Ajker Patrika

বাঁধ ভেঙে ডুবল পাকা ধান

রানা আকন্দ, কলমাকান্দা
বাঁধ ভেঙে ডুবল পাকা ধান

নেত্রকোনার কলমাকান্দায় বাঁধ ভেঙে ধানখেতে পানি ঢুকেছে। উপজেলার বড়খাপন ইউনিয়নের দুটি ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ধানখেত। ঘোলা পানিতে ধানখেত তলিয়ে যাওয়ায় তা কেটে আনার আশা ছেড়ে দিয়েছেন কৃষকেরা। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বাস্তবায়িত দুটি বাঁধ ভেঙে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

গত সোমবার রাতে ও মঙ্গলবার বিকেলে এ দুটি বাঁধ ভেঙে যায়। বাঁধ ভেঙে ধানখেত তলিয়ে যাওয়া দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষক। উপজেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে এমনটা হয়েছে। বর্তমানে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, উপদাখালী হাওর উপপ্রকল্পের পিআইসি-৪ ও পিআইসি-৩ এ দুটি বাঁধ ভেঙে গেছে। গত ৯ এপ্রিল এই দুটি বাঁধ নির্মাণের অনিয়ম নিয়ে দৈনিক আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এখন সেই বাঁধ ভেঙে কৃষকের ফসল পানিতে তলিয়ে গেল। পিআইসি-৪ রুবেল মিয়ার নির্মিত বাঁধের জাঙ্গিয়া বিলের অংশে প্রায় ১৫০ ফুট বাঁধ ভেঙে পানি ধানখেতে প্রবেশ করেছে।

অপর দিকে নয়াপাড়া গ্রামে বাস্তবায়িত পিআইসি ৩ বাঁধটির ২০ ভাগ কাজও সম্পন্ন হয়নি। কোনো ধরনের পানির চাপ ছাড়াই এ বাঁধের দুটি অংশে ভেঙে যায়। কৃষকদের দাবি, বাঁধের কাজ সম্পন্ন না করে, অনিয়ম করেও বিল ঠিকই পাচ্ছেন তাঁরা। এ ছাড়া ইউনিয়নের প্রধান সড়কগুলোয় কেটে রাখা ধানে চারা গজিয়েছে।

স্থানীয় কৃষক হাসেন মিয়া বলেন, ‘তিনি ৪০ কাঠা জমিতে বোরো ধান চাষ করেছেন। কিন্তু শ্রমিক-সংকটে ধান কেটে আনতে দেরি হয়ে যায়। ১৬ কাঠা জমির ধান কাটা শেষ হতেই জাঙ্গিয়া বিলের বাঁধ ভেঙে যায়। এতে তার ২৪ কাঠা জমির ধান তলিয়ে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি পিআইসির সভাপতি বলেন, বাঁধের কাজ করে শান্তি নাই। এই কাজের বিল হয় অনেক দেরিতে। তাই নিজের টাকা বিনিয়োগ করে শতভাগ কাজ কেউ করতে চান না। বিল পাস হতেই সরকারি ট্যাক্স ১৩ শতাংশ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের দিতে হয় ১০ শতাংশ, উপজেলা প্রশাসনকে দিতে হয় ৩ শতাংশ। এভাবেই চলছে কাজ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারুক আহমেদ বলেন, বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় লাখওয়া, নানিয়া, জাঙ্গিয়াসহ কয়েকটি বিল প্লাবিত হয়েছে। বড়খাপন ইউনিয়নের ৮৫ শতাংশ ফসল কাটা শেষ হয়েছে। আর ১৫ শতাংশের ফসল ডুবে গেছে।

ভেঙে যাওয়া বাঁধের সভাপতি রুবেল মিয়া বলেন, ‘বাঁধ ভেঙে যাওয়ার সময় হয়েছে, তাই ভেঙে গেছে। আপনাদের সংবাদ প্রকাশে আমার কিছু যায় আসে না। এ বিষয়ে আর কথা বলতে প্রস্তুত নন তিনি বলে ফোন কেটে দেন।’

নেত্রকোনা পাউবোর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘পানির চাপে সারা দেশের সব বাঁধ ভেঙে যাচ্ছে। এতে তাঁদের করার কিছু নেই। আর ১০ শতাংশ কমিশন নেওয়ার প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো উত্তর দেননি। প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেন বলে ফোন কেটে দেন তিনি।’ এ বিষয়ে জানতে জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহনলাল সৈকতকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল হাসেম বলেন, ‘টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে এমনটা হয়েছে। বর্তমানে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে। তিনি উপজেলায় আসার পর কোনো বিল পাস হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

ঘন ঘন নাক খুঁটিয়ে স্মৃতিভ্রংশ ডেকে আনছেন না তো!

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত