Ajker Patrika

এবার সবাই লাভের আশায়

রিমন রহমান, রাজশাহী
আপডেট : ১৪ মে ২০২২, ১২: ৩৫
Thumbnail image

অপরিপক্ব আম যেন বাজারে না আসে, সে জন্য এবারও রাজশাহীতে গাছ থেকে আম নামানোর সময় ঠিক করে দিয়েছে প্রশাসন। সে অনুযায়ী গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে অনেক চাষি গুটি জাতের আম নামাতে শুরু করেন। মোকামেও উঠেছে ক্যারেট ক্যারেট আম।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এ বছর ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমির বাগানে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ২ লাখ ১৪ হাজার ৬৭৬ মেট্রিক টন। এসব আম বেচে চাষিরা ৯০১ কোটি ৬৪ লাখ ২ হাজার ৮০ টাকা পকেটে পুরবেন বলে আশা কৃষি বিভাগের। আর চাষিরা বলছেন, এবার গাছে আম কম। তাই দাম বেশি থাকবে বাজারে।

রাজশাহী জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শুক্রবার থেকেই চাষিরা সব ধরনের গুটি আম নামাতে পারছেন। এ ছাড়া উন্নত জাতের আমগুলোর মধ্যে ২০ মে থেকে গোপালভোগ, ২৫ মে থেকে রানীপছন্দ ও লক্ষ্মণভোগ বা লখনা, ২৮ মে থেকে হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাত, ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে আম্রপালি ও ফজলি, ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা ও বারি-৪,১৫ জুলাই থেকে গৌড়মতি এবং ২০ আগস্ট থেকে ইলামতি আম নামানো যাবে।

নিষেধাজ্ঞা না থাকায় শুক্রবার সকালে নিজের ইজারা নেওয়া বাগানের পাঁচটি গাছের আম নামান রাজশাহী নগরীর কাঁঠালবাড়িয়া এলাকার ব্যবসায়ী নাজমুল হাসান। তিনি জানান, ১০ দিন আগে থেকেই গাছগুলোর আম পেকে পড়ে যাচ্ছিল। কিন্তু প্রশাসনের ভয়ে বাজারে নিতে পারেননি। গুটি আম নামানোর দিন শুরু হওয়ায় প্রথম দিনই তিনি আম নামিয়েছেন। দু’একদিন ঘরে রাখলেই খাবার উপযোগী হবে। তখন বিক্রি করতে বাজারে নেবেন।

রাজশাহীতে সবচেয়ে বড় আমের হাট বসে জেলার পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে। এখানে আছে আমের শতাধিক আড়ত। শুক্রবার সকাল থেকে এই আড়তগুলোতেও আম আসতে শুরু করেছে। পুঠিয়া উপজেলা ছাড়াও আশপাশের কয়েকটি উপজেলা থেকে চাষিরা গুটি আম আনতে শুরু করেছেন। আড়তগুলোতে বৈশাখী, আলতাপেটি, কালু, বুনবুড়িসহ নাম না জানা আরও অনেক জাতের গুটি আম দেখা গেছে। আমগুলোতে লেগে ছিল টাটকা আঠা। 
পুঠিয়া থেকে আম আনা চাষি মো. আল-আমিন জানালেন, এবার গাছে আম কম। তাই দাম বেশি থাকবে বলে তাঁর ধারণা। মিঠুন বলেন, গতবার প্রচুর আম হয়েছিল। কিন্তু করোনা আর রোজার কারণে দাম পাওয়া যায়নি। এবার কম আম হলেও দাম ভালো থাকলে তাঁদের ক্ষতি হবে না।

আড়তদারেরা জানান, কাঁচা গুটি আম চাষিদের কাছ থেকে কেনা হচ্ছে ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা মণ দরে। গুটি জাতের সব আম মিষ্টি নয়। যেগুলো মিষ্টি সেগুলো বাজারে খাওয়ার জন্য বিক্রি হবে। আর টক আমগুলো আচার করার জন্য কিনবে বিভিন্ন কোম্পানি।

আড়তদার মিঠুন আলী বলেন, এবার আমের উৎপাদন কম। তাই দাম বেশি হবে। এখন গুটি আমের একটু দাম কম। উন্নতজাতের আমগুলো যখন বাজারে আসবে তখন ভালো দামও থাকবে। গত বছর চাষিদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। এবার সবাই লাভের আশা করছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোজদার হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘রাজশাহী মহানগর ও নয়টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি আমবাগান বাঘা ও চারঘাট উপজেলায়। কিন্তু চলতি মৌসুমে এ দুটি উপজেলাতেই আমের ফলন কিছুটা কম। তাও লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’ বাজারে ভালো দাম পেয়ে চাষিরা এবার লাভবান হবেন বলে আশাবাদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত