Ajker Patrika

সাইমন ড্রিং

সম্পাদকীয়
সাইমন ড্রিং

সাইমন ড্রিং ছিলেন একজন ব্রিটিশ সাংবাদিক, টেলিভিশন উপস্থাপক ও প্রামাণ্য চিত্রনির্মাতা। তাঁর জন্ম ১৯৪৫ সালের ১১ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের নরফোকে।

সাইমন পড়াশোনা করেছেন কিংস লিন টেকনিক্যাল কলেজে। তিনি সাংবাদিকতা শুরু করেন ১৮ বছর বয়সে। দেখেছেন ২২টি যুদ্ধ, অভ্যুত্থান ও বিপ্লব। যুদ্ধক্ষেত্রের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে আহতও হয়েছেন একাধিকবার।

১৯৬৩ সালে থাইল্যান্ডের ‘ব্যাংকক ওয়ার্ল্ড’ পত্রিকায় ফিচার রাইটার হিসেবে তাঁর সাংবাদিকতার শুরু। পরে লাওস থেকে যুক্তরাজ্যের ‘ডেইলি মেইল’ আর যুক্তরাষ্ট্রের ‘নিউইয়র্ক টাইমস’-এ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করেন। রয়টার্সের হয়ে যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন ভিয়েতনামে।

সত্তর ও আশির দশকজুড়ে তিনি ডেইলি টেলিগ্রাফ, বিবিসি টেলিভিশন, বিবিসি রেডিও, সানডে টাইমস, নিউজউইকের হয়ে কাজ করেছেন।

একাত্তরের ৬ মার্চ সাইমন ড্রিং ঢাকায় আসেন। ২৫ মার্চ কালরাতে প্রায় অর্ধশত বিদেশি সাংবাদিককে আটকে রাখা হয় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে। পরদিন তাঁদের হোটেল থেকে সরাসরি বিমানে তুলে ঢাকা ছাড়তে বাধ্য করা হয়, যেন আগের রাতের গণহত্যার কোনো খবর প্রকাশ করতে না পারে বিশ্ব গণমাধ্যম। কিন্তু সাইমন ওই হোটেলেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লুকিয়ে থাকেন।

পরের দিন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে সংবাদ সংগ্রহ করেন। ধ্বংসযজ্ঞের সেই প্রত্যক্ষ চিত্র ৩০ মার্চ ডেইলি টেলিগ্রাফে প্রকাশিত হয় ‘ট্যাংকস ক্রাশ রিভল্ট ইন পাকিস্তান’ শিরোনামে। সেটাই ছিল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ইংরেজি ভাষায় পাকিস্তানি গণহত্যার প্রথম বিবরণ।

এরপর তিনি ১৯৯৭ সালে আবার বাংলাদেশে আসেন প্রথম বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একুশে টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে।তিনিই প্রথম পাল্টে দিয়েছিলেন এ দেশের মানুষের টেলিভিশনে সংবাদ দেখার অভিজ্ঞতা। একসময় তিনি আবার এ দেশ ছেড়ে চলে যান। তারপর তিনি প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণের পাশাপাশি কিছু দাতব্যধর্মী সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন।

বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু এ মানুষটি ২০২১ সালের ১৬ জুলাই রোমানিয়ায় মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত