Ajker Patrika

হঠাৎ ভাড়া বৃদ্ধিতে ক্ষোভ

সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ০২
Thumbnail image

পূর্বঘোষণা ছাড়াই যাত্রী পারাপারে ২০ শতাংশ ভাড়া বাড়িয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরা-গুপ্তছড়া ফেরিঘাটের ইজারাদার। গত মঙ্গলবার থেকে স্পিডবোটের যাত্রী পরিবহনে ও মালামাল পরিবহনে হঠাৎ ভাড়া বাড়ানো হয়। এতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সন্দ্বীপ পারাপারে ফেরিঘাটে আসা যাত্রীরা। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে ইজারাদারেরা এক লাফে ২০ শতাংশ বাড়ানোয় যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

তবে ইজারাদার কর্তৃপক্ষের ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টি জানে না ফেরিঘাট ইজারা দেওয়া চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। তবে ইজারাদারের দাবি, ডিজেলের দাম বাড়ানোর পর গত নভেম্বরে ভাড়া বাড়িয়েছে সরকার। তাই সরকারি ঘোষণা অনুসারে তাঁরা ভাড়া বাড়িয়েছেন। অপরদিকে সন্দ্বীপের বাসিন্দাদের দাবি, ঘাটের মানুষের দুর্ভোগকে পুঁজি করে, ইজারাদার স্বেচ্ছাচারী আচরণ করছেন।

সন্দ্বীপগামী যাত্রী সাহাব উদ্দিন, সৃজন মজুমদার ও এইচ এম নাঈম উদ্দিনসহ হয়রানির শিকার হওয়া কয়েকজন যাত্রী জানান, তাঁরা সবাই সন্দ্বীপ থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ঘাটে আসেন। এ সময় হাতে লেখা একটি নোটিশে ভাড়া বাড়ানোর তথ্য দেখে বিস্মিত হন। কোনোরকমের পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ভাড়া বাড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তাঁরা। ঘাটের কর্মকর্তাদের সঙ্গে অনেকে বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

যাত্রীরা জানিয়েছেন, আগে যেখানে জনপ্রতি ২৫০ টাকা নেওয়া হতো, এখন নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা। এ ছাড়া মালামাল পারাপারেও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

ঘাটের ইজারাদার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গত বছরের নভেম্বরে সরকার নৌপরিবহনে ভাড়া ৩৫ শতাংশ বাড়িয়েছে। আমরা তখন কিন্তু ভাড়া বাড়াইনি। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে স্পিডবোটের যাত্রীদের জন্য ৫০ টাকা বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করেছি। সরকারি হিসেবে বাড়ালে এ ভাড়া দাঁড়ায় ৩৩৭ টাকা, হাফ ভাড়া ২০০ টাকা। এ ছাড়া মালামালের ভাড়া ২০ টাকা করে বাড়িয়েছি।’

আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, তাঁরা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহীকে গত মঙ্গলবার বিকেলে ভাড়া বাড়ানোর বিষয়টি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ সদস্য আ ম ম দিলশাদ বলেন, কুমিরা-গুপ্তছড়া ফেরিঘাটের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে ইজারাদারকে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। এ বিষয়টি নিয়ে জেলা পরিষদে কোনো বোর্ড মিটিং হয়নি।

বিআইডব্লিউটিএ উপপরিচালক নয়ন শীল বলেন, ভাড়া বাড়াতে হলে অবশ্যই নৌ-পরিবহনের কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করতে হবে। ওই আবেদনের পর তাঁকে ভাড়া বাড়ানোর অনুমতি সাপেক্ষে একটি চিঠি দেওয়া হবে। কিন্তু কুমিরা-সন্দ্বীপ ফেরিঘাটে ইজারাদার তাদের ভাড়া বাড়ানোর জন্য কোনো আবেদন করেননি। ফলে অবৈধভাবে ভাড়া বেশি নিলে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিআইডব্লিউটিসির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম বাণিজ্য) গোপাল চন্দ্র মজুমদার বলেন, নৌপথটিতে যাতায়াত করতে শুষ্ক মৌসুমে ১৫ থেকে ২০ মিনিট সময় লাগে। এতে সারা দিনে স্পিডবোটে করে এক হাজার থেকে দেড় হাজার যাত্রী পরিবহন করতে পারে। তবে যাত্রীদের দুর্ভোগ লাঘবে গতকাল থেকে ঘাটে যাত্রীবাহী জাহাজ দেওয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির ইকবাল বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি অবগত নই।’ সংশ্লিষ্ট ইজারাদারের সঙ্গে এ নিয়ে আলাপ করবেন তিনি।

জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ সালাম বলেন, ‘স্পিডবোটের ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে আমি গতকাল (মঙ্গলবার) শুনেছি। ভাড়া বৃদ্ধি করতে হলে নির্দিষ্ট কিছু কারণ থাকতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত