Ajker Patrika

বাঁধের সংস্কারকাজে গতি নেই

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৫২
বাঁধের সংস্কারকাজে গতি নেই

সাতক্ষীরার আশাশুনিতে ১১ শ মিটার ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজের গতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়নের হরিশখালী গ্রামের হাওলাদার বাড়ি থেকে পুরোনো গেট সংলগ্ন খোলপেটুয়া নদী পর্যন্ত বাঁধটি সংস্কারের কথা রয়েছে। তবে কাজে গতি না থাকায় এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সংস্কারকাজ শেষ না হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে প্রবল জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করছেন তাঁরা। এ কারণে শুষ্ক মৌসুমের মধ্যেই বাঁধের নির্মাণকাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন প্রতাপনগর ইউনিয়নবাসী।

জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর বাঁধের কাজ শুরু হয়ে ইতিমধ্যে দুই বছর পেরিয়ে গেছে। তা সত্ত্বেও শেষ হয়নি সংস্কারকাজ। এর মধ্যে গত বছর দুবার নদীর প্রবল জোয়ারের পানিতে ভেসে যাওয়ার পর অনেক কষ্টে বাঁধটি পুনরায় মেরামত করানো হয়েছিল। কিন্তু এখনো পর্যন্ত মূল বাঁধের কাজ শেষ না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত উক্ত বাঁধ ভেঙে আবার বন্যায় ভেসে যাওয়ার ভয়ে প্রতাপনগর ইউনিয়নবাসী।

এদিকে বাঁধের সংস্কারকাজে ধীর গতি এবং এ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে প্রশ্ন উঠেছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাঁধের মেরামতের কোনো প্রকল্প পরিচিতি বোর্ড টাঙানো হয়নি। কত টাকার বাজেট, বাঁধ মেরামতে কী কী ব্যবহার করা হবে, কবে নাগাদ কাজ শেষ হবে তা কেউ বলতে পারছে না। তবে আসন্ন বর্ষা মৌসুমের আগে বাঁধটি টেকসইভাবে সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তাঁরা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাতক্ষীরার শাহিন আলীর তত্ত্বাবধানে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করে।

স্থানীয় স্থানীয় মাসুম বিল্লাহর অভিযোগ, মাত্র দুটি স্ক্যাভেটর মেশিনে কাজ চলছিল। তবে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে একটি আবার দীর্ঘদিন ধরে অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। অন্যদিকে সংস্কারে ব্যবহার হওয়া ড্রেজার মেশিনটির খুব একটা ব্যবহার দেখা যায় না। এসব কারণে সংস্কারকাজ কবে নাগাদ শেষ হবে তা বলতে পারছি না। তিনি আরও বলেন, ‘বর্ষা মৌসুম চলে আসতে খুব একটা বাকি নেই। কি হবে তাই নিয়ে আমরা শঙ্কিত।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় সাবেক এক ছাত্রনেতা বলেন, কোনো প্রকল্প পরিচিতি না টাঙিয়ে প্রায় ১১ শ মিটার বেড়িবাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করার পর কাজ চলছে তো চলছেই। কত বাজেট, বাঁধে কি কি ব্যবহার করতে হবে তা কেউ জানে না। রিভারসাইটে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ দেওয়ার কথা থাকলেও এখন দেখছি কিছু কিছু জায়গায় পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার করা হচ্ছে। ভালোয় ভালোয় বাঁধটির সংস্কার হলে আমরা বেঁচে যাই।

এদিকে গত শুক্রবার ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান আল আবু দাউদ গাজী ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ এলাকা পরিদর্শন করেন। ঠিকাদারের লোকজনের সঙ্গে কাজের অগ্রগতির বিষয়ে কথা বলার পর কোনো সদুত্তর তিনি পাননি বলে অভিযোগ। তিনি বলেন, এ সময় সংস্কার কাজের সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা এ বাঁধটির কোনো একটি স্থানের কাজও শেষ করতে পারেননি। এখনো কোথাও কোথাও বাঁধের দুই/তিন হাত প্রশস্ত, বস্তার কাজ শেষ হয়নি। তিনি বলেন, হয় কাজ শেষ করে আমাদের শঙ্কামুক্ত করুন, না হয় কাজ ছেড়ে দিন। ইউনিয়নের ৩৫ হাজার জনগণের জীবন-জীবিকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অতীতের মতো আমরা নিজেরাই বাঁধ মেরামতে নেমে যাব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাউবোর বিভাগীয় উপপ্রকৌশলী (এসও) জিয়াউর রহমান জিয়ার সঙ্গে কথা বললে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রোহিদুল হোসেন খানের সঙ্গে কথা বলতে বলেন। রোহিদুল হোসেন খান তথ্য এড়িয়ে গিয়ে উপজেলা তথ্য অফিসে যোগাযোগ করতে বলেন। পরে ঠিকাদার শাহীন আলীর সঙ্গে কথা বলতে গেলে তাঁর মোবাইলটি বন্ধ পাওয়া যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত