Ajker Patrika

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন: আ.লীগে ‘গাজীপুর-আতঙ্ক’

ইয়াহ্ইয়া মারুফ, সিলেট
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন: আ.লীগে ‘গাজীপুর-আতঙ্ক’

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয়ের ভয় তাড়া করছে সিলেটেও। দলীয় প্রার্থীকে বিজয়ী করা নিয়ে নেতা-কর্মীদের কথায়ও মিলছে শঙ্কার সুর। অবশ্য নেতারা বলছেন, গাজীপুরে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ক্যারিশমায় মেয়র হয়েছেন তাঁর মা জায়েদা খাতুন। সিলেটে সে রকম কিছু হবে না, এর পরিবেশও নেই। এখানে ক্যারিশমা দেখানোর মতো কোনো শক্তিশালী প্রার্থীও নেই।

তবে এখন থেকে সাবধান ও সতর্ক না হলে গাজীপুর ফলাফলের প্রতিফলন ঘটার আশঙ্কা করছেন কেউ কেউ। তাঁরা ৩৩ বছর আগে সিলেট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ছয়ফুর রহমান ওরফে ছক্কা ছয়ফুর কীভাবে আওয়ামী লীগ নেতা ইফতেখার হোসেন শামীমকে পরাজিত করেছিলেন, তার উদাহরণ দিচ্ছেন। অস্বাভাবিক ও অভূতপূর্ণ সেই বিজয়ের পর তাঁকে লোকজন ‘ছক্কা ছয়ফুর’ নাম দেন।

গাজীপুরের ফল দেখে সিলেটে উৎফুল্ল জাতীয় পার্টি। দলের প্রার্থী শিল্পপতি নজরুল ইসলাম বাবুলকে নিয়ে ক্যারিশমা দেখানোর চেষ্টা করছে দলটি। কেউ কেউ তাঁর ছক্কা ছয়ফুরের মতো সমর্থন পাওয়ারও প্রত্যাশা করছেন। নির্বাচনে জাপার বাবুলকে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবেও মনে করা হচ্ছে। যদিও তিনি ২০১৮ সালে ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করেও পরাজিত হন।

বিএনপিবিহীন নির্বাচনে বাবুল আওয়ামীবিরোধী বলয়ের সব ভোট পাবেন দাবি করে জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা ও সিসিক নির্বাচনে বাবুলের প্রধান সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, ‘আওয়ামী লীগে বিরাট কোন্দল রয়েছে। এখন আনোয়ারুজ্জামানের সঙ্গে শীর্ষ নেতারাও কম। আর লন্ডনি যাঁরা আসছেন, তাঁরা নিজ নিজ বাড়ির পাশে আনোয়ারুজ্জামানের দোকান খুলেছেন। এ ছাড়া মানুষের তো লাঙ্গল ছাড়া ভোট দেওয়ার জায়গা নাই। বাবুল ক্যারিশমা দেখাবেন।’

তবে গাজীপুরের ফলাফল নিয়ে চিন্তিত নন দাবি করে সিলেট নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সিলেট ও গাজীপুরের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। আমরা সাংগঠনিক কর্মী, দলের নির্দেশনা অনুযায়ী সভাপতি-সম্পাদক প্রতিদিন ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছি। যেহেতু আমাদের প্রার্থীর কোনো ধরনের দুর্বলতা বা বদনাম নাই। পরিচ্ছন্ন মানুষ।’

তবে আবার একটু সাবধানী কথা বললেন মাসুক উদ্দিন, ‘কার ভেতরে কী, এটা তো বুঝা মুশকিল, যদি দলের সব নেতা-কর্মী আন্তরিকভাবে কাজ করেন, এখনো অনেক সময় আছে। আমরা জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী। গাজীপুরের ফলাফল নিয়ে “আতঙ্কের” কিছু নাই, যদি আমাদের দলের কেউ বিশ্বাসঘাতকতা না করেন।’

আলোচনায় সেই আরিফ
দলীয় সিদ্ধান্তে ‘হ্যাট্টিক মিশন’ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) বর্তমান মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ২০ মে ঘোষণা দেন, তিনি ভোটে লড়বেন না। কিন্তু এখনো ঘুরেফিরে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু সেই আরিফ।

আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনে ভোট। এবার ১১ জন মনোনয়নপত্র জমা দিলেও পাঁচজনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। তাঁদের মধ্যে তিনজন প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেছেন। আপিল নিষ্পত্তির পর আগামী ১ জুন প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হবে।

বর্তমানে ছয় মেয়র প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি (জাপা) ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত মেয়র প্রার্থীদেরই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা হচ্ছে। এই তিনজনের মধ্যে গত রোববার সকালে হঠাৎ মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তাঁর বাসায় যান আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এ নিয়ে দিনভর নগরজুড়ে নানা আলোচনার পর মধ্যরাতে একইভাবে মেয়রের বাসায় হাজির হন জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল।

একই দিনে গুরুত্বপূর্ণ দুই মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর বাসায় যাওয়ার নানা কারণ খুঁজছেন নগরবাসী। কেউ ইতিবাচক আবার কেউ নেতিবাচকভাবে দেখছেন। গতকাল সোমবার বিষয়টি ছিল ‘টক অব দ্য সিলেট’।

সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বর্তমান মেয়রের বাসায় মেয়র প্রার্থীরা যেতেই পারেন। এটা সিলেটের র্দীঘদিনের সংস্কৃতি এবং রাজনৈতিক সৌহার্দ্যপূর্ণ সর্ম্পকের দৃষ্টান্ত বলে মনে করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পদোন্নতি দিয়ে ৬৫ হাজার সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা: ডিজি

দিনাজপুরে হিন্দু নেতাকে অপহরণ করে হত্যা: ভারত সরকার ও বিরোধী দল কংগ্রেসের উদ্বেগ

সমালোচনার মুখে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের নিয়োগ বাতিল

আজ থেকে ৫০০ টাকায় মিলবে ১০ এমবিপিএস গতির ইন্টারনেট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত