Ajker Patrika

খাবারের দাম বৃদ্ধি, বন্ধ হচ্ছে মুরগির খামার

ফারুক হোসেন ফিরোজ, সরিষাবাড়ী (জামালপুর)
খাবারের দাম বৃদ্ধি, বন্ধ হচ্ছে মুরগির খামার

মুরগির খাদ্যের দাম গত চার মাসে কয়েক দফায় বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার খামারি ও ডিলারেরা। এই শিল্প সরকারের নিয়ন্ত্রণে না থাকায় পোলট্রি খাদ্যের দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ তাঁদের। এতে ডিম ও মুরগির মাংসের বাজার ওঠানামা করছে।

এর মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে পরিবহন খরচ। সব মিলিয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে এই শিল্পে। এ পরিস্থিতিতে উপজেলার অধিকাংশ খামার ফাঁকা পড়ে রয়েছে।

ডিলার ও খামারিরা জানান, দফায় দফায় মুরগির খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে ডিম ও মাংসের বাজার। আর নানা অজুহাতে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে একটি চক্র। এদিকে খামারিদের অনেকে উৎপাদন খরচের সঙ্গে বিক্রয়মূল্য মেলাতে না পেরে খামার ফাঁকা রেখেছেন।

উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের উদনাপাড়া গ্রামের খামারিদের মধ্যে হাসমত আলী, মনিরুল ইসলাম, বেলাল হোসেন, হাফিজুর রহমান জানান, তাঁদের প্রত্যেকের এক হাজার মুরগি পালনের সক্ষম খামার রয়েছে। সেগুলোর প্রতিটিই এখন ফাঁকা।

খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় খামারিদের মতো ডিলাররাও বিপাকে পড়েছেন। অধিকাংশ খামার ফাঁকা থাকায় পোলট্রি খাদ্যসহ ওষুধ বিক্রিতে ভাটা পড়েছে। ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানসহ সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের। এ্শই ল্পকে বাঁচাতে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি বলে জানা ডিলারেরা। 
উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের বারইপটল বাজারের পোলট্রি ডিলার ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘গত জুন মাস থেকে চার দফা মুরগির খাদ্যের দাম বাড়িয়েছে খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। চলতি সেপ্টেম্বরেই ৫০ কেজি ওজনের প্রতি বস্তা মুরগির খাদ্যে ৬২ থেকে ৮০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। তবে খাদ্যের গুণগতমান আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা যায়, এই উপজেলায় নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত খামার মিলিয়ে ৮ শতাধিক পোলট্রি খামার রয়েছে। খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় পোলট্রিশিল্পে বেশ প্রভাব পড়েছে।

খামারিরা বলেন, গত ২ বছর লেয়ার মুরগির খাদ্যের দাম বস্তাপ্রতি ১ হাজার ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা ছিল। ওই একই খাদ্য বর্তমানে ৩ হাজার ২৩২ টাকায় কিনতে হচ্ছে ডিলারদের। আর খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৩৫৭ টাকায়। এ দামেই খাদ্য কিনতে হচ্ছে খামারিদের।

উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের পোলট্রি খাদ্য ও ওষুধের ডিলার ফিরোজ আলম বলেন, ‘মুরগি ও ডিমের দামে ডিলার, খামারি কিংবা সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। একটি চক্র ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। এসব মধ্যস্বত্বভোগীই খামারের লাভের একটি বড় অংশ নিয়ে যাচ্ছে।’ 

এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনিছুর রহমান বলেন, মুরগির ডিম ও মাংসের মূল্য নির্ধারিত নেই। এ কারণে দাম ওঠানামা করে। এ শিল্পের প্রয়োজন অনুযায়ী সরকারের জনবল নেই। তাই নজরদারি করা সম্ভব হয় না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত