Ajker Patrika

পেপিনো মেলন চাষ ডুমুরিয়ায়

গাজী আবদুল কুদ্দুস, ডুমুরিয়া
আপডেট : ১৯ মে ২০২২, ১৪: ২৯
Thumbnail image

অস্ট্রেলিয়ান ফল পেপিনো মেলন। ফলটির চাষ হচ্ছে ডুমুরিয়া উপজেলায়। শখ করে ও কৌতূহল নিয়ে ফলটির চাষ করেছেন রফিকুল ইসলাম শেখ। পাঁচটি গাছ থেকে এখন শতাধিক গাছের বাগান তাঁর। আর গাছে গাছে ঝুলছে পেপিনো মেলন।

পেপিনো মেলন তরমুজ জাতীয় রসালো ফল। আকারে বেশ ছোট। তরমুজ যেখানে ৩-১০ কেজি হয়। পেপিনো মেলন সেখানে হয় আধা থেকে এক কেজি। ফলটি বেশ সুস্বাদু। এতে প্রচুর ঔষধি ও পুষ্টিগুণ রয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তা।

রফিকুল ইসলামের বাড়ি উপজেলার সাহস ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে। বয়স ৫০–এর কাছাকাছি। কৃষি কাজ করে সংসার চললেও তিনি আর দশজন কৃষকের মতো নন। নিত্য নতুন বিভিন্ন ফলের চাষ নিয়ে আগ্রহ আছে তাঁর।

রফিকুল ইসলাম বলেন, ভিন্ন কিছু চাষের আগ্রহ থেকে নিয়মিত কৃষিভিত্তিক ইউটিউব চ্যানেল দেখেন। হঠাৎ একদিন চোখে পড়ে পেপিনো মেলন চাষের পদ্ধতি। অস্ট্রেলিয়ার ফলটি বাংলাদেশের কেউ চাষ করছেন কি না। তা গুগলে খোঁজ করেন। দেখেন নীলফামারীর সেলিম নামের একজন সম্প্রতি এ ফলের চাষ শুরু করেছেন। সেলিম অস্ট্রেলিয়ায় থাকতেন। সেখান থেকে ফেরার সময় কয়েকটি চারা নিয়ে আসেন। সেই চারা থেকেই তিনি পেপিনো মেলন চাষ করেছেন।

সেলিমের সঙ্গে যোগাযোগ করে পাঁচটি চারা কেনেন রফিকুল। কুরিয়ারে সেগুলো খুলনায় পাঠানো হয়। প্রতিটি চারার দাম ছিল ৩০০ টাকা। সেলিমের কাছ থেকে চাষের পদ্ধতিও কিছুটা জেনে নেন। এরপর বাড়ির পেছনের দিকে তা লাগান। একটি চারা মারা গেলেও টিকে যায় বাকি চারটি। দুই মাসের মধ্যেই গাছ গুলো বেশ বড় ও পাতায় ভরে যায়। লতাজাতীয় এ গাছের ডাল কেটে ‘কাটিং’ পদ্ধতিতে চারা উৎপাদনের চেষ্টা করেন। সেখানেও সফল হন তিনি। এরপর ওই চারা থেকে এখন শতাধিক গাছের বাগান তৈরি করেছেন রফিকুল ইসলাম।

ডুমুরিয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে সাহস ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামে রফিকুল ইসলামের বাড়ি। সম্প্রতি সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির পেছন দিকে মাত্র দুই শতক জমিতে চাষ করা হয়েছে পেপিনো মেলনের। গাছে গাছে ঝুলছে সাদা-সবুজ মিশ্রণের পেপিনো মেলন। কোনো গাছ ছোট আবার কোনো গাছ বড়। প্রচুর ফলন হয়েছে। ফলের ভারে যেন গাছগুলো নুয়ে না পড়ে, সে জন্য বেড়ার মতো দিয়ে রাখা হয়েছে।

রফিকুল ইসলাম জানান, ডিসেম্বরের দিকে গাছগুলো লাগিয়েছিলেন। এর ৪৭ দিনের মধ্যে গাছে ফুল আসে। তিন মাসের মধ্যে ফল সংগ্রহের উপযোগী হয়। ফলটি নতুন বলে মানুষের কাছে চাহিদাও কম। এ কারণে প্রতি কেজি ফল ৩০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। তাঁর দেখাদেখি এখন অনেকেই এ ফল চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। রফিকুল ইসলাম ফলের পাশাপাশি গাছের চারা তৈরি করেও বিক্রি করছেন।

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাদ্দেক হোসেন বলেন, এ দেশে পেপিনো মেলন চাষ করা খুবই সহজ ও লাভজনক। এটি চাষ করতে তেমন যত্নের প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় না অধিক জমির। বাড়ির ছাদে অথবা মাঠে সবখানে খুব সহজেই কম পরিশ্রমে পেপিনো মেলন চাষ করা সম্ভব। রোপণের দুই মাসের মধ্যে এর ফলন পাওয়া যায়। ফলটি খুব পুষ্টিকর। এতে ৯৩ শতাংশ পানি। ফলের ভেতরের অংশ খেতে হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত