Ajker Patrika

ময়লার ভাগাড় এখন শিশুপার্ক

সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি
আপডেট : ১৩ আগস্ট ২০২২, ১২: ৪৩
Thumbnail image

বছর দুয়েক আগে ছিল ঝোপঝাড় আর ময়লার ভাগাড়। রাতে কিংবা দিনের বেলায় সাধারণ মানুষের পদচারণা ছিল না। সন্ধ্যা নামলেই শোনা যেত শেয়ালের ডাক। বসত মাদকাসক্তদের আড্ডা। চলত অসামাজিক কার্যকলাপ। আর এখন সেখানে করা হয়েছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। শিশুরা করে খেলা। বলা হচ্ছিল গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ পার্কের কথা।

স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটওয়ারী উপজেলা পরিষদ পার্কটি গড়ে তুলেছেন। তিনি পার্কে বিভিন্ন কবি-লেখকের প্রতিকৃতি ও জীবনীও তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। পার্কের পুকুরেও দৃষ্টিনন্দনের কাজ করেছেন। এসব কাজ করা হয়েছে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থায়নে (টিআর)।

দুই শিশুসন্তানকে নিয়ে পার্কে ঘুরতে আসা শিরীন ইসলাম বলেন, ‘বিনোদনকেন্দ্রটি বাড়ির কাছে। তাই খুব সহজেই বাচ্চাদের নিয়ে আসতে পারি। আর এর আগে রংপুর চিড়িয়াখানায় যেতে হতো। কমপক্ষে ৫০ মাইল দূরে। বছরে হয়তোবা একবারও যাওয়া হতো না।’

পার্কে ঘুরতে আসা শিক্ষার্থী অনুভব বলেন, ‘এখানে এসে স্লিপার ও দোলনায় উঠলাম। ভালো লেগেছে। এর সঙ্গে বিভিন্ন কবি-লেখকের ছবি দেখতে পেলাম। পড়লাম তাঁদের জীবনী। ঘুরতে এসে শেখাও হলো। অনেক মজা পেলাম।’

পুকুরপাড়ে ব্যায়াম করছিলেন ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘দুই বছর আগেই জায়গাটি মাদকাসক্তদের আড্ডাখানা ছিল। চলত অসামাজিক কার্যকলাপ। কিন্তু এখান প্রতিদিন এখানে ব্যায়াম করতে আসি। অনেকের সঙ্গে এখানে দেখা হয়। এখানকার নির্মল বাতাস বেশ ভালোই লাগো। উপজেলায় এ ধরনের জায়গা আর কোথাও নেই। এ কারণে স্থানীয় সংসদ সদস্যের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।’

জানা গেছে, ১৯৮৩ সালে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা হিসেবে মর্যাদা পায়। এরও অনেক আগে সরকারি জায়গায় পুকুরটি খনন করা হয়। পরে পুকুরটিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে সরকারি বিভিন্ন কার্যালয়।

স্থানীয়রা জানান, অযত্ন আর অবহেলায় পুকুরের চারপাশ জঙ্গলে ভরে যায়। ফেলানো হতো শহরের ময়লাও। এ কারণে ক্রমে জায়গাটি হয় উঠেছিল ভয়ংকর। চারপাশ সরকারি কার্যালয় আর মাঝখানে এই অবস্থা। বিষয়টি উপলব্ধি করেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম হায়দার পাটওয়ারী। পরে তিনি বছর দুই আগে প্রথমে পুকুরের চারপাশ পরিষ্কার করেন। এরপর ইট দিয়ে বেঁধে দেন পুকুরটির চারপাশ। নির্মাণ করা হয়েছে বসার আসন। লাগানো হয়েছে বিভিন্ন রঙের আলোকবাতি। সন্ধ্যা হলেই বাতিগুলো জ্বলে ওঠে। সর্বশেষ সেখানে করা হয়েছে মিনি শিশু পার্ক।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ-আল-মারুফ বলেন, ‘আশপাশে কোনো বিনোদনকেন্দ্র নেই। এ কারণে এটি খুব ভালো হয়েছে। বিশেষ করে আমরা যাঁরা কোয়ার্টারে থেকে চাকরি করি। কর্মব্যস্ততার কারণে বাচ্চাদের নিয়ে বাইরে যেতে পারি না। তাই বাচ্চারা এখানে এসে বেশ আনন্দ করে। টিআর প্রকল্পের অর্থায়নে এগুলো করা হয়েছে।

সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটওয়ারী বলেন, ‘বিনোদনকেন্দ্রের দরকার। কিন্তু পৌর শহরের কোথাও কোনো বিনোদনকেন্দ্র নেই। এ কারণে এটি করা হচ্ছে। আরও সম্প্রসারণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত