মামুনুর রশীদ

পৃথিবীর কোথাও কোনো উৎসবে এ রকম লক্ষ-কোটি মানুষ বাড়ি ফেরে কি না, আমার জানা নেই। তা-ও একা নয়, সপরিবারে। ট্রেন, বাস, লঞ্চে উঠছে মানুষ, শুধু মানুষ। দুটি ঈদে একই অবস্থা। আসলে এ হচ্ছে ফেরা। ঘরে ফেরা শুধু নয়, শিকড়ে ফেরা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে, এমনকি পাশের দেশের বাঙালিরা বড় কোনো ছুটি পেলে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। যাদের সামর্থ্য আছে তারা কাশ্মীর, হিমালয়, সিমলা ঘুরে আসে আর যারা অত দূর যেতে পারে না, তাদের জন্য নিদেনপক্ষে দীঘা হলেও হয়। কিন্তু গ্রামে যাওয়ার ব্যাপারটা নেই। তারপর খরচের দিকেও কোনো নজর থাকে না। বেতন-বোনাস নিঃশেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত টনক নড়ছে না। পরবর্তী মাসগুলোতে বেশ কষ্ট। তবু তোয়াক্কা নেই।
রাজধানী শহর অথবা বড় শহরগুলোতে মানুষের নিতান্তই জীবিকার জন্য থাকা, কিন্তু আসল ঘর ওই গ্রামেই। আজকাল অবশ্য গ্রামগুলো দিন দিন শহরের চেহারা নিচ্ছে। তবুও একটা প্রাচীন অথবা নতুন বাজার আছে। চায়ের দোকান, দোকানে আবার অনবরত টেলিভিশন চলছে। এখন আলোচনার বিষয়বস্তু সব জায়গাতেই আগামী নির্বাচন। নির্বাচনই একমাত্র গণতন্ত্র, একমাত্র রাজনীতি।
যা-ই হোক, যে উত্তেজনা শুরু হয় ঈদের ছুটির আগ থেকে, তা পাঁচ-ছয় দিনের মাথায় কাজে ফেরার মধ্য দিয়ে স্তিমিত হতে থাকে। এবার ঘরে ফেরার বিষয়টি দেখা যাক। আমার এক বন্ধু প্রতি ঈদেই গ্রামে যায়। তার গ্রামটাও বেশি দূরে নয়, ঢাকা থেকে সব মিলে একেবারে ঘর পর্যন্ত ১৪০ কিলোমিটার। যেতে হয় তাকে বাসে, বাস ছাড়ে মহাখালী থেকে। এবার প্রবল বৃষ্টি। তাই খুব ভোরে যাওয়া সম্ভব হয়নি। একটু দেরিতেই যাত্রা শুরু করতে হয়েছিল। সঙ্গের ভাইটিরও নানা কারণেই দেরি হয়ে গেল। বেলা ১২টার দিকে মহাখালীতে গাড়ির প্রবল জটলা। এর মধ্যে জানা গেল দ্রুতগামী বাসগুলোতে টিকিট নেই। লোকাল বাসে যেতে হবে। গাড়ি নেই, তবে বেলা ২টার আগে আসার সম্ভাবনা নেই। অগত্যা অপেক্ষা। বসার জায়গা নেই, দাঁড়িয়ে, হাঁটাহাঁটি করে কালক্ষেপণ। ২টার বাস আসতে আসতে আরও দেরি হয়ে গেল। স্বাভাবিক দিনগুলোতে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের ভাড়া দুই শ টাকা। ঈদের সময় সেই ভাড়া গিয়ে দাঁড়ায় পাঁচ শ টাকায়। কিন্তু মহাখালী থেকে গাড়ি বের হওয়ার পরেই এই ভাড়া বাড়তে শুরু করে। চৌরাস্তা থেকে ভাড়া বেড়ে গিয়ে এক হাজার টাকা পর্যন্ত ওঠে এবং কোনো রকম বসার সিটের নিশ্চয়তা ছাড়া। ছোট ছোট মোড়া বসিয়ে দেয় সিটের ফাঁকে ফাঁকে। এরপর ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে সপরিবারে বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা আছে, সেখানেও ভাড়া পাঁচ শ টাকা। লোকাল বাসগুলো পারলে প্রতিটি গ্রামেই থামে, মহাখালী থেকে রওনা দিয়ে ময়মনসিংহ গিয়ে পৌঁছায় রাত ১০টায়। সেখান থেকে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার দূরে বাড়িতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত প্রায় ১২টা বেজে যায়।
এ তো গেল কাছাকাছি দূরত্বের কথা। কিন্তু যাদের বাড়ি প্রান্তিক জেলায়, অর্থাৎ পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও কিংবা দিনাজপুর, তাদের এই ভোগান্তির কোনো শেষ নেই। ফিরতি পথেও সমস্যা একই রকম, তবু ঘরে ফেরা চাই। শেষ পর্যন্ত অনেকেরই বাড়ি ফেরা হয় না, দুর্ঘটনায় মৃত্যু এমনিতেই নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা আর ঈদের সময় তো কথাই নেই। আগে যাত্রীরা ট্রেনের ছাদের ওপর উঠে যেত। গত বছর এবং এ বছর এ রকমটা দেখা যায়নি। সরকার বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে কিন্তু পরিস্থিতির এমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।
তবে এবার যেসব জায়গায় রাস্তা প্রশস্ত হয়েছে, সেই সব জায়গায় অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। এই যে ঈদের সময় দ্রব্যমূল্য, পরিবহন খরচের বাড়াবাড়ি, এতে একটি কথা খুবই চালু হয়েছে, তা হলো—সিন্ডিকেট। বাসের মালিক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা সবাই মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। আমরা সিন্ডিকেটকে জেনেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে, যেখানে শিক্ষা, নিয়োগ সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিষয়ক বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই সিন্ডিকেটের প্রয়োগ এখন সর্বত্র। একেবারে নিম্নবিত্ত, খেটে খাওয়া মানুষও কথায় কথায় সিন্ডিকেট শব্দটি ব্যবহার করে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গণবিরোধী কোনো তৎপরতাকেও সিন্ডিকেট বলা হয়।
সিন্ডিকেট এখন রিকশাওয়ালাদের ভাড়া নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়। সেই সঙ্গে সিএনজি, বাস, লঞ্চ ইত্যাদির ভাড়ার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে ঐক্য প্রচেষ্টাকে সিন্ডিকেট বলে অভিহিত করা হয়, দ্রব্যমূল্যের ক্ষেত্রে তো আছেই। এই সিন্ডিকেটের হোতারা একটি উদ্দেশ্যেই নিবেদিত তা হলো, দ্রুত টাকা উপার্জন এবং তার জন্য সবচেয়ে মোক্ষম সময় হলো ঈদ। কল্পনা করা যায় যে কাঁচা মরিচের কেজি হাজার টাকা হয়ে গেল আবার তা দ্রুতই দেড় শ টাকায় নেমে এল! বাঙালির খাদ্যে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ লাগেই, কাজেই এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা সহজ। কী অদ্ভুত ব্যাপার, ভারতীয় সীমান্তে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজের আমদানি করা ট্রাক ঢুকছে শুনেই দাম কমে যাচ্ছে। আবার যাত্রী চলাচল কমে গেলে আগের ভাড়ায় ফিরে যায়। আগের ভাড়া ও দ্রব্যমূল্যও কম নয়, যা সিন্ডিকেটেরই অবদান।
আমাদের সংসদে এই সিন্ডিকেট নিয়ে বহুবার আলোচনা হয়েছে। সরকারি দলের সদস্যরা বলছেন যে সবই তাঁদের মন্ত্রীদের কারবার, তাঁরা নিজেরাও এর সঙ্গে জড়িত থাকেন। এ কথাও বলছেন যে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী এবং বর্তমান বাণিজ্যমন্ত্রী এই সিন্ডিকেট সম্পর্কে শুধু অবহিতই নন, জড়িত। কারণ দুজনই ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীরা কখনো নিজের স্বার্থ ভুলে গিয়ে জনগণের স্বার্থ দেখবেন, এটা আশা করা যায় না। জনগণের একটা অংশ যদিও তা সংখ্যালঘিষ্ঠ, তাদের পক্ষে যেকোনো পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্য সহনীয়। তারা যেভাবে আয় করে, সেভাবেই তারা ব্যয় করে থাকে। অতএব এ ক্ষেত্রে তাদের কিছুই গায়ে লাগে না। উপজেলা থেকে খোদ সচিবালয় পর্যন্ত আমলা ও সহযোগীদের কোনো অসুবিধা হয় না। একটি মাস যদি শুধু বেতনের অর্থে তাদের চলতে হয় (এমনকি বেতন দ্বিগুণ হওয়ার পরেও), তাহলে তারা বুঝতে পারত মানুষ কী অবস্থায় আছে।
মন্ত্রী-রাজনীতিবিদদের ব্যাপারেও একই কথা প্রযোজ্য। রাজনৈতিক দলগুলোতে প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে শুধুই নির্বাচন। দ্রব্যমূল্য, পরিবহন ব্যয়, স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে নৈরাজ্য—এসব তাদের কর্মসূচির মধ্যে নেই। ক্ষীণ কণ্ঠে মাঝে মাঝে বাম দলগুলো এসব কথা বলে থাকে, কিন্তু তাদেরও তৃণমূল পর্যায়ে কোনো কাজকর্ম নেই। ফলে সরকার প্রতিবাদহীন অবস্থায় খুব সুখে দেশ চালিয়ে যাচ্ছে। দুদক, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে বরাবরই ব্যর্থ হচ্ছে। সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ঘুমিয়েই থাকে।
বর্তমানে খুব ছোটখাটো বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ব্যতীত কোনো কিছু সম্ভব নয়—কলাবাগানের মাঠ বা ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের গাছ কাটা পর্যন্ত। এহেন পরিস্থিতিতে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত সব ব্যবস্থাকে মেনে নিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। কোথাও কোনো প্রতিবাদ নেই; বরং তাদের অভিজ্ঞতায় রয়েছে যে প্রতিবাদ করে কোনো লাভ হয় না। প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মাধ্যমে দিন-রাত এসব কথা বলা হচ্ছে, তাতেও কোনো লাভ হচ্ছে না। কারণ সিন্ডিকেট শুধু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নয়, একেবারে তৃণমূল পর্যায়েও বিরাট ক্ষমতা নিয়ে বসে আছে। বরং যাদের ন্যূনতম ক্ষমতা আছে, তারা সরকারি দলের অনুগ্রহ পিপাসু। ছোট একটা পদ বা যেকোনো প্রকারে নির্বাচিত প্রতিনিধি হতে পারলে বিপুল অর্থ সমাগম হয়। তাদের সম্পর্কে পত্রপত্রিকায় প্রতিদিনই উত্থানের ইতিহাস প্রকাশিত হচ্ছে। কদর্যময় সেই ইতিহাসের মধ্যে রয়েছে ঠিকাদার, বালুখেকো ও ভূমিদস্যুদের জীবনী। মানুষ চোখের সামনে তাদের বিলাসবহুল জীবন যাপন দেখছে, অর্থ পাচারের ঘটনাগুলো নিয়ে আলোচনাও চলছে। কিন্তু সেখানেও কোনো কার্যকারিতা লক্ষ করা যাচ্ছে না।
ফেসবুকের পোস্টে দেখলাম, এক ভদ্রলোক লিখেছেন, যখন কোনো জিনিসের দাম বাড়ে, তখন তিনি ওই জিনিস খাওয়া বন্ধ করে দেন। তারপর যখন ওই পণ্যে পচন ধরা দেয়, দাম কমতে থাকে, তখন সেটা তিনি কেনেন। এভাবেই সাশ্রয়ী তত্ত্বে তিনি বেঁচে থাকেন। বাঙালি সাশ্রয় করে নিজেকে কষ্ট দেয়, অধিকার প্রয়োগ করতে অক্ষম; বরং মেনে নেওয়াকে একটি অমোঘ সত্য হিসেবে ধরে নিয়েছে। তবু ঈদযাত্রায় সে প্রাণ দেবে, ঘরে ফিরতেই হবে—পরিবার নিয়ে ভীষণ কষ্ট করে বাড়ি যাবে এবং ফিরে আসবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে ঘরে বসে হাহাকার করবে, কিন্তু কোনো সংঘবদ্ধ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হবে না, এই পরিস্থিতিতে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখে আর কত দিন?
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

পৃথিবীর কোথাও কোনো উৎসবে এ রকম লক্ষ-কোটি মানুষ বাড়ি ফেরে কি না, আমার জানা নেই। তা-ও একা নয়, সপরিবারে। ট্রেন, বাস, লঞ্চে উঠছে মানুষ, শুধু মানুষ। দুটি ঈদে একই অবস্থা। আসলে এ হচ্ছে ফেরা। ঘরে ফেরা শুধু নয়, শিকড়ে ফেরা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে, এমনকি পাশের দেশের বাঙালিরা বড় কোনো ছুটি পেলে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। যাদের সামর্থ্য আছে তারা কাশ্মীর, হিমালয়, সিমলা ঘুরে আসে আর যারা অত দূর যেতে পারে না, তাদের জন্য নিদেনপক্ষে দীঘা হলেও হয়। কিন্তু গ্রামে যাওয়ার ব্যাপারটা নেই। তারপর খরচের দিকেও কোনো নজর থাকে না। বেতন-বোনাস নিঃশেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত টনক নড়ছে না। পরবর্তী মাসগুলোতে বেশ কষ্ট। তবু তোয়াক্কা নেই।
রাজধানী শহর অথবা বড় শহরগুলোতে মানুষের নিতান্তই জীবিকার জন্য থাকা, কিন্তু আসল ঘর ওই গ্রামেই। আজকাল অবশ্য গ্রামগুলো দিন দিন শহরের চেহারা নিচ্ছে। তবুও একটা প্রাচীন অথবা নতুন বাজার আছে। চায়ের দোকান, দোকানে আবার অনবরত টেলিভিশন চলছে। এখন আলোচনার বিষয়বস্তু সব জায়গাতেই আগামী নির্বাচন। নির্বাচনই একমাত্র গণতন্ত্র, একমাত্র রাজনীতি।
যা-ই হোক, যে উত্তেজনা শুরু হয় ঈদের ছুটির আগ থেকে, তা পাঁচ-ছয় দিনের মাথায় কাজে ফেরার মধ্য দিয়ে স্তিমিত হতে থাকে। এবার ঘরে ফেরার বিষয়টি দেখা যাক। আমার এক বন্ধু প্রতি ঈদেই গ্রামে যায়। তার গ্রামটাও বেশি দূরে নয়, ঢাকা থেকে সব মিলে একেবারে ঘর পর্যন্ত ১৪০ কিলোমিটার। যেতে হয় তাকে বাসে, বাস ছাড়ে মহাখালী থেকে। এবার প্রবল বৃষ্টি। তাই খুব ভোরে যাওয়া সম্ভব হয়নি। একটু দেরিতেই যাত্রা শুরু করতে হয়েছিল। সঙ্গের ভাইটিরও নানা কারণেই দেরি হয়ে গেল। বেলা ১২টার দিকে মহাখালীতে গাড়ির প্রবল জটলা। এর মধ্যে জানা গেল দ্রুতগামী বাসগুলোতে টিকিট নেই। লোকাল বাসে যেতে হবে। গাড়ি নেই, তবে বেলা ২টার আগে আসার সম্ভাবনা নেই। অগত্যা অপেক্ষা। বসার জায়গা নেই, দাঁড়িয়ে, হাঁটাহাঁটি করে কালক্ষেপণ। ২টার বাস আসতে আসতে আরও দেরি হয়ে গেল। স্বাভাবিক দিনগুলোতে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের ভাড়া দুই শ টাকা। ঈদের সময় সেই ভাড়া গিয়ে দাঁড়ায় পাঁচ শ টাকায়। কিন্তু মহাখালী থেকে গাড়ি বের হওয়ার পরেই এই ভাড়া বাড়তে শুরু করে। চৌরাস্তা থেকে ভাড়া বেড়ে গিয়ে এক হাজার টাকা পর্যন্ত ওঠে এবং কোনো রকম বসার সিটের নিশ্চয়তা ছাড়া। ছোট ছোট মোড়া বসিয়ে দেয় সিটের ফাঁকে ফাঁকে। এরপর ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে সপরিবারে বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা আছে, সেখানেও ভাড়া পাঁচ শ টাকা। লোকাল বাসগুলো পারলে প্রতিটি গ্রামেই থামে, মহাখালী থেকে রওনা দিয়ে ময়মনসিংহ গিয়ে পৌঁছায় রাত ১০টায়। সেখান থেকে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার দূরে বাড়িতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত প্রায় ১২টা বেজে যায়।
এ তো গেল কাছাকাছি দূরত্বের কথা। কিন্তু যাদের বাড়ি প্রান্তিক জেলায়, অর্থাৎ পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও কিংবা দিনাজপুর, তাদের এই ভোগান্তির কোনো শেষ নেই। ফিরতি পথেও সমস্যা একই রকম, তবু ঘরে ফেরা চাই। শেষ পর্যন্ত অনেকেরই বাড়ি ফেরা হয় না, দুর্ঘটনায় মৃত্যু এমনিতেই নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা আর ঈদের সময় তো কথাই নেই। আগে যাত্রীরা ট্রেনের ছাদের ওপর উঠে যেত। গত বছর এবং এ বছর এ রকমটা দেখা যায়নি। সরকার বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে কিন্তু পরিস্থিতির এমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।
তবে এবার যেসব জায়গায় রাস্তা প্রশস্ত হয়েছে, সেই সব জায়গায় অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। এই যে ঈদের সময় দ্রব্যমূল্য, পরিবহন খরচের বাড়াবাড়ি, এতে একটি কথা খুবই চালু হয়েছে, তা হলো—সিন্ডিকেট। বাসের মালিক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা সবাই মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। আমরা সিন্ডিকেটকে জেনেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে, যেখানে শিক্ষা, নিয়োগ সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিষয়ক বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই সিন্ডিকেটের প্রয়োগ এখন সর্বত্র। একেবারে নিম্নবিত্ত, খেটে খাওয়া মানুষও কথায় কথায় সিন্ডিকেট শব্দটি ব্যবহার করে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গণবিরোধী কোনো তৎপরতাকেও সিন্ডিকেট বলা হয়।
সিন্ডিকেট এখন রিকশাওয়ালাদের ভাড়া নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়। সেই সঙ্গে সিএনজি, বাস, লঞ্চ ইত্যাদির ভাড়ার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে ঐক্য প্রচেষ্টাকে সিন্ডিকেট বলে অভিহিত করা হয়, দ্রব্যমূল্যের ক্ষেত্রে তো আছেই। এই সিন্ডিকেটের হোতারা একটি উদ্দেশ্যেই নিবেদিত তা হলো, দ্রুত টাকা উপার্জন এবং তার জন্য সবচেয়ে মোক্ষম সময় হলো ঈদ। কল্পনা করা যায় যে কাঁচা মরিচের কেজি হাজার টাকা হয়ে গেল আবার তা দ্রুতই দেড় শ টাকায় নেমে এল! বাঙালির খাদ্যে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ লাগেই, কাজেই এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা সহজ। কী অদ্ভুত ব্যাপার, ভারতীয় সীমান্তে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজের আমদানি করা ট্রাক ঢুকছে শুনেই দাম কমে যাচ্ছে। আবার যাত্রী চলাচল কমে গেলে আগের ভাড়ায় ফিরে যায়। আগের ভাড়া ও দ্রব্যমূল্যও কম নয়, যা সিন্ডিকেটেরই অবদান।
আমাদের সংসদে এই সিন্ডিকেট নিয়ে বহুবার আলোচনা হয়েছে। সরকারি দলের সদস্যরা বলছেন যে সবই তাঁদের মন্ত্রীদের কারবার, তাঁরা নিজেরাও এর সঙ্গে জড়িত থাকেন। এ কথাও বলছেন যে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী এবং বর্তমান বাণিজ্যমন্ত্রী এই সিন্ডিকেট সম্পর্কে শুধু অবহিতই নন, জড়িত। কারণ দুজনই ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীরা কখনো নিজের স্বার্থ ভুলে গিয়ে জনগণের স্বার্থ দেখবেন, এটা আশা করা যায় না। জনগণের একটা অংশ যদিও তা সংখ্যালঘিষ্ঠ, তাদের পক্ষে যেকোনো পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্য সহনীয়। তারা যেভাবে আয় করে, সেভাবেই তারা ব্যয় করে থাকে। অতএব এ ক্ষেত্রে তাদের কিছুই গায়ে লাগে না। উপজেলা থেকে খোদ সচিবালয় পর্যন্ত আমলা ও সহযোগীদের কোনো অসুবিধা হয় না। একটি মাস যদি শুধু বেতনের অর্থে তাদের চলতে হয় (এমনকি বেতন দ্বিগুণ হওয়ার পরেও), তাহলে তারা বুঝতে পারত মানুষ কী অবস্থায় আছে।
মন্ত্রী-রাজনীতিবিদদের ব্যাপারেও একই কথা প্রযোজ্য। রাজনৈতিক দলগুলোতে প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে শুধুই নির্বাচন। দ্রব্যমূল্য, পরিবহন ব্যয়, স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে নৈরাজ্য—এসব তাদের কর্মসূচির মধ্যে নেই। ক্ষীণ কণ্ঠে মাঝে মাঝে বাম দলগুলো এসব কথা বলে থাকে, কিন্তু তাদেরও তৃণমূল পর্যায়ে কোনো কাজকর্ম নেই। ফলে সরকার প্রতিবাদহীন অবস্থায় খুব সুখে দেশ চালিয়ে যাচ্ছে। দুদক, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে বরাবরই ব্যর্থ হচ্ছে। সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ঘুমিয়েই থাকে।
বর্তমানে খুব ছোটখাটো বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ব্যতীত কোনো কিছু সম্ভব নয়—কলাবাগানের মাঠ বা ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের গাছ কাটা পর্যন্ত। এহেন পরিস্থিতিতে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত সব ব্যবস্থাকে মেনে নিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। কোথাও কোনো প্রতিবাদ নেই; বরং তাদের অভিজ্ঞতায় রয়েছে যে প্রতিবাদ করে কোনো লাভ হয় না। প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মাধ্যমে দিন-রাত এসব কথা বলা হচ্ছে, তাতেও কোনো লাভ হচ্ছে না। কারণ সিন্ডিকেট শুধু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নয়, একেবারে তৃণমূল পর্যায়েও বিরাট ক্ষমতা নিয়ে বসে আছে। বরং যাদের ন্যূনতম ক্ষমতা আছে, তারা সরকারি দলের অনুগ্রহ পিপাসু। ছোট একটা পদ বা যেকোনো প্রকারে নির্বাচিত প্রতিনিধি হতে পারলে বিপুল অর্থ সমাগম হয়। তাদের সম্পর্কে পত্রপত্রিকায় প্রতিদিনই উত্থানের ইতিহাস প্রকাশিত হচ্ছে। কদর্যময় সেই ইতিহাসের মধ্যে রয়েছে ঠিকাদার, বালুখেকো ও ভূমিদস্যুদের জীবনী। মানুষ চোখের সামনে তাদের বিলাসবহুল জীবন যাপন দেখছে, অর্থ পাচারের ঘটনাগুলো নিয়ে আলোচনাও চলছে। কিন্তু সেখানেও কোনো কার্যকারিতা লক্ষ করা যাচ্ছে না।
ফেসবুকের পোস্টে দেখলাম, এক ভদ্রলোক লিখেছেন, যখন কোনো জিনিসের দাম বাড়ে, তখন তিনি ওই জিনিস খাওয়া বন্ধ করে দেন। তারপর যখন ওই পণ্যে পচন ধরা দেয়, দাম কমতে থাকে, তখন সেটা তিনি কেনেন। এভাবেই সাশ্রয়ী তত্ত্বে তিনি বেঁচে থাকেন। বাঙালি সাশ্রয় করে নিজেকে কষ্ট দেয়, অধিকার প্রয়োগ করতে অক্ষম; বরং মেনে নেওয়াকে একটি অমোঘ সত্য হিসেবে ধরে নিয়েছে। তবু ঈদযাত্রায় সে প্রাণ দেবে, ঘরে ফিরতেই হবে—পরিবার নিয়ে ভীষণ কষ্ট করে বাড়ি যাবে এবং ফিরে আসবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে ঘরে বসে হাহাকার করবে, কিন্তু কোনো সংঘবদ্ধ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হবে না, এই পরিস্থিতিতে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখে আর কত দিন?
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব
মামুনুর রশীদ

পৃথিবীর কোথাও কোনো উৎসবে এ রকম লক্ষ-কোটি মানুষ বাড়ি ফেরে কি না, আমার জানা নেই। তা-ও একা নয়, সপরিবারে। ট্রেন, বাস, লঞ্চে উঠছে মানুষ, শুধু মানুষ। দুটি ঈদে একই অবস্থা। আসলে এ হচ্ছে ফেরা। ঘরে ফেরা শুধু নয়, শিকড়ে ফেরা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে, এমনকি পাশের দেশের বাঙালিরা বড় কোনো ছুটি পেলে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। যাদের সামর্থ্য আছে তারা কাশ্মীর, হিমালয়, সিমলা ঘুরে আসে আর যারা অত দূর যেতে পারে না, তাদের জন্য নিদেনপক্ষে দীঘা হলেও হয়। কিন্তু গ্রামে যাওয়ার ব্যাপারটা নেই। তারপর খরচের দিকেও কোনো নজর থাকে না। বেতন-বোনাস নিঃশেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত টনক নড়ছে না। পরবর্তী মাসগুলোতে বেশ কষ্ট। তবু তোয়াক্কা নেই।
রাজধানী শহর অথবা বড় শহরগুলোতে মানুষের নিতান্তই জীবিকার জন্য থাকা, কিন্তু আসল ঘর ওই গ্রামেই। আজকাল অবশ্য গ্রামগুলো দিন দিন শহরের চেহারা নিচ্ছে। তবুও একটা প্রাচীন অথবা নতুন বাজার আছে। চায়ের দোকান, দোকানে আবার অনবরত টেলিভিশন চলছে। এখন আলোচনার বিষয়বস্তু সব জায়গাতেই আগামী নির্বাচন। নির্বাচনই একমাত্র গণতন্ত্র, একমাত্র রাজনীতি।
যা-ই হোক, যে উত্তেজনা শুরু হয় ঈদের ছুটির আগ থেকে, তা পাঁচ-ছয় দিনের মাথায় কাজে ফেরার মধ্য দিয়ে স্তিমিত হতে থাকে। এবার ঘরে ফেরার বিষয়টি দেখা যাক। আমার এক বন্ধু প্রতি ঈদেই গ্রামে যায়। তার গ্রামটাও বেশি দূরে নয়, ঢাকা থেকে সব মিলে একেবারে ঘর পর্যন্ত ১৪০ কিলোমিটার। যেতে হয় তাকে বাসে, বাস ছাড়ে মহাখালী থেকে। এবার প্রবল বৃষ্টি। তাই খুব ভোরে যাওয়া সম্ভব হয়নি। একটু দেরিতেই যাত্রা শুরু করতে হয়েছিল। সঙ্গের ভাইটিরও নানা কারণেই দেরি হয়ে গেল। বেলা ১২টার দিকে মহাখালীতে গাড়ির প্রবল জটলা। এর মধ্যে জানা গেল দ্রুতগামী বাসগুলোতে টিকিট নেই। লোকাল বাসে যেতে হবে। গাড়ি নেই, তবে বেলা ২টার আগে আসার সম্ভাবনা নেই। অগত্যা অপেক্ষা। বসার জায়গা নেই, দাঁড়িয়ে, হাঁটাহাঁটি করে কালক্ষেপণ। ২টার বাস আসতে আসতে আরও দেরি হয়ে গেল। স্বাভাবিক দিনগুলোতে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের ভাড়া দুই শ টাকা। ঈদের সময় সেই ভাড়া গিয়ে দাঁড়ায় পাঁচ শ টাকায়। কিন্তু মহাখালী থেকে গাড়ি বের হওয়ার পরেই এই ভাড়া বাড়তে শুরু করে। চৌরাস্তা থেকে ভাড়া বেড়ে গিয়ে এক হাজার টাকা পর্যন্ত ওঠে এবং কোনো রকম বসার সিটের নিশ্চয়তা ছাড়া। ছোট ছোট মোড়া বসিয়ে দেয় সিটের ফাঁকে ফাঁকে। এরপর ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে সপরিবারে বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা আছে, সেখানেও ভাড়া পাঁচ শ টাকা। লোকাল বাসগুলো পারলে প্রতিটি গ্রামেই থামে, মহাখালী থেকে রওনা দিয়ে ময়মনসিংহ গিয়ে পৌঁছায় রাত ১০টায়। সেখান থেকে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার দূরে বাড়িতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত প্রায় ১২টা বেজে যায়।
এ তো গেল কাছাকাছি দূরত্বের কথা। কিন্তু যাদের বাড়ি প্রান্তিক জেলায়, অর্থাৎ পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও কিংবা দিনাজপুর, তাদের এই ভোগান্তির কোনো শেষ নেই। ফিরতি পথেও সমস্যা একই রকম, তবু ঘরে ফেরা চাই। শেষ পর্যন্ত অনেকেরই বাড়ি ফেরা হয় না, দুর্ঘটনায় মৃত্যু এমনিতেই নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা আর ঈদের সময় তো কথাই নেই। আগে যাত্রীরা ট্রেনের ছাদের ওপর উঠে যেত। গত বছর এবং এ বছর এ রকমটা দেখা যায়নি। সরকার বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে কিন্তু পরিস্থিতির এমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।
তবে এবার যেসব জায়গায় রাস্তা প্রশস্ত হয়েছে, সেই সব জায়গায় অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। এই যে ঈদের সময় দ্রব্যমূল্য, পরিবহন খরচের বাড়াবাড়ি, এতে একটি কথা খুবই চালু হয়েছে, তা হলো—সিন্ডিকেট। বাসের মালিক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা সবাই মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। আমরা সিন্ডিকেটকে জেনেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে, যেখানে শিক্ষা, নিয়োগ সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিষয়ক বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই সিন্ডিকেটের প্রয়োগ এখন সর্বত্র। একেবারে নিম্নবিত্ত, খেটে খাওয়া মানুষও কথায় কথায় সিন্ডিকেট শব্দটি ব্যবহার করে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গণবিরোধী কোনো তৎপরতাকেও সিন্ডিকেট বলা হয়।
সিন্ডিকেট এখন রিকশাওয়ালাদের ভাড়া নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়। সেই সঙ্গে সিএনজি, বাস, লঞ্চ ইত্যাদির ভাড়ার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে ঐক্য প্রচেষ্টাকে সিন্ডিকেট বলে অভিহিত করা হয়, দ্রব্যমূল্যের ক্ষেত্রে তো আছেই। এই সিন্ডিকেটের হোতারা একটি উদ্দেশ্যেই নিবেদিত তা হলো, দ্রুত টাকা উপার্জন এবং তার জন্য সবচেয়ে মোক্ষম সময় হলো ঈদ। কল্পনা করা যায় যে কাঁচা মরিচের কেজি হাজার টাকা হয়ে গেল আবার তা দ্রুতই দেড় শ টাকায় নেমে এল! বাঙালির খাদ্যে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ লাগেই, কাজেই এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা সহজ। কী অদ্ভুত ব্যাপার, ভারতীয় সীমান্তে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজের আমদানি করা ট্রাক ঢুকছে শুনেই দাম কমে যাচ্ছে। আবার যাত্রী চলাচল কমে গেলে আগের ভাড়ায় ফিরে যায়। আগের ভাড়া ও দ্রব্যমূল্যও কম নয়, যা সিন্ডিকেটেরই অবদান।
আমাদের সংসদে এই সিন্ডিকেট নিয়ে বহুবার আলোচনা হয়েছে। সরকারি দলের সদস্যরা বলছেন যে সবই তাঁদের মন্ত্রীদের কারবার, তাঁরা নিজেরাও এর সঙ্গে জড়িত থাকেন। এ কথাও বলছেন যে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী এবং বর্তমান বাণিজ্যমন্ত্রী এই সিন্ডিকেট সম্পর্কে শুধু অবহিতই নন, জড়িত। কারণ দুজনই ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীরা কখনো নিজের স্বার্থ ভুলে গিয়ে জনগণের স্বার্থ দেখবেন, এটা আশা করা যায় না। জনগণের একটা অংশ যদিও তা সংখ্যালঘিষ্ঠ, তাদের পক্ষে যেকোনো পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্য সহনীয়। তারা যেভাবে আয় করে, সেভাবেই তারা ব্যয় করে থাকে। অতএব এ ক্ষেত্রে তাদের কিছুই গায়ে লাগে না। উপজেলা থেকে খোদ সচিবালয় পর্যন্ত আমলা ও সহযোগীদের কোনো অসুবিধা হয় না। একটি মাস যদি শুধু বেতনের অর্থে তাদের চলতে হয় (এমনকি বেতন দ্বিগুণ হওয়ার পরেও), তাহলে তারা বুঝতে পারত মানুষ কী অবস্থায় আছে।
মন্ত্রী-রাজনীতিবিদদের ব্যাপারেও একই কথা প্রযোজ্য। রাজনৈতিক দলগুলোতে প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে শুধুই নির্বাচন। দ্রব্যমূল্য, পরিবহন ব্যয়, স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে নৈরাজ্য—এসব তাদের কর্মসূচির মধ্যে নেই। ক্ষীণ কণ্ঠে মাঝে মাঝে বাম দলগুলো এসব কথা বলে থাকে, কিন্তু তাদেরও তৃণমূল পর্যায়ে কোনো কাজকর্ম নেই। ফলে সরকার প্রতিবাদহীন অবস্থায় খুব সুখে দেশ চালিয়ে যাচ্ছে। দুদক, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে বরাবরই ব্যর্থ হচ্ছে। সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ঘুমিয়েই থাকে।
বর্তমানে খুব ছোটখাটো বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ব্যতীত কোনো কিছু সম্ভব নয়—কলাবাগানের মাঠ বা ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের গাছ কাটা পর্যন্ত। এহেন পরিস্থিতিতে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত সব ব্যবস্থাকে মেনে নিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। কোথাও কোনো প্রতিবাদ নেই; বরং তাদের অভিজ্ঞতায় রয়েছে যে প্রতিবাদ করে কোনো লাভ হয় না। প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মাধ্যমে দিন-রাত এসব কথা বলা হচ্ছে, তাতেও কোনো লাভ হচ্ছে না। কারণ সিন্ডিকেট শুধু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নয়, একেবারে তৃণমূল পর্যায়েও বিরাট ক্ষমতা নিয়ে বসে আছে। বরং যাদের ন্যূনতম ক্ষমতা আছে, তারা সরকারি দলের অনুগ্রহ পিপাসু। ছোট একটা পদ বা যেকোনো প্রকারে নির্বাচিত প্রতিনিধি হতে পারলে বিপুল অর্থ সমাগম হয়। তাদের সম্পর্কে পত্রপত্রিকায় প্রতিদিনই উত্থানের ইতিহাস প্রকাশিত হচ্ছে। কদর্যময় সেই ইতিহাসের মধ্যে রয়েছে ঠিকাদার, বালুখেকো ও ভূমিদস্যুদের জীবনী। মানুষ চোখের সামনে তাদের বিলাসবহুল জীবন যাপন দেখছে, অর্থ পাচারের ঘটনাগুলো নিয়ে আলোচনাও চলছে। কিন্তু সেখানেও কোনো কার্যকারিতা লক্ষ করা যাচ্ছে না।
ফেসবুকের পোস্টে দেখলাম, এক ভদ্রলোক লিখেছেন, যখন কোনো জিনিসের দাম বাড়ে, তখন তিনি ওই জিনিস খাওয়া বন্ধ করে দেন। তারপর যখন ওই পণ্যে পচন ধরা দেয়, দাম কমতে থাকে, তখন সেটা তিনি কেনেন। এভাবেই সাশ্রয়ী তত্ত্বে তিনি বেঁচে থাকেন। বাঙালি সাশ্রয় করে নিজেকে কষ্ট দেয়, অধিকার প্রয়োগ করতে অক্ষম; বরং মেনে নেওয়াকে একটি অমোঘ সত্য হিসেবে ধরে নিয়েছে। তবু ঈদযাত্রায় সে প্রাণ দেবে, ঘরে ফিরতেই হবে—পরিবার নিয়ে ভীষণ কষ্ট করে বাড়ি যাবে এবং ফিরে আসবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে ঘরে বসে হাহাকার করবে, কিন্তু কোনো সংঘবদ্ধ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হবে না, এই পরিস্থিতিতে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখে আর কত দিন?
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

পৃথিবীর কোথাও কোনো উৎসবে এ রকম লক্ষ-কোটি মানুষ বাড়ি ফেরে কি না, আমার জানা নেই। তা-ও একা নয়, সপরিবারে। ট্রেন, বাস, লঞ্চে উঠছে মানুষ, শুধু মানুষ। দুটি ঈদে একই অবস্থা। আসলে এ হচ্ছে ফেরা। ঘরে ফেরা শুধু নয়, শিকড়ে ফেরা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে, এমনকি পাশের দেশের বাঙালিরা বড় কোনো ছুটি পেলে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ে। যাদের সামর্থ্য আছে তারা কাশ্মীর, হিমালয়, সিমলা ঘুরে আসে আর যারা অত দূর যেতে পারে না, তাদের জন্য নিদেনপক্ষে দীঘা হলেও হয়। কিন্তু গ্রামে যাওয়ার ব্যাপারটা নেই। তারপর খরচের দিকেও কোনো নজর থাকে না। বেতন-বোনাস নিঃশেষ হওয়ার আগে পর্যন্ত টনক নড়ছে না। পরবর্তী মাসগুলোতে বেশ কষ্ট। তবু তোয়াক্কা নেই।
রাজধানী শহর অথবা বড় শহরগুলোতে মানুষের নিতান্তই জীবিকার জন্য থাকা, কিন্তু আসল ঘর ওই গ্রামেই। আজকাল অবশ্য গ্রামগুলো দিন দিন শহরের চেহারা নিচ্ছে। তবুও একটা প্রাচীন অথবা নতুন বাজার আছে। চায়ের দোকান, দোকানে আবার অনবরত টেলিভিশন চলছে। এখন আলোচনার বিষয়বস্তু সব জায়গাতেই আগামী নির্বাচন। নির্বাচনই একমাত্র গণতন্ত্র, একমাত্র রাজনীতি।
যা-ই হোক, যে উত্তেজনা শুরু হয় ঈদের ছুটির আগ থেকে, তা পাঁচ-ছয় দিনের মাথায় কাজে ফেরার মধ্য দিয়ে স্তিমিত হতে থাকে। এবার ঘরে ফেরার বিষয়টি দেখা যাক। আমার এক বন্ধু প্রতি ঈদেই গ্রামে যায়। তার গ্রামটাও বেশি দূরে নয়, ঢাকা থেকে সব মিলে একেবারে ঘর পর্যন্ত ১৪০ কিলোমিটার। যেতে হয় তাকে বাসে, বাস ছাড়ে মহাখালী থেকে। এবার প্রবল বৃষ্টি। তাই খুব ভোরে যাওয়া সম্ভব হয়নি। একটু দেরিতেই যাত্রা শুরু করতে হয়েছিল। সঙ্গের ভাইটিরও নানা কারণেই দেরি হয়ে গেল। বেলা ১২টার দিকে মহাখালীতে গাড়ির প্রবল জটলা। এর মধ্যে জানা গেল দ্রুতগামী বাসগুলোতে টিকিট নেই। লোকাল বাসে যেতে হবে। গাড়ি নেই, তবে বেলা ২টার আগে আসার সম্ভাবনা নেই। অগত্যা অপেক্ষা। বসার জায়গা নেই, দাঁড়িয়ে, হাঁটাহাঁটি করে কালক্ষেপণ। ২টার বাস আসতে আসতে আরও দেরি হয়ে গেল। স্বাভাবিক দিনগুলোতে ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের ভাড়া দুই শ টাকা। ঈদের সময় সেই ভাড়া গিয়ে দাঁড়ায় পাঁচ শ টাকায়। কিন্তু মহাখালী থেকে গাড়ি বের হওয়ার পরেই এই ভাড়া বাড়তে শুরু করে। চৌরাস্তা থেকে ভাড়া বেড়ে গিয়ে এক হাজার টাকা পর্যন্ত ওঠে এবং কোনো রকম বসার সিটের নিশ্চয়তা ছাড়া। ছোট ছোট মোড়া বসিয়ে দেয় সিটের ফাঁকে ফাঁকে। এরপর ট্রাক ও পিকআপ ভ্যানে সপরিবারে বাড়ি যাওয়ার ব্যবস্থা আছে, সেখানেও ভাড়া পাঁচ শ টাকা। লোকাল বাসগুলো পারলে প্রতিটি গ্রামেই থামে, মহাখালী থেকে রওনা দিয়ে ময়মনসিংহ গিয়ে পৌঁছায় রাত ১০টায়। সেখান থেকে প্রায় চল্লিশ কিলোমিটার দূরে বাড়িতে পৌঁছাতে পৌঁছাতে রাত প্রায় ১২টা বেজে যায়।
এ তো গেল কাছাকাছি দূরত্বের কথা। কিন্তু যাদের বাড়ি প্রান্তিক জেলায়, অর্থাৎ পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও কিংবা দিনাজপুর, তাদের এই ভোগান্তির কোনো শেষ নেই। ফিরতি পথেও সমস্যা একই রকম, তবু ঘরে ফেরা চাই। শেষ পর্যন্ত অনেকেরই বাড়ি ফেরা হয় না, দুর্ঘটনায় মৃত্যু এমনিতেই নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা আর ঈদের সময় তো কথাই নেই। আগে যাত্রীরা ট্রেনের ছাদের ওপর উঠে যেত। গত বছর এবং এ বছর এ রকমটা দেখা যায়নি। সরকার বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছে কিন্তু পরিস্থিতির এমন কোনো পরিবর্তন হয়নি।
তবে এবার যেসব জায়গায় রাস্তা প্রশস্ত হয়েছে, সেই সব জায়গায় অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। এই যে ঈদের সময় দ্রব্যমূল্য, পরিবহন খরচের বাড়াবাড়ি, এতে একটি কথা খুবই চালু হয়েছে, তা হলো—সিন্ডিকেট। বাসের মালিক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতা সবাই মিলে একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। আমরা সিন্ডিকেটকে জেনেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে, যেখানে শিক্ষা, নিয়োগ সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিষয়ক বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেই সিন্ডিকেটের প্রয়োগ এখন সর্বত্র। একেবারে নিম্নবিত্ত, খেটে খাওয়া মানুষও কথায় কথায় সিন্ডিকেট শব্দটি ব্যবহার করে থাকে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে গণবিরোধী কোনো তৎপরতাকেও সিন্ডিকেট বলা হয়।
সিন্ডিকেট এখন রিকশাওয়ালাদের ভাড়া নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়। সেই সঙ্গে সিএনজি, বাস, লঞ্চ ইত্যাদির ভাড়ার ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে ঐক্য প্রচেষ্টাকে সিন্ডিকেট বলে অভিহিত করা হয়, দ্রব্যমূল্যের ক্ষেত্রে তো আছেই। এই সিন্ডিকেটের হোতারা একটি উদ্দেশ্যেই নিবেদিত তা হলো, দ্রুত টাকা উপার্জন এবং তার জন্য সবচেয়ে মোক্ষম সময় হলো ঈদ। কল্পনা করা যায় যে কাঁচা মরিচের কেজি হাজার টাকা হয়ে গেল আবার তা দ্রুতই দেড় শ টাকায় নেমে এল! বাঙালির খাদ্যে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ লাগেই, কাজেই এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা সহজ। কী অদ্ভুত ব্যাপার, ভারতীয় সীমান্তে কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজের আমদানি করা ট্রাক ঢুকছে শুনেই দাম কমে যাচ্ছে। আবার যাত্রী চলাচল কমে গেলে আগের ভাড়ায় ফিরে যায়। আগের ভাড়া ও দ্রব্যমূল্যও কম নয়, যা সিন্ডিকেটেরই অবদান।
আমাদের সংসদে এই সিন্ডিকেট নিয়ে বহুবার আলোচনা হয়েছে। সরকারি দলের সদস্যরা বলছেন যে সবই তাঁদের মন্ত্রীদের কারবার, তাঁরা নিজেরাও এর সঙ্গে জড়িত থাকেন। এ কথাও বলছেন যে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী এবং বর্তমান বাণিজ্যমন্ত্রী এই সিন্ডিকেট সম্পর্কে শুধু অবহিতই নন, জড়িত। কারণ দুজনই ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীরা কখনো নিজের স্বার্থ ভুলে গিয়ে জনগণের স্বার্থ দেখবেন, এটা আশা করা যায় না। জনগণের একটা অংশ যদিও তা সংখ্যালঘিষ্ঠ, তাদের পক্ষে যেকোনো পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্য সহনীয়। তারা যেভাবে আয় করে, সেভাবেই তারা ব্যয় করে থাকে। অতএব এ ক্ষেত্রে তাদের কিছুই গায়ে লাগে না। উপজেলা থেকে খোদ সচিবালয় পর্যন্ত আমলা ও সহযোগীদের কোনো অসুবিধা হয় না। একটি মাস যদি শুধু বেতনের অর্থে তাদের চলতে হয় (এমনকি বেতন দ্বিগুণ হওয়ার পরেও), তাহলে তারা বুঝতে পারত মানুষ কী অবস্থায় আছে।
মন্ত্রী-রাজনীতিবিদদের ব্যাপারেও একই কথা প্রযোজ্য। রাজনৈতিক দলগুলোতে প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে শুধুই নির্বাচন। দ্রব্যমূল্য, পরিবহন ব্যয়, স্বাস্থ্যব্যবস্থা এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে নৈরাজ্য—এসব তাদের কর্মসূচির মধ্যে নেই। ক্ষীণ কণ্ঠে মাঝে মাঝে বাম দলগুলো এসব কথা বলে থাকে, কিন্তু তাদেরও তৃণমূল পর্যায়ে কোনো কাজকর্ম নেই। ফলে সরকার প্রতিবাদহীন অবস্থায় খুব সুখে দেশ চালিয়ে যাচ্ছে। দুদক, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে বরাবরই ব্যর্থ হচ্ছে। সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা ঘুমিয়েই থাকে।
বর্তমানে খুব ছোটখাটো বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ব্যতীত কোনো কিছু সম্ভব নয়—কলাবাগানের মাঠ বা ধানমন্ডির সাতমসজিদ রোডের গাছ কাটা পর্যন্ত। এহেন পরিস্থিতিতে শিক্ষিত মধ্যবিত্ত এবং নিম্নমধ্যবিত্ত সব ব্যবস্থাকে মেনে নিতে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। কোথাও কোনো প্রতিবাদ নেই; বরং তাদের অভিজ্ঞতায় রয়েছে যে প্রতিবাদ করে কোনো লাভ হয় না। প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রনিক মাধ্যমে দিন-রাত এসব কথা বলা হচ্ছে, তাতেও কোনো লাভ হচ্ছে না। কারণ সিন্ডিকেট শুধু রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে নয়, একেবারে তৃণমূল পর্যায়েও বিরাট ক্ষমতা নিয়ে বসে আছে। বরং যাদের ন্যূনতম ক্ষমতা আছে, তারা সরকারি দলের অনুগ্রহ পিপাসু। ছোট একটা পদ বা যেকোনো প্রকারে নির্বাচিত প্রতিনিধি হতে পারলে বিপুল অর্থ সমাগম হয়। তাদের সম্পর্কে পত্রপত্রিকায় প্রতিদিনই উত্থানের ইতিহাস প্রকাশিত হচ্ছে। কদর্যময় সেই ইতিহাসের মধ্যে রয়েছে ঠিকাদার, বালুখেকো ও ভূমিদস্যুদের জীবনী। মানুষ চোখের সামনে তাদের বিলাসবহুল জীবন যাপন দেখছে, অর্থ পাচারের ঘটনাগুলো নিয়ে আলোচনাও চলছে। কিন্তু সেখানেও কোনো কার্যকারিতা লক্ষ করা যাচ্ছে না।
ফেসবুকের পোস্টে দেখলাম, এক ভদ্রলোক লিখেছেন, যখন কোনো জিনিসের দাম বাড়ে, তখন তিনি ওই জিনিস খাওয়া বন্ধ করে দেন। তারপর যখন ওই পণ্যে পচন ধরা দেয়, দাম কমতে থাকে, তখন সেটা তিনি কেনেন। এভাবেই সাশ্রয়ী তত্ত্বে তিনি বেঁচে থাকেন। বাঙালি সাশ্রয় করে নিজেকে কষ্ট দেয়, অধিকার প্রয়োগ করতে অক্ষম; বরং মেনে নেওয়াকে একটি অমোঘ সত্য হিসেবে ধরে নিয়েছে। তবু ঈদযাত্রায় সে প্রাণ দেবে, ঘরে ফিরতেই হবে—পরিবার নিয়ে ভীষণ কষ্ট করে বাড়ি যাবে এবং ফিরে আসবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে ঘরে বসে হাহাকার করবে, কিন্তু কোনো সংঘবদ্ধ আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হবে না, এই পরিস্থিতিতে শুধু চেয়ে চেয়ে দেখে আর কত দিন?
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫বাসস, ঢাকা

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
আজ সোমবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) মো. আলমগীরের জেরা শুরু করেন রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী আমীর হোসেন। আইনজীবী আমীর হোসেন পলাতক আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে শুনানি করছেন। এর আগে গত মঙ্গলবার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরের সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়।
এই মামলার শুনানিতে এর আগে গণ-অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রতীক শহীদ আবু সাঈদের বাবাসহ স্বজনহারা পরিবারের একাধিক সদস্য সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ ছাড়া মামলার গুরুত্বপূর্ণ ‘স্টার উইটনেস’ হিসেবে সাক্ষ্য দেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক এবং জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতৃত্বদানকারী নাহিদ ইসলাম এবং দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তাদের দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করে বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
পরবর্তীকালে, এই মামলার অন্যতম আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে রাজসাক্ষী (অ্যাপ্রোভার) হওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেন। ট্রাইব্যুনাল তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে তিনি রাজসাক্ষী হিসেবে এই মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মামলার প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এসএইচ তামিম। শুনানিতে তাঁদের সঙ্গে অপর প্রসিকিউটররাও উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের পক্ষে আছেন আইনজীবী যায়েদ বিন আমজাদ।
মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলা ছাড়াও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা বিচারাধীন। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অন্য মামলাটি হলো রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ড নিয়ে। এই তিনটি মামলার বিচারকাজই বর্তমানে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান।

পৃথিবীর কোথাও কোনো উৎসবে এ রকম লক্ষ-কোটি মানুষ বাড়ি ফেরে কি না, আমার জানা নেই। তা-ও একা নয়, সপরিবারে। ট্রেন, বাস, লঞ্চে উঠছে মানুষ, শুধু মানুষ। দুটি ঈদে একই অবস্থা। আসলে এ হচ্ছে ফেরা। ঘরে ফেরা শুধু নয়, শিকড়ে ফেরা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে, এমনকি পাশের দেশের বাঙালিরা বড় কোনো ছুটি
০৬ জুলাই ২০২৩
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর সঙ্গে।
মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন, মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ ও টেকসই মৎস্য আহরণের জন্য সমুদ্রে সব ধরনের মাছ শিকার ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা গতকাল বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। তাই গতকাল দিনভর ছিল উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে ব্যস্ততা। অনেকে দেখে নিচ্ছিলেন ট্রলার ঠিকঠাক আছে কি না, কেউ জালের ছেঁড়া অংশ সেলাই করছিলেন, কেউ আবার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রীসহ অন্য সরঞ্জাম গুছিয়ে নিচ্ছিলেন।
বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং ফকিরহাট উপ-মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গতকাল শত শত ট্রলার নোঙর করে রাখা ছিল। জেলেদের উপস্থিতিতে ঘাট এলাকা সরগরম হয়ে ওঠে। ফকিরহাটের মুদি-মনিহারি দোকানগুলোতে জেলেরা কেনাকাটা করতে ভিড় জমান। ফকিরহাট এলাকার বিসমিল্লাহ ট্রলারের মাঝি রহিম মিয়া বলেন, ‘সাগরে মাছ শিকারে যেতে সকল প্রস্তুতি নিয়েছি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষ হওয়ামাত্রই সাগরে নামব।’
জেলে নুরসাইদ ও ফোরকান মিয়া বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে কেটেছে। ওই সময়ে বেশ টাকা ঋণ করেছি। এখন সাগরে যাব। দেখি আল্লাহ ঋণ পরিশোধ করতে দেন কি না।’
নোয়াখালীর হাতিয়ার সূর্যমুখী, বাংলাবাজার, কাজিরবাজার, পাইতান মার্কেট চেয়ারম্যান ঘাটসহ বেশ কয়েকটি ঘাটে গতকাল জেলেদের ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে। অনেকে নৌকায় জাল তুলছিলেন, আবার অনেকে জ্বালানি তেল মজুতসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ট্রলারে নিয়ে যান। সূর্যমুখী ঘাটের এমভি মায়ের দোয়া ট্রলারের মাঝি জাফর উল্যা বলেন, ‘সাগরে ৮-১০ দিন থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছি। সন্ধ্যায় সাগরের উদ্দেশে রওনা দেব।’
সূর্যমুখী ঘাট জেলে সমিতির সভাপতি জবিয়ল হক বলেন, ‘সাগরে নামতে প্রস্তুত নোয়াখালীর হাতিয়ার ২০টি ঘাটের লক্ষাধিক জেলে। এসব ঘাটে প্রায় ১০ হাজার ছোট-বড় ফিশিং ট্রলার রয়েছে। প্রতি ট্রলারে ১০ জন হলেও লক্ষাধিক জেলে এই মাছ ধরার সঙ্গে জড়িত। তাঁদের সবাই গত ৫৮ দিন তীরে বেকার ছিলেন।’
পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের পার্শ্ববর্তী এলাকার জেলেরা গতকাল দিনভর সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা, খেতাচিড়া, বড়মাছুয়া, ছোটমাছুয়া, ভান্ডারিয়া উপজেলার চরখালী, হেতালিয়া, কাউখালী উপজেলার সোনাকুর এলাকার জেলেরা, সদর উপজেলা এবং নেছারাবাদ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার জেলেরা প্রস্তুতি শেষে গত রাতে বঙ্গোপসাগরে রওনা হন।
কয়েক দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলের জেলেপল্লিগুলোতে নৌকা, জাল মেরামতসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি সেরেছেন জেলেরা। গতকাল মেরিন ড্রাইভের টেকনাফের খুরেরমুখ, সাবরাং ও বাহারছড়া এলাকায় দেখা গেছে, সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা সারি সারি ট্রলারে জাল ও রসদ তোলেন জেলেরা।
একটি ট্রলারের মাঝি আবু তাহের জানান, এবার ভারতের সঙ্গে মিল রেখে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় কেউ সাগরে মাছ শিকারে নামেনি। এতে উপকূলের কাছাকাছি সাগরে জাল ফেললেই ইলিশসহ অন্য মাছ পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
কক্সবাজার শহরের ফিশারি ঘাটের মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী জানান, কক্সবাজার উপকূলে ছোট-বড় ৭ হাজারের মতো যান্ত্রিক ট্রলার রয়েছে। এসব ট্রলারে প্রায় এক লাখ জেলে ও শ্রমিক নিয়োজিত রয়েছেন। অধিকাংশ ট্রলার নিষেধাজ্ঞা ওঠার সঙ্গে সঙ্গে সাগরে রওনা হবে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন বরগুনা ও আমতলী, পিরোজপুর, কক্সবাজার এবং হাতিয়া প্রতিনিধি]

পৃথিবীর কোথাও কোনো উৎসবে এ রকম লক্ষ-কোটি মানুষ বাড়ি ফেরে কি না, আমার জানা নেই। তা-ও একা নয়, সপরিবারে। ট্রেন, বাস, লঞ্চে উঠছে মানুষ, শুধু মানুষ। দুটি ঈদে একই অবস্থা। আসলে এ হচ্ছে ফেরা। ঘরে ফেরা শুধু নয়, শিকড়ে ফেরা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে, এমনকি পাশের দেশের বাঙালিরা বড় কোনো ছুটি
০৬ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
ভারতের নিষেধাজ্ঞার এক দিন পরই গত রোববার লালমনিরহাটের বুড়িমারী ও যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরসহ বিভিন্ন বন্দরে পণ্যের ট্রাক আটকে দেয় ভারত। সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, রোববার ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে বুড়িমারী সীমান্তে প্রাণের ১৭ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকে যায়। এ ছাড়া বেনাপোলে ৩৬টি পোশাক বোঝাই ট্রাকসহ অন্যান্য পণ্যের শতাধিক ট্রাক ঢুকতে পারেনি।
গতকাল সোমবার পর্যন্ত বুড়িমারী থেকে প্রাণের পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলোর অর্ধেকের বেশি ফেরত নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া বেনাপোলে পোর্টের ভেতরে ২৪টি ট্রাক ছাড়া বাকিগুলো ফেরত চলে যায়।
বেনাপোল বন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. সাজেদুর রহমান গতকাল সোমবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, গতকাল পোর্টের ভেতর ও বাইরে শতাধিক ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল। আজ পোর্টের ভেতরের ২৪টি ছাড়া বাকিগুলো ফেরত নিয়ে গেছেন মালিকেরা। এখন পর্যন্ত মনে হচ্ছে, পোর্টের ভেতরের ট্রাকগুলোও ফেরত নিতে হবে।
জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের হাতে ৬ মিলিয়ন ডলারের ক্রয় আদেশ রয়েছে। তার মধ্য থেকে রোববার বুড়িমারী দিয়ে ১৭ ট্রাকবোঝাই পণ্য পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো ঢুকতে পারেনি। ট্রাকগুলো ফেরত আনা হচ্ছে। নতুন করে কাগজপত্র তৈরি করে অন্য পথ দিয়ে পণ্য পাঠাতে হবে।’
বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, ওই ২৪টি ট্রাক পোর্টের ভেতরে থাকায় এখনো তারা ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে। তাদের আশা, যেহেতু নিষেধাজ্ঞার আগে এই পণ্যগুলোর এলসি করা হয়েছিল, তাই এগুলো প্রবেশে অনুমতি পাবে। তবে এটি নির্ভর করবে বাংলাদেশ সরকারের আলোচনার ওপর।
এমন পরিস্থিতিতে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে অনেক রপ্তানিকারক রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) সঙ্গে আলোচনা করে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে আজ মঙ্গলবার আন্তমন্ত্রণালয়ের সভা ডেকেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থলবন্দরের মাধ্যমে পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জসমূহ এবং আশু করণীয় নির্ধারণে বাণিজ্যসচিবের সভাপতিত্বে বিকেল ৪টায় আন্তমন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় নৌপরিবহন ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো, জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ, ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের উপস্থিতির জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
ভারতের শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় গত শনিবার হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। শুধু ভারতের নবসেবা ও কলকাতা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দেশটির আমদানিকারকেরা বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক আমদানি করতে পারবেন বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে ভারতের আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গের চ্যাংড়াবান্দা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশন দিয়ে ফল, ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক পণ্য, সুতা, সুতার উপজাত, আসবাব রপ্তানিও নিষিদ্ধ করা হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
আমদানি ও রপ্তানিসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, দেশের ২৪টি বন্দরের মধ্যে ১৬টি বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়ে থাকে। তবে যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এর পরিমাণ ৮০ শতাংশ। বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ভারতে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়। এর মধ্যে শতাধিক ট্রাক পণ্য থাকে তৈরি পোশাক।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে ভারত। ফলে ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় কোনো দেশে তৈরি পোশাক রপ্তানি করতে পারছে না বাংলাদেশ। অন্যদিকে প্রায় এক মাস আগে ভারত থেকে বেনাপোল, ভোমরা, সোনামসজিদ, বাংলাবান্ধা, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে সুতা আমদানির সুযোগ বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো মোস্তাফিজুর রহমানের মতে, এই পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপে তুলনামূলকভাবে বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বাংলাদেশের ওপর। তাই ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর চেষ্টা অব্যাহত রাখাই সরকারের উচিত বলে মনে করছেন তিনি।
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং ভারতের বিরোধপূর্ণ বিষয়সমূহ মিটিয়ে ফেলতে হবে এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এটাই হবে উভয় দেশের জন্য কল্যাণকর।

পৃথিবীর কোথাও কোনো উৎসবে এ রকম লক্ষ-কোটি মানুষ বাড়ি ফেরে কি না, আমার জানা নেই। তা-ও একা নয়, সপরিবারে। ট্রেন, বাস, লঞ্চে উঠছে মানুষ, শুধু মানুষ। দুটি ঈদে একই অবস্থা। আসলে এ হচ্ছে ফেরা। ঘরে ফেরা শুধু নয়, শিকড়ে ফেরা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে, এমনকি পাশের দেশের বাঙালিরা বড় কোনো ছুটি
০৬ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
০৮ মে ২০২৫
আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

আধুনিক যুগের সবচেয়ে বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর একটি হচ্ছে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষের সঙ্গে সম্পর্কিত ঐতিহাসিক রত্নসম্ভার। গতকাল বুধবার হংকংয়ে বিখ্যাত আর্ট নিলাম কোম্পানি সাদাবি’স-এর এক নিলামে এগুলো তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
১৮৯৮ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ধূলিধূসর টিলা খুঁড়ে পাওয়া মূল্যবান এই রত্নগুলো এক শতাব্দীর বেশি সময় ধরে একটি বেসরকারি ব্রিটিশ সংগ্রহাগারে প্রায় দৃষ্টিচক্ষুর আড়ালে ছিল। এখন যেহেতু রত্নগুলোর হাতবদলের সময় এসেছে, তাই নতুন সংগ্রাহকেরা আগ্রহ নিয়ে এগুলো সংগ্রহের জন্য অপেক্ষা করছেন। কিন্তু এখানে একটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে।
গৌতম বুদ্ধের জন্মস্থান লুম্বিনীর কাছাকাছি, বর্তমানে ভারতের উত্তর প্রদেশে একটি ইটের ঘরের ভেতর থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০টি মুক্তা, রুবি, টোপাজ, নীলা ও নকশা করা সোনার পাত সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে এই রত্নগুলোর সঙ্গে সঙ্গে একটি খোদাই করা পাত্রে হাড়ের টুকরাও পাওয়া যায়, যেগুলোকে গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ বলে শনাক্ত করা হয়। এই আবিষ্কার তখন প্রত্নতত্ত্বের জগতে ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
সাদাবি’স এশিয়ার চেয়ারম্যান নিকোলাস চাউ মনে করেন, স্মরণকালের বিস্ময়কর প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলোর মাঝে এই রত্নসম্ভার অন্যতম। তবে এগুলো নিলামে তোলার কারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। আর তা হচ্ছে—ভারতের ইতিহাসের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে থাকা এবং বৌদ্ধদের কাছে পবিত্র এই সম্পদ বিক্রি করা কি নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য?
১৮৯৮ সালে ব্রিটিশ এস্টেট ম্যানেজার উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপ্পে লুম্বিনির ঠিক দক্ষিণে পিপ্রাওয়ায় অবস্থিত একটি ঢিবি খনন করেন। সেখান থেকেই প্রায় ২ হাজার বছর আগের ওই নির্দশনগুলো খুঁজে পাওয়া যায়।
ইতিহাসবিদদের মতে, প্রাপ্ত রত্নসম্ভার ও দেহাবশেষ, যা তখনো পর্যন্ত অক্ষত ছিল, সেগুলো গৌতম বুদ্ধের শাক্য বংশের এবং বিশ্বব্যাপী বৌদ্ধদের ঐতিহ্য। হাড়ের নিদর্শনগুলো থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা ও মিয়ানমারের মতো দেশগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে। এসব দেশে এখনো সেগুলোর পূজা করা হয়।

পৃথিবীর কোথাও কোনো উৎসবে এ রকম লক্ষ-কোটি মানুষ বাড়ি ফেরে কি না, আমার জানা নেই। তা-ও একা নয়, সপরিবারে। ট্রেন, বাস, লঞ্চে উঠছে মানুষ, শুধু মানুষ। দুটি ঈদে একই অবস্থা। আসলে এ হচ্ছে ফেরা। ঘরে ফেরা শুধু নয়, শিকড়ে ফেরা। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে, এমনকি পাশের দেশের বাঙালিরা বড় কোনো ছুটি
০৬ জুলাই ২০২৩
গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে সর্বশেষ (৫৪ তম) সাক্ষীর জেরা শুরু হয়েছে। এই মামলাটির বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ।
০৬ অক্টোবর ২০২৫
‘দুই দিন আগেই বাড়ি থেকে পাথরঘাটায় চলে এসেছি। এখন পুরোনো জাল সেলাই করছি। এক সপ্তাহের বাজারও করে এনেছি। আজ বিকেলে সাগর মোহনায় যাব, গভীর রাত থেকে জাল ফেলব।’ কথাগুলো বলছিলেন বরগুনা সদরের বাইনচটকী এলাকার জেলে হোসেন আলী। গতকাল বুধবার সকালে বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে কথা হয় তাঁর...
১২ জুন ২০২৫
ভারতের স্থলবন্দর নিষেধাজ্ঞার পর সীমান্তে আটকে থাকা তৈরি পোশাক, খাদ্যসহ বিভিন্ন পণ্যের ট্রাকগুলো ফেরত আনছেন রপ্তানিকারকেরা। তবে যেসব ট্রাক বন্দরে ঢুকে গিয়েছিল, সেগুলো ভারতে প্রবেশ করানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এসব ট্রাক ঢুকতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে।
১৯ মে ২০২৫