Ajker Patrika

বিদ্যুৎ-বিভ্রাটে দুর্বিষহ কালীগঞ্জবাসীর জীবন

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৮ এপ্রিল ২০২২, ১২: ০৮
বিদ্যুৎ-বিভ্রাটে দুর্বিষহ কালীগঞ্জবাসীর জীবন

গাজীপুরের কালীগঞ্জ শতভাগ বিদ্যুতায়িত উপজেলা হলেও মাত্রাতিরিক্ত বিদ্যুৎবিভ্রাটে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে উপজেলাবাসীর জনজীবন। প্রতিদিন নিয়ম করে বিদ্যুৎ চলে যাওয়াটাই এখানে নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোজার শুরু থেকেই ইফতার অথবা তারাবি নামাজের সময় হলেই চলে যায় বিদ্যুৎ। ঘণ্টারও বেশি সময় পার হওয়ার পরও বিদ্যুৎ না আসায় স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভ লক্ষ করা যাচ্ছে।

কালীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শতভাগ বিদ্যুতায়িত এ উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে ৩০ মেগাওয়াট। কিন্তু পল্লী বিদ্যুতের কালীগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয় গ্রাহকদের কাছে সরবরাহের জন্য পাচ্ছে মাত্র ১৫ মেগাওয়াট; যা প্রয়োজনের তুলনায় অর্ধেক। নরসিংদীর ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরবরাহকৃত বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল কালীগঞ্জ উপজেলা।

এ ছাড়া ওই একটি মাত্র গ্রিড থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ, গাজীপুরের জয়দেবপুর এবং কালিয়াকৈর কেন্দ্রে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। যে কারণে চাহিদার উচ্চমাত্রা থাকা সত্ত্বেও আঞ্চলিক কার্যালয় তার সরবরাহ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে বলেও জানা যায়।

এদিকে ঘনঘন বিদ্যুৎবিভ্রাটকে কেন্দ্র করে দিন দিন জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অনেকে আবার বিদ্যুৎ কার্যালয় ঘেরাও করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। তাই বিদ্যুৎবিভ্রাটের সমাধান না করা হলে বিদ্যুৎকর্মীরা জনরোষে পড়তে পারেন বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

কালীগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. নজরুল ইসলাম (৫৫) বলেন, হয় ইফতার, না হয় তারাবি নামাজের আগে অথবা নামাজ চলাকালীন বিদ্যুৎ চলে যাওয়াটা স্বাভাবিক কোনো ঘটনা না। সারা দিনের অন্য সময় ঠিকমতো বিদ্যুৎ থাকলেও রাতের বেলায় তা-ও নির্দিষ্ট সময়ে বিদ্যুৎ না থাকাটা অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। তাই বিদ্যুৎ কার্যালয়ের উচিত অতি সত্বর এর সমাধান বের করা।

পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. শরীফ হোসেন পাঠান (৩৪) বলেন, ‘সারা দিন আমরা রোজা রেখে ক্লান্ত থাকি। ইফতারটুকু শান্তিতে করতে পারি না। যদি কোনো দিন ইফতারে বিদ্যুৎ না যায়, তাহলে তারাবির নামাজের সময় যাবেই। এক মাসের বিদ্যুতের বিল না দিতে পারলে বাড়িতে অফিস থেকে লোক চলে আসে লাইন কাটবে বলে। কিন্তু তাদের এই রহস্যজনক আচরণের বিচার কে করবে?’

উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের পৈলানপুর এলাকার মোহাম্মদ আলী (৩৬) বলেন, ‘আমরা শান্তিতে ইফতার ও তারাবি নামাজ আদায় করতে চাই। বিশেষ করে তারাবি নামাজে এখন মুসল্লির সংখ্যা বেশি হয়, তাই মসজিদের ভেতরে গরমের প্রভাবটাও থাকে অনেক বেশি। বিদ্যুৎ না থাকলে তা আরও প্রকট আকার ধারণ করে।’

পল্লী বিদ্যুতের কালীগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘কালীগঞ্জে যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, আমরা তার অর্ধেকেরও কম পাই। যে পরিমাণ বিদ্যুৎ পাই, তা-ও যদি নিজেদের ফিড থেকে সঞ্চালন করতে পারতাম, তবুও এত সমস্যা হতো না। এখানে কালীগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের কিছুই করার নেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত