব্যাগ, চিপসের প্যাকেট, ক্যান ইত্যাদি দিয়ে। ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে নতুন কী করা যায়, সব সময় তা-ই ভাবতে থাকি। চেষ্টা করি, সমসাময়িক ও ইতিবাচক চিন্তাগুলোকে একীভূত করে টি-ব্যাগে ছবি আঁকার এবং জাঙ্ক জার্নিসের ক্র্যাফটগুলো তৈরি করার। যা মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দেবে যে আমরা যেন পরিবেশের ক্ষতি না করি আবর্জনা ফেলে।’

বিশ্বকাপকে কেন্দ্র করে মো. সাদিত উজ জামান টি-ব্যাগ এবং ওষুধের স্ট্রিপে এঁকেছেন জনপ্রিয় দলের খেলার বিশেষ মুহূর্তের ছবি, ফুটবল তারকা ও পতাকার ছবি। এ ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেয়েছে মেসি ও নেইমারের প্রতিকৃতি।

মো. সাদিত বলেন, ‘বিশ্বকাপ এলেই আনন্দের ব্যাপার। আমাদের প্রিয় দলের যখন জয় হয় তখন স্বাভাবিকভাবেই আনন্দ লাগে। আবার যদি হেরে যায় তখন মন খারাপও হয়। সব মিলেই একটা উন্মাদনা।’

আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের সমর্থকদের যে উন্মাদনা তাকে সচেতনভাবে আরও খানিক বাড়িয়ে দিতে চেয়েছেন সাদিত। এর মূলে রয়েছে সচেতনতার প্রয়াস। জাঙ্ক উপকরণগুলো পরিবেশের ক্ষতি না করুক, সেগুলো থেকে তৈরি হোক সৃষ্টিশীল জিনিসপত্র—সাদিতের চাওয়া সেটাই। তিনি শুধু যে ফেলে দেওয়া টি-ব্যাগের ওপরে ছবি এঁকেছেন, তা নয়। ওষুধের স্ট্রিপেও ছবি এঁকেছেন।

পরিবেশের সুরক্ষায় জাঙ্ক উপকরণের সঠিক ব্যবস্থাপনার কোনো বিকল্প নেই। মো. সাদিত উজ জামান জানিয়েছেন, রিসাইকেল আর্টগুলো দেখে মানুষ যেন বুঝতে পারে, চাইলে সবকিছুই কাজে লাগানো যায়। সবকিছু ফেলে দেওয়ার দরকারও নেই। যদি ফেলতেই হয়, তাহলে সঠিক জায়গায় ফেলতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত