Ajker Patrika

হঠাৎ ধর্মঘটে ভোগান্তি

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২১, ০৪: ২৭
হঠাৎ ধর্মঘটে ভোগান্তি

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে রংপুরে হঠাৎ ধর্মঘটে গেছেন যাত্রীবাহী পরিবহনের মালিক-শ্রমিকেরা। গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে একযোগে বিভাগের সব জেলায় শুরু হয় অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি। হঠাৎ এ ধর্মঘটে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল থেকে রংপুরে মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নেন মালিক-শ্রমিকেরা। নগরীর কামারপাড়া কোচ স্ট্যান্ডে সারি সারি করে রাখা ছিল ঢাকাগামী বাসগুলো। যাত্রীরা বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য কাউন্টারে এসে ফিরে যান।

কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালেও দেখা গেছে একই অবস্থা। এই টার্মিনাল থেকে স্বল্প পাল্লার আঞ্চলিক বাস চলাচল করে। কিন্তু গতকাল এখান থেকে কোনো বাসই চলেনি।

এ ছাড়া রংপুর-কুড়িগ্রাম বাস স্ট্যান্ড এবং নগরীর প্রধান বহির্গমন পথ মডার্ন মোড়ে দেখা যায়, সেখান থেকে কোনো বাস চলাচল করেনি। তবে চলেছে অটোরিকশাসহ ছোট ছোট যানবাহন।

বাস চলাচল না করায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন ঢাকাগামী যাত্রীরা। চাকরির পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য যারা ঢাকা যাওয়ার টিকিট করে রেখেছিলেন, হঠাৎ ধর্মঘট শুরু হওয়ায় তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। এ ছাড়া ঢাকায় কর্মজীবী যারা ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন তাঁদেরও ব্যর্থ মনোরথে ফিরে যেতে হয়েছে।

পাশাপাশি আঞ্চলিক বাস চলাচল বন্ধ থাকায় এক জেলার লোক অন্য জেলায় যেতে পারেননি। তবে কেউ কেউ জরুরি প্রয়োজনে ছোট যানবাহনে যাতায়াত করলেও গুনতে হয়েছে বাড়তি ভাড়া।

বাস বন্ধ থাকায় চাপ পড়েছে ট্রেনে। শুক্রবারের পাশাপাশি ও শনিবারের ঢাকাগামী ট্রেনের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে বলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে।

চাকরিপ্রত্যাশী বিথী হোসাইন জানান, শনিবার তাঁর ঢাকায় চাকরির পরীক্ষা ছিল। সে অনুযায়ী শুক্রবার সকালের টিকিট করা ছিল। কিন্তু সকালে কাউন্টারে এসে শোনেন পরিবহন ধর্মঘট চলছে। ট্রেনেও টিকিট পাওয়া যায়নি। ফলে তাঁর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা হলো না।

চিকিৎসার কাজে ঢাকা যাওয়ার টিকিট করে রেখেছিলেন ষাটোর্ধ্ব আনোয়ার হোসেন। কিন্তু বাস না চলায় কাউন্টারে এসে টাকা ফেরত নিয়েছেন তিনি।

ঢাকা যাওয়ার জন্য বাসস্ট্যান্ডে এসেছিলেন পোশাকশ্রমিক শরীফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘তিন দিনের ছুটি নিয়া অনেক দিন পর বাড়ি আলছোনো। আইজ যাবার জন্যে আসি শুনি বাস চলবানায়। গার্মেন্টসত কতায় কতায় চাকরি খায়। হুট করি চাকরি পাওয়াও যায় না এলা। মোর চাকরিখ্যান গেইলে মুই কী করিম?’

পরিবহন মালিক ও শ্রমিকেরা বলছেন, হঠাৎ তেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। এ অবস্থায় ভাড়ার সঙ্গে তেলের দামের কোনো সমন্বয় হচ্ছে না। ভাড়া না বাড়ালে পরিবহন মালিকদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

ধর্মঘটে বাস-ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় চালক ও শ্রমিকেরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে দাবি করেন শ্যামলী পরিবহনের চালক আল-আমিন। তিনি বলেন, ‘যে হারে ডিজেলের দাম বাড়ানো হয়েছে, তাতে পরিবহন চালানো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। হঠাৎ ডিজেলের এ দাম বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিকতা নেই।’

কামারপাড়া কোচ স্ট্যান্ডে এনা পরিবহনের কাউন্টারের সহকারী ম্যানেজার তোতা মিয়া বলেন, ‘তেলের দাম বাড়বে কিন্তু এভাবে হঠাৎ লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়ানো কতখানি যৌক্তিক? আমরা তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে ধর্মঘট পালন করছি। এখন বাস ভাড়া না বাড়ানো ছাড়া আমাদেরও উপায় থাকবে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

৬ জ্যান্ত হাতি নিয়ে রাশিয়ায় মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান, উচ্ছ্বসিত পুতিন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত