Ajker Patrika

এক ‘স্বপ্ন বুনন’ স্বপ্ন অনেকের

মান্দা (নওগাঁ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২১ মে ২০২২, ১৩: ৩৫
Thumbnail image

ছোটবেলা থেকেই সেলাইকাজে আগ্রহ ছিল জেসমিন আক্তার যুথীর। লেখাপড়ার পাশাপাশি ছোটদের জামা সেলাই, টুপি তৈরিসহ হাতে বুনতেন বিভিন্ন কাজ। সেই ঝোঁক থেকেই আজ তিনি নারী উদ্যোক্তা। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্বপ্ন বুনন’। এ কারখানা ছয়টি শাখায় কাজ করছেন শতাধিক নারী। উদ্যোক্তা যুথীর পাশাপাশি এসব নারীরাও এখন স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন।

উদ্যোক্তা জেসমিন আক্তার যুথী উপজেলার চককেশব গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন শেখের মেয়ে। মান্দা মমিনা শাহানা সরকারি কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেছেন। চাকরির দিকে না গিয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। ইতিমধ্যে গত মঙ্গলবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধিদল পরিদর্শন করেন নারী উদ্যোক্তা যুথীর ‘স্বপ্ন বুনন’ কারখানাটি।

উদ্যোক্তা জেসমিন আক্তার যুথী বলেন, ‘করোনার সময় কলেজ বন্ধ হয়ে যায়। বাড়িতে বসে বসে অলস সময় কাটাতে হচ্ছিল। এরপর নিজে থেকে রুলের সুতোয় বিভিন্ন পণ্য তৈরি শুরু করি। শুরুতে তৈরি এসব পণ্য রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন দোকানে বিক্রির চেষ্টা করি। একপর্যায়ে সফলও হই। বাজারে চাহিদা থাকায় ইউটিউব থেকে ধারণা নিয়ে মানসম্পন্ন পণ্য তৈরি করি।’

যুথী আরও বলেন, পণ্যের বাজার সৃষ্টি হওয়ায় গ্রামের অসহায় নারীদের এই কাজে উদ্বুদ্ধ করেন। তাঁদের নিজেই হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দক্ষ শ্রমিক হিসেবে গড়ে তোলেন। বাড়ির পাশে ঘর নির্মাণ করে সেখানে প্রশিক্ষিত নারীদের দিয়ে কাজ করিয়ে নেন। মাস শেষে তাঁদের পণ্য তৈরির প্রকারভেদে মজুরি পরিশোধ করেন। বর্তমানে নিজ বাড়িসহ হাটোইর, বানিসর, কানারমোড় গাবতলীসহ ছয়টি কারখানা চালু আছে। এসব কারখানায় এলাকার অসহায় নারী ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা কাজ করছেন।

উদ্যোক্তা যুথী বলেন, তাঁর কারখানায় পুতুল, টুপি, বেল্ট, আপেল, কমলা, হাতি, শিয়াল, বাঘ, সিংহ, জুতা, পাপসসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরি হচ্ছে। এসব পণ্য তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে রুলের সুতা ও পাটের চট।

এ কারখানায় কাজ করছেন বালুবাজার শফিউদ্দিন মোল্লা কলেজের একাদশ দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রিমা আক্তার। সে বলে, করোনার সময় বাবার আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংসারে অভাব আসে। এ অবস্থায় কিছুটা আলোর পথ দেখান নারী উদ্যোক্তা যুথী। প্রথম মাসেই সে ও তাঁর ছোট বোন কাজ করে আয় করেন ৫ হাজার ৪০০ টাকা। কাজের প্রতি মনোযোগ আরও বেড়ে যায়। পরের মাসে দুই বোন উপার্জন করেন ১১ হাজার টাকা। লেখাপড়ার পাশাপাশি এ আয় দিয়ে নিজেদের খরচ চালিয়ে নিচ্ছে তারা।

নারী উদ্যোক্তা জেমসিন আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, তাঁর কারখানায় তৈরি পণ্য বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব হলে এলাকার অসহায় নারীদের শ্রমের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া যাবে। কারখানার পরিধি বাড়লে আরও অনেক নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বাড়তি আয় তাঁদের পরিবারে অভাব-অনটন দূর করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত