Ajker Patrika

রাজপথে পাটকল শ্রমিকেরা

খুলনা প্রতিনিধি
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২২, ১২: ৪৭
Thumbnail image

খুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকেরা গত কয়েক দিন ধরে বকেয়া পরিশোধ ও দ্রুত পাটকল চালুর দাবিতে রাজপথে মিছিল ও সমাবেশ করছেন। এরই অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর বেলা ১১টার দিকে খুলনা নগরীর শিববাড়ি মোড়ে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে শ্রমিক কৃষক ছাত্র জনতা ঐক্য পরিষদ। এ সময় তাঁরা ঈদের আগে পাওনা না দিলে এবং দ্রুত মিল চালুর উদ্যোগ না নিলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন।

জানা গেছে, ২০২০ সালের জুলাই মাসে সারা দেশের মতো খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকল বন্ধ করা হয়। ওই সময় দ্রুত শ্রমিকদের বকেয়া পাওনা পরিশোধ এবং মিল চালুর আশ্বাস দেওয়া হয়। মিলের ৪২ হাজার ১৩০ জন শ্রমিকের মধ্যে ৩৭ হাজার ২৩০ শ্রমিক পাওনা পেলেও এখন পর্যন্ত পাওনা পাননি ৪ হাজার ৯০০ শ্রমিক। কারও আংশিক কারও সঞ্চয়পত্রের টাকা বাকি রয়েছে। পাওনা টাকা না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন শ্রমিকেরা।

এ ব্যাপারে খুলনার ক্রিসেন্ট জুট মিলের শ্রমিক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মিল বন্ধ হয়েছে প্রায় দুই বছর ধরে। আমি এখনো পাওনার জন্য অপেক্ষা করছি। জানি না কবে টাকা পাব।’

দিলরুবা আক্তার বলেন, ‘বকেয়া টাকা এখনো পাইনি। আমার স্বামী অসুস্থ। টাকার অভাবে স্বামীকে ডাক্তারের কাছে নিতে পারি না। এরপর আবার চলছে রোজা, সামনে ঈদ। কীভাবে কি করব ভেবে পাচ্ছি না।’

এদিকে ঈদের আগে বকেয়ার দাবি গত কিছুদিন ধরে পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ, সমন্বয়ক পাটকল রক্ষায় শ্রমিক কৃষক ছাত্র জনতা ঐক্য পরিষদ এবং কারাখানা কমিটির পক্ষ থেকে মানববন্ধন, সমাবেশ, সংবাদ সম্মেলনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। ঈদের আগে বকেয়া পরিশোধ ও দ্রুত মিল চালু না করলে ঈদের পর থেকে রাজপথে লাগাতার কর্মসূচির দেওয়া হবে বলে কর্মসূচি থেকে নেোরা জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে খুলনা পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদ আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কুদরত-ই খুদা বলেন, মিল বন্ধের সময় দ্রুত চালুর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল তিন মাসের মধ্যে পাওনা পরিশোধের কথা। কিন্তু গত ২২ মাসেও প্রায় ৫ হাজার শ্রমিকের বকেয়া পরিশোধ হয়নি। এ ছাড়া খালিশপুর ও দৌলতপুর জুট মিলের অস্থায়ী শ্রমিকদের পাওনার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। যা দুঃখজনক। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যদি ঈদের পূর্বে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা না হয় তবে ঈদের পরে লাগাতার কর্মসূচি দেওয়া হবে।

গতকাল বেলা ১১টায় খুলনা নগরীর শিববাড়ি মোড়ে মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সমন্বয়ক রুহুল আমিন। এ সময় রুহুল আমিন বলেন, মিল বন্ধ হয়েছে প্রায় দুই বছর। অথচ এখনো সব শ্রমিকের টাকা পরিশোধ করা হয়নি। শ্রমিকদের পক্ষ থেকে বারবার বকেয়া পরিশোধের দাবি জানানো হচ্ছে। ঈদের আগে পরিশোধ করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে শ্রমিকেরা। দ্রুত মিলগুলোর চালুরও দাবি জানান এই নেতা।

খুলনা বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মিজানুর রহমান জানান, ইতিমধ্যে মিলের ৪২ হাজার ১৩০ জন শ্রমিকের মধ্যে ৩৭ হাজার ২৩০ শ্রমিক পাওনা পেয়েছেন। ৪ হাজার ৯০০ শ্রমিকের পাওনা বাকি রয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্রে নামের বানান ভুল, মামলাসহ বিভিন্ন কারণে তারা এখনো সম্পূর্ণ টাকা পাননি। তবে চেষ্টা করা হচ্ছে দ্রুত সমস্যা সমাধানের। প্রায় প্রতিদিনই কারও না কারও পাওনা পরিশোধ করা হচ্ছে। এ ছাড়া দৌলতপুর ও খালিশপুর মিলের অস্থায়ী শ্রমিকদের পাওনার বিষয়েও দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত