Ajker Patrika

সরকারি খাতায় হাজারো তালগাছ, বাস্তবে নেই

সনি আজাদ, চারঘাট 
আপডেট : ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১৬: ১৩
Thumbnail image

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা ও বজ্রপাতে প্রাণহানি কমাতে দেশব্যাপী গ্রামীণ রাস্তার দুই পাশে তালগাছের চারা রোপণের নির্দেশনা দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্দেশনা অনুযায়ী, রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ২০ হাজার তালবীজ লাগানোর প্রকল্প বাস্তবায়ন করে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরের আওতায় লাগানো হয় আরও দেড় হাজার তালবীজ। গত তিন-চার বছরের ব্যবধানে এসব তালবীজ মাটি ছেড়ে দাঁড়ানোর কথা। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়ন এলাকায় এখনো তালবীজ প্রকল্পের সাইনবোর্ড ছাড়া কোনো তালগাছের চারা খুঁজে পাওয়া যায়নি।

উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, সরকারি খাতায় হাজার হাজার তালগাছের হিসাব থাকলেও সড়কে বাস্তবে কোনো গাছ নেই।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চারঘাট জোন সূত্রে জানা যায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চারঘাটের জয়পুর বাজার থেকে তালতলা হলিদাগাছি, দিঘলকান্দী, শলুয়া ও বালাদিয়াড় এলাকায় ১০ কিলোমিটার জুড়ে সড়কের ধারে তালবীজ রোপণ করা হয়। বরেন্দ্রের বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে ১০ কিলোমিটার এলাকায় লাগানো হয় ২০ হাজার তালবীজ।

আরও জানা যায়, এক বছরে পাহারা ও পরিচর্যা শেষে তালগাছ বুঝে নেওয়ার কথা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের। কিন্তু তিন-চার বছর অতিবাহিত হলেও এখনো তালের চারার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও সরেজমিন কাজের মান দেখে খুশি হয়ে বিল পরিশোধ করা হয়েছে তালবীজ লাগানো সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের।

এদিকে উপজেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলাজুড়ে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে প্রায় ৯৫০টি এবং ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রায় ৪০০টি তালগাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। চারা রোপণের জন্য আলাদা কোনো বরাদ্দ দেওয়া না হলেও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের মাধ্যমে এগুলো রোপণ করা হয়।

হলিদাগাছী এলাকায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রকল্প বাস্তবায়নের সাইনবোর্ড টাঙানো থাকলেও তালের চারা খুঁজে পাওয়া যায়নি। আবার কোথাও ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরের লাগানো দুই-একটা তালগাছের চারা দেখা গেলেও সেগুলো অযত্ন-অবহেলায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।

প্রকল্প বাস্তবায়িত এলাকা স্থানীয় শলুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘গত তিন-চার বছরের মধ্যে আমাদের এলাকায় কোনো তালবীজ লাগানো হয়েছে বলে আমার জানা নেই। যে এলাকাগুলোতে তালবীজ লাগানোর কথা শুনলাম, ওই সব এলাকায় তালের চারা দেখা যায় না।’

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চারঘাট জোনের সহকারী প্রকৌশলী আল-মামুনুর রশীদ বলেন, চারঘাটে ১০ কিলোমিটার সড়কে সঠিকভাবেই তালবীজ রোপণ করা হয়েছে। তালবীজ অঙ্কুরোদগম হতে অনেক সময় লাগে। এ জন্য হয়তো সেগুলো এখনো দৃশ্যমান হয়নি। তবে তালবীজগুলো নিয়মিত পরিচর্যা করা হয়।

চারঘাট উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এস এম শামীম আহম্মেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা আছে তালগাছ লাগানোর। আমরা চলতি অর্থবছরেও (২০২০-২১) তালগাছ ও বীজ রোপণ করেছি। অনেক জায়গায় রোপণ করা গাছগুলো নষ্ট হয়েছে, এটা ঠিক। এগুলো রক্ষায় আমাদের অফিসার, স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের আরও যত্নশীল হতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

গণ-অভ্যুত্থান ও পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে যা বললেন সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম

ব্যবসা গুটিয়ে নিচ্ছেন সিরামিক শিল্পের মালিকেরা

বগুড়ায় আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার

নির্বাচিত সরকারের আশায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি থেকে পিছু হটলেন তিতুমীর শিক্ষার্থীরা

ফরিদপুরে মাছ ধরা নিয়ে আ.লীগ-বিএনপির সংঘর্ষ, বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত