Ajker Patrika

ঈদের কেনাকাটায় ক্রেতার চাপে খুশি বিক্রেতারা

অর্চি হক, ঢাকা
আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২২, ১২: ৪৩
Thumbnail image

‘মা, এই ভিড়ে আজকে আর কিছু না কিনি। বাসায় চলো।’‘জামাকাপড় বানাইতে দিতে হইবো না? আইজকা না কিন্না উপায় আছে?’

গতকাল রাজধানীর চাঁদনী চক মার্কেটে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের ভিড়ের মধ্য থেকে কানে এল এক নারী ও তাঁর পুত্রের এমন কথোপকথন। এগিয়ে গিয়ে জানা গেল, ওই নারীর নাম ফিরোজা আক্তার, তাঁর ছেলে নাইমুল শুভ্র। মার্কেটে উপচে পড়া ভিড় দেখে ছেলে চাইছে বাসায় ফিরতে। কিন্তু আগেভাগে অর্ডার না দিলে দরজির সিরিয়াল মিলবে না—এই ভয়ে গতকালই কেনাকাটা শেষ করতে চাইছিলেন ফিরোজা।

আজকের পত্রিকাকে ফিরোজা আক্তার বললেন, ‘গত বছর একেবারে শেষ সময়ে কাপড় কেনায় দরজির সিরিয়াল পাইনি। তাই পরিবারের কারও নতুন জামা পরা হয়নি। এবার সেই ভুল করতে চাই না।’

গত দুই বছর করোনাকালীন চাপ এবং বিধিনিষেধের কারণে ফিরোজা আক্তারের মতো অনেকেই প্রাণ খুলে ঈদ উদ্‌যাপন কিংবা কেনাকাটা করতে পারেননি। সেই আক্ষেপ ঘোচাতে এবার আগেভাগেই কেনাকাটা শুরু করেছেন অনেকে। ঈদের দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় বাকি থাকতেই রাজধানীর বিপণিবিতানগুলো হয়ে উঠেছে লোকারণ্য। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে ফুটপাত থেকে শুরু করে ছোট-বড় শপিং মলগুলোতে ছিল ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। সেই ভিড়ের চাপে রাস্তাঘাটেও ছিল তীব্র যানজট।

শুক্রবার বিকেলে মোহাম্মদপুর থেকে নিউমার্কেটে আসা নাসিমা আক্তার জানান, অন্য সময় বাসা থেকে রিকশায় মার্কেটে পৌঁছাতে সর্বোচ্চ আধ ঘণ্টা সময় লাগে তাঁর। কিন্তু গতকাল সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টা।

এমন পরিস্থিতিতে ক্রেতাদের ঘাম ছুটলেও হাসি ফুটেছে বিক্রেতাদের মুখে। নিউমার্কেট এলাকার খান প্লাজা শপিং সেন্টারের বিক্রেতা ফরহাদ হোসেন বললেন, ‘এবার রোজা শুরুর পর থেকে আজ (শুক্রবার) বেশ ভালো বিক্রি হয়েছে। এই দিনের প্রতীক্ষাতেই ছিলাম। গত দুই বছরের লোকসান এবার পুষিয়ে নেওয়া যাবে।’

নিউমার্কেট ও আশপাশের বিপণিবিতান ঘুরে দেখা গেল, দরজির কাছ থেকে যাঁরা ঈদের পোশাক তৈরি করেন, তাঁরা দু-এক দিনের মধ্যেই কেনাকাটা শেষ করতে চাইছেন। কারণ, দেরি হলে দরজির সিরিয়াল পাওয়া যাবে না। তাই মেয়েদের থ্রি-পিস, ছেলেদের শার্ট-প্যান্ট ও পাঞ্জাবির কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। তৈরি পোশাকের দোকানগুলোতে ভিড় কিছুটা কম। জুতা, বেল্ট, গয়নাগাটিসহ আনুষঙ্গিক পণ্যের দোকানগুলো তুলনামূলক ফাঁকা।

ক্রেতার চাপ কম সেসব দোকানে, সেসব দোকানের বিক্রেতারাও খুব একটা নিরাশ নন। গাউছিয়া মার্কেটের সামনের জুতা বিক্রেতা শাহনুর মিয়া বলেন, ‘এখন বিক্রি একটু কম। কিন্তু এক সপ্তাহ পর বেইচা কুলাইতে পারুম না।’

এদিকে জিনিসপত্রের দাম নিয়ে অসন্তুষ্ট বেশির ভাগ ক্রেতা। এলিফ্যান্ট রোডের ইস্টার্ন মল্লিকায় কেনাকাটা করতে আসা শর্মি ইসলাম নামে একজন বললেন, গতবার যে থ্রি-পিস ১৫০০ কাটায় কিনেছি, এবার সেটার দাম চাইছে ২৫০০ টাকা। এমন হলে তো সাধারণ মানুষের জন্য সমস্যা।

এ প্রসঙ্গে নিউমার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন বলেন, সবকিছুর দামই তো এখন আগের চেয়ে বেশি। তাই জামাকাপড়ের দামও বাড়তে পারে। তবে এখনো দাম খুব বেশি বলে তো মনে হচ্ছে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত