ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। দুই পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশের এই বিপজ্জনক সংঘাতের মাত্রা আরও বাড়বে কি না কিংবা তার তীব্রতা কোন পর্যন্ত উঠতে পারে, তা নিয়েই এখন চলছে গুঞ্জন।
ভারতের দাবি, মঙ্গলবার গভীর রাতে তারা পাকিস্তানের ৯টি জায়গায় সন্ত্রাসী স্থাপনা লক্ষ্য করে অভিযান চালিয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের দাবি, ভারতীয় বাহিনী মসজিদসহ বেসামরিক স্থাপনা এবং সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচার হামলা চালিয়েছে। ‘আত্মরক্ষার’ অংশ হিসেবে ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে তারা। তবে ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করা হয়নি।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বলেছে, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তাঁর দেশের সামরিক বাহিনীকে ‘আত্মরক্ষার জন্য যথোপযুক্ত’ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল বুধবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠকে তিনি সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি ‘নিরপরাধ পাকিস্তানিদের হত্যার প্রতিশোধ’ নিতে বলেছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, পাকিস্তান দাবি করেছে, ভারতীয় বাহিনীর হামলায় দেশটির অন্তত ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছে। অন্যদিকে ভারত বলেছে, পাকিস্তানের গোলার আঘাতে সে দেশে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে।
পেহেলগাম থেকে ‘অপারেশন সিঁদুর’
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন। এ নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক তেতে ওঠে। ভারত এ হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে। কাশ্মীর সীমান্তে নিয়মিত গোলাগুলি ও রাজনৈতিক নেতাদের কথার লড়াই চলতে থাকে। ভারত ‘শাস্তি হিসেবে’ পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, কূটনীতিক বহিষ্কার, ভিসা সুবিধা বাতি, আমদানি বন্ধসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। পাকিস্তানও ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ, ভিসা সুবিধা বাতিল, কূটনীতিক বহিষ্কারসহ পাল্টা বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। তবে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মহলকে ঘটনা তদন্তের আহ্বান জানায়। এমন উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটেই পাকিস্তানের ভেতরে হামলা চালাল ভারতীয় বাহিনী।
‘পেহেলগামের জবাব’ দেওয়ার কথা বলে ভারত বস্তুত ২২ এপ্রিলের পর থেকে পাকিস্তানে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দফায় দফায় সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান, প্রতিরক্ষাসচিবসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। গত মঙ্গলবার ভারতজুড়ে পরিচালিত হয় যুদ্ধ পরিস্থিতির মহড়া। এরপর মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতেই পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই হামলার নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। নামটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া বলে জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানে হামলার পর ভারতের সেনাবাহিনী বলেছে, ‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৯টি সন্ত্রাসী আস্তানা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’ তারা দাবি করেছে, হামলা ছিল নিয়ন্ত্রিত এবং এমনভাবে হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে উত্তেজনা না বাড়ে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ অভিযোগ করেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজের জনপ্রিয়তা বাড়াতে এই হামলা চালিয়েছেন। তিনি এএফপিকে বলেছেন, ‘জবাব দেওয়ার প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আমরা খুব বেশি সময় নেব না।’
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছেন, তাঁরা পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরসহ সীমান্ত এলাকায় ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছেন। ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর জ্যেষ্ঠ একটি সূত্র এএফপিকে বলেছেন, ভারতীয় ভূখণ্ডে তাঁদের তিনটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। বিমানগুলো নিজেদের ত্রুটিতে, নাকি পাকিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষার হামলায় ধ্বংস হয়েছে, তা ভারত বা তৃতীয় কোনো পক্ষ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পাকিস্তানে হামলার পরপরই গতকাল ভারত আবারও যুদ্ধ পরিস্থিতির মহড়া চালিয়েছে। পাশাপাশি উচ্চ ঝুঁকির এলাকাগুলোয় বেসামরিক নাগরিকদের বিমান হামলার সময় করণীয় শেখাতেও মহড়া চালানোর প্রস্তুতি নিয়েছে দেশটি।
পাকিস্তানের যেসব স্থানে হামলা
পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুরের কাছে আহমেদপুর শারকিয়া, মুরিদকে শহর, শিয়ালকোটের কাছের একটি গ্রাম ও শাকরগড় এবং পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ ও কোটলিতে ভারতীয় বাহিনী হামলা চালিয়েছে।
পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছেন, সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হয়েছে আহমেদপুর শারকিয়ায়। সেখানে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে একটি মসজিদের অংশ গুঁড়িয়ে গেছে এবং তিন বছর বয়সী এক শিশুসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে। মুজাফফরাবাদ ও কোটলিতে হামলায় দুটি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে, নিহত হয়েছে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরী ও ১৮ বছর বয়সী এক তরুণ।
বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা
এএফপি জানায়, পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের প্রধান শহর মুজাফফরাবাদে গতকাল সেনাসদস্যদের একটি মসজিদ ঘিরে থাকতে দেখা গেছে। তাঁদের দাবি, মসজিদটি ভারতীয় হামলায় ধ্বংস হয়েছে। আশপাশের কয়েকটি বেসামরিক বাড়িঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হামলায়।
স্থানীয় বাসিন্দা মুহাম্মদ সালমান বলেন, ‘রাতে বিকট শব্দে আমরা চমকে জেগে উঠি। সবাই প্রাণ বাঁচাতে দিগ্বিদিক ছুটছিল।’ ২৪ বছর বয়সী তরুণ তারিক মির হামলার সময় আহত হয়েছেন। তাঁর পায়ে বোমা বা ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরা বিদ্ধ হয়েছে। তারিক বলেন, ‘আমরা নিরাপদ জায়গার খোঁজে ছুটছিলাম...আমাদের বাড়িঘর সব গেছে, আমরা এখন গৃহহারা।’
ভারতের পুঞ্চ শহরের বাসিন্দা ফারুক প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) বলেন, ‘গোলাগুলির বিকট শব্দে আমরা জেগে উঠি। বৃষ্টির মতো গোলা এসে পড়ছিল।’ ফারুক মাথায় আঘাত পেয়েছেন। হাসপাতালে মাথায় ব্যান্ডেজ পরা অবস্থায় তিনি পিটিআইয়ের সঙ্গে কথা বলেন।
পুঞ্চের স্থানীয় কর্মকর্তা আজহার মজিদ এএফপিকে বলেন, ওই এলাকায় অন্তত ১২ জন নিহত ও ২৯ জন আহত হয়েছে।
‘জবাব দেবে’ পাকিস্তান
মার্কিন নিউজ টিভি চ্যানেল সিএনএন জানায়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বলেছে, ভারতের হামলার পর গতকাল জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এ সময় তিনি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে ‘আত্মরক্ষার’ এবং ‘যথোপযুক্ত পদক্ষেপ’ নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ‘নিরপরাধ পাকিস্তানিদের হত্যার প্রতিশোধ’ নেওয়ারও নির্দেশ দেন।
এনএসসি বৈঠকের পর সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আত্মরক্ষার জন্য নিজেদের পছন্দমতো সময়, জায়গা ও কৌশলে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে বলে বৈঠকে মত দেওয়া হয়। পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে উপযুক্ত জবাব দিতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
জইশ-প্রধানের পরিবারের সদস্য নিহত
জাতিসংঘঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ (জেইএম) এক বিবৃতিতে বলেছে, বাহাওয়ালপুরে সুবহান আল্লাহ মসজিদে ভারতীয় হামলায় সংগঠনটির প্রধান মাওলানা মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ সদস্য ও তিন ঘনিষ্ঠ সহযোগী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে মাসুদ আজহারের বড় বোন ও তাঁর স্বামী, মাসুদের ভাতিজা ও তাঁর স্ত্রী, ভাগনি এবং পরিবারের পাঁচ শিশু রয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হামলায় মাসুদ আজহারের তিন সহযোগী ছাড়াও তাঁদের একজনের মা-ও নিহত হয়েছেন।
ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের ইতিহাস
দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর বৈরী প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব আজকের নয়। ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। স্বাধীনতার পর দুই দেশ এ পর্যন্ত কয়েকবার যুদ্ধ বা বড় সংঘাতে জড়িয়েছে।
মার্কিন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কাউন্সিল অন ফরেইন রিলেশনসের তথ্যমতে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত কাশ্মীর ঘিরেই। ১৯৪৭ সালে দুই দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই পাকিস্তানের দিক থেকে উপজাতীয় হামলার প্রেক্ষাপটে কাশ্মীরের মহারাজা ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তের জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৪৭ সালেই যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধের বিরতি ঘটে ১৯৪৯ সালের করাচি চুক্তির মাধ্যমে।
১৯৬৫ সালে আবার সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়ায় দুই প্রতিবেশী। এই যুদ্ধও হয়েছে কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে। ১৭ দিনের সেই যুদ্ধের বিরতি ঘটে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায়। এর ছয় বছর পর ১৯৭১ সালে শুরু হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ। বাংলাদেশকে সহায়তার একপর্যায়ে ভারত সরাসরি এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ৩ ডিসেম্বর ভারতের কয়েকটি স্থানে পাকিস্তানের বিমান হামলার পর ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত হয়।
১৯৭২ সালে সিমলা চুক্তির মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি)। এরপর দুই বৈরী প্রতিবেশীর সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি ঘটে। ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানি সেনারা এলওসি অতিক্রম করে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ঢুকে পড়লে শুরু হয় কারগিল যুদ্ধ। এই যুদ্ধেরও আপাতসমাপ্তি ঘটে যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে এলওসির কাছে উরিতে ভারতের সেনাঘাঁটিতে সন্ত্রাসীর হামলার জেরে দুই প্রতিবেশীর সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটে। ওই হামলার জবাবে ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ঢুকে কথিত সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ (সুনির্দিষ্ট হামলা) চালায়। তবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দাবি করেছিল, এ ধরনের কোনো অভিযানই ভারতীয় বাহিনী চালায়নি। তার পর থেকে দুই বাহিনীর মধ্যে এলওসিতে মাঝেমধ্যেই সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে।
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। দুই পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশের এই বিপজ্জনক সংঘাতের মাত্রা আরও বাড়বে কি না কিংবা তার তীব্রতা কোন পর্যন্ত উঠতে পারে, তা নিয়েই এখন চলছে গুঞ্জন।
ভারতের দাবি, মঙ্গলবার গভীর রাতে তারা পাকিস্তানের ৯টি জায়গায় সন্ত্রাসী স্থাপনা লক্ষ্য করে অভিযান চালিয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের দাবি, ভারতীয় বাহিনী মসজিদসহ বেসামরিক স্থাপনা এবং সাধারণ মানুষের ওপর নির্বিচার হামলা চালিয়েছে। ‘আত্মরক্ষার’ অংশ হিসেবে ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে তারা। তবে ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করা হয়নি।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বলেছে, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তাঁর দেশের সামরিক বাহিনীকে ‘আত্মরক্ষার জন্য যথোপযুক্ত’ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল বুধবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠকে তিনি সশস্ত্র বাহিনীর প্রতি ‘নিরপরাধ পাকিস্তানিদের হত্যার প্রতিশোধ’ নিতে বলেছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, পাকিস্তান দাবি করেছে, ভারতীয় বাহিনীর হামলায় দেশটির অন্তত ২৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছে। অন্যদিকে ভারত বলেছে, পাকিস্তানের গোলার আঘাতে সে দেশে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে।
পেহেলগাম থেকে ‘অপারেশন সিঁদুর’
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গত ২২ এপ্রিল পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হন। এ নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক তেতে ওঠে। ভারত এ হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে। কাশ্মীর সীমান্তে নিয়মিত গোলাগুলি ও রাজনৈতিক নেতাদের কথার লড়াই চলতে থাকে। ভারত ‘শাস্তি হিসেবে’ পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত, কূটনীতিক বহিষ্কার, ভিসা সুবিধা বাতি, আমদানি বন্ধসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। পাকিস্তানও ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ, ভিসা সুবিধা বাতিল, কূটনীতিক বহিষ্কারসহ পাল্টা বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়। তবে সন্ত্রাসী হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মহলকে ঘটনা তদন্তের আহ্বান জানায়। এমন উত্তপ্ত প্রেক্ষাপটেই পাকিস্তানের ভেতরে হামলা চালাল ভারতীয় বাহিনী।
‘পেহেলগামের জবাব’ দেওয়ার কথা বলে ভারত বস্তুত ২২ এপ্রিলের পর থেকে পাকিস্তানে অভিযান চালানোর পরিকল্পনা শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দফায় দফায় সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান, প্রতিরক্ষাসচিবসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। গত মঙ্গলবার ভারতজুড়ে পরিচালিত হয় যুদ্ধ পরিস্থিতির মহড়া। এরপর মঙ্গলবার দিবাগত গভীর রাতেই পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই হামলার নাম দিয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’। নামটি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দেওয়া বলে জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানে হামলার পর ভারতের সেনাবাহিনী বলেছে, ‘ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ৯টি সন্ত্রাসী আস্তানা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।’ তারা দাবি করেছে, হামলা ছিল নিয়ন্ত্রিত এবং এমনভাবে হামলার পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে উত্তেজনা না বাড়ে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ অভিযোগ করেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজের জনপ্রিয়তা বাড়াতে এই হামলা চালিয়েছেন। তিনি এএফপিকে বলেছেন, ‘জবাব দেওয়ার প্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আমরা খুব বেশি সময় নেব না।’
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছেন, তাঁরা পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরসহ সীমান্ত এলাকায় ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছেন। ভারতের নিরাপত্তা বাহিনীর জ্যেষ্ঠ একটি সূত্র এএফপিকে বলেছেন, ভারতীয় ভূখণ্ডে তাঁদের তিনটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। বিমানগুলো নিজেদের ত্রুটিতে, নাকি পাকিস্তানের বিমান প্রতিরক্ষার হামলায় ধ্বংস হয়েছে, তা ভারত বা তৃতীয় কোনো পক্ষ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
পাকিস্তানে হামলার পরপরই গতকাল ভারত আবারও যুদ্ধ পরিস্থিতির মহড়া চালিয়েছে। পাশাপাশি উচ্চ ঝুঁকির এলাকাগুলোয় বেসামরিক নাগরিকদের বিমান হামলার সময় করণীয় শেখাতেও মহড়া চালানোর প্রস্তুতি নিয়েছে দেশটি।
পাকিস্তানের যেসব স্থানে হামলা
পাকিস্তানের সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুরের কাছে আহমেদপুর শারকিয়া, মুরিদকে শহর, শিয়ালকোটের কাছের একটি গ্রাম ও শাকরগড় এবং পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ ও কোটলিতে ভারতীয় বাহিনী হামলা চালিয়েছে।
পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেছেন, সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হয়েছে আহমেদপুর শারকিয়ায়। সেখানে ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে একটি মসজিদের অংশ গুঁড়িয়ে গেছে এবং তিন বছর বয়সী এক শিশুসহ অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছে। মুজাফফরাবাদ ও কোটলিতে হামলায় দুটি মসজিদ ধ্বংস হয়েছে, নিহত হয়েছে ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরী ও ১৮ বছর বয়সী এক তরুণ।
বিকট শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা
এএফপি জানায়, পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের প্রধান শহর মুজাফফরাবাদে গতকাল সেনাসদস্যদের একটি মসজিদ ঘিরে থাকতে দেখা গেছে। তাঁদের দাবি, মসজিদটি ভারতীয় হামলায় ধ্বংস হয়েছে। আশপাশের কয়েকটি বেসামরিক বাড়িঘরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হামলায়।
স্থানীয় বাসিন্দা মুহাম্মদ সালমান বলেন, ‘রাতে বিকট শব্দে আমরা চমকে জেগে উঠি। সবাই প্রাণ বাঁচাতে দিগ্বিদিক ছুটছিল।’ ২৪ বছর বয়সী তরুণ তারিক মির হামলার সময় আহত হয়েছেন। তাঁর পায়ে বোমা বা ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরা বিদ্ধ হয়েছে। তারিক বলেন, ‘আমরা নিরাপদ জায়গার খোঁজে ছুটছিলাম...আমাদের বাড়িঘর সব গেছে, আমরা এখন গৃহহারা।’
ভারতের পুঞ্চ শহরের বাসিন্দা ফারুক প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে (পিটিআই) বলেন, ‘গোলাগুলির বিকট শব্দে আমরা জেগে উঠি। বৃষ্টির মতো গোলা এসে পড়ছিল।’ ফারুক মাথায় আঘাত পেয়েছেন। হাসপাতালে মাথায় ব্যান্ডেজ পরা অবস্থায় তিনি পিটিআইয়ের সঙ্গে কথা বলেন।
পুঞ্চের স্থানীয় কর্মকর্তা আজহার মজিদ এএফপিকে বলেন, ওই এলাকায় অন্তত ১২ জন নিহত ও ২৯ জন আহত হয়েছে।
‘জবাব দেবে’ পাকিস্তান
মার্কিন নিউজ টিভি চ্যানেল সিএনএন জানায়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বলেছে, ভারতের হামলার পর গতকাল জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। এ সময় তিনি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে ‘আত্মরক্ষার’ এবং ‘যথোপযুক্ত পদক্ষেপ’ নেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে ‘নিরপরাধ পাকিস্তানিদের হত্যার প্রতিশোধ’ নেওয়ারও নির্দেশ দেন।
এনএসসি বৈঠকের পর সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আত্মরক্ষার জন্য নিজেদের পছন্দমতো সময়, জায়গা ও কৌশলে উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অধিকার পাকিস্তানের রয়েছে বলে বৈঠকে মত দেওয়া হয়। পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে উপযুক্ত জবাব দিতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
জইশ-প্রধানের পরিবারের সদস্য নিহত
জাতিসংঘঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ (জেইএম) এক বিবৃতিতে বলেছে, বাহাওয়ালপুরে সুবহান আল্লাহ মসজিদে ভারতীয় হামলায় সংগঠনটির প্রধান মাওলানা মাসুদ আজহারের পরিবারের ১০ সদস্য ও তিন ঘনিষ্ঠ সহযোগী নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে মাসুদ আজহারের বড় বোন ও তাঁর স্বামী, মাসুদের ভাতিজা ও তাঁর স্ত্রী, ভাগনি এবং পরিবারের পাঁচ শিশু রয়েছে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হামলায় মাসুদ আজহারের তিন সহযোগী ছাড়াও তাঁদের একজনের মা-ও নিহত হয়েছেন।
ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের ইতিহাস
দক্ষিণ এশিয়ার দুই পারমাণবিক শক্তিধর বৈরী প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের দ্বন্দ্ব আজকের নয়। ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। স্বাধীনতার পর দুই দেশ এ পর্যন্ত কয়েকবার যুদ্ধ বা বড় সংঘাতে জড়িয়েছে।
মার্কিন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কাউন্সিল অন ফরেইন রিলেশনসের তথ্যমতে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত কাশ্মীর ঘিরেই। ১৯৪৭ সালে দুই দেশ স্বাধীন হওয়ার পরপরই পাকিস্তানের দিক থেকে উপজাতীয় হামলার প্রেক্ষাপটে কাশ্মীরের মহারাজা ভারতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর এই সিদ্ধান্তের জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৪৭ সালেই যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধের বিরতি ঘটে ১৯৪৯ সালের করাচি চুক্তির মাধ্যমে।
১৯৬৫ সালে আবার সর্বাত্মক যুদ্ধে জড়ায় দুই প্রতিবেশী। এই যুদ্ধও হয়েছে কাশ্মীরকে কেন্দ্র করে। ১৭ দিনের সেই যুদ্ধের বিরতি ঘটে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায়। এর ছয় বছর পর ১৯৭১ সালে শুরু হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ। বাংলাদেশকে সহায়তার একপর্যায়ে ভারত সরাসরি এই যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ৩ ডিসেম্বর ভারতের কয়েকটি স্থানে পাকিস্তানের বিমান হামলার পর ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত হয়।
১৯৭২ সালে সিমলা চুক্তির মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয় কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি)। এরপর দুই বৈরী প্রতিবেশীর সম্পর্কের কিছুটা উন্নতি ঘটে। ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানি সেনারা এলওসি অতিক্রম করে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ঢুকে পড়লে শুরু হয় কারগিল যুদ্ধ। এই যুদ্ধেরও আপাতসমাপ্তি ঘটে যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে এলওসির কাছে উরিতে ভারতের সেনাঘাঁটিতে সন্ত্রাসীর হামলার জেরে দুই প্রতিবেশীর সম্পর্কের ব্যাপক অবনতি ঘটে। ওই হামলার জবাবে ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে ঢুকে কথিত সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ (সুনির্দিষ্ট হামলা) চালায়। তবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দাবি করেছিল, এ ধরনের কোনো অভিযানই ভারতীয় বাহিনী চালায়নি। তার পর থেকে দুই বাহিনীর মধ্যে এলওসিতে মাঝেমধ্যেই সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগেভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলা নিয়ে দুই চিরবৈরী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই চড়ছিল। তা তুঙ্গে উঠল এবার পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামের ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলা দিয়ে। পাশাপাশি সীমান্তেও দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে...
০৮ মে ২০২৫গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
১৭ দিন আগে‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫