Ajker Patrika

ঘোড়াদহ মেলা ছড়িয়ে পড়েছে পাঁচ গ্রামে

মিজান মাহী, দুর্গাপুর (রাজশাহী) 
Thumbnail image

কোনো ধরনের আগাম প্রচার-প্রচারণা নেই। তবুও বছরের আশ্বিন মাসের শেষ দিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হরেক রকম পণ্যের পসরা নিয়ে ব্যবসায়ীরা সমবেত হয় রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার উজালখলসী গ্রামের রাইচাঁদ নদীর তীরে ঘোড়াদহ মেলায়। শত শত বছর ধরে এভাবেই হয়ে আসছে এ মেলাটি। প্রাচীন মেলাটি এক গ্রাম থেকে ছাড়িয়ে এখন পাঁচ গ্রামে বসে। ঘোড়াদহ মেলা বসলে গ্রামগুলোতে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়।

স্থানীয়রা জানান, ঘোড়াদহ মেলার সঠিক বয়স, বাপ-দাদা ও তাঁর আগের মানুষগুলোও জানাতে পারেনি। তবে অনুমান করা হয়, প্রায় তিন শত বছর ধরে দুর্গাপুর উপজেলার উজালখলসী গ্রামে রাইচাঁদ নদীর তীরে এ ঘোড়াদহ মেলা বসে। তবে এ মেলা এখন এক গ্রামে এ সীমাবদ্ধ নাই।

ঘোড়াদহ মেলায় গিয়ে দেখা গেল, পণ্যের পসরা নিয়ে এসেছেন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। মিষ্টান্ন, খেলনা, চুড়ি, ফিতা, আলতা থেকে ঘর গৃহস্থালির বিচিত্র জিনিস। জিলাপিই ভাজা হচ্ছে ৫০-৬০ টির বেশি দোকানে। বিক্রিও হচ্ছে দেদার। কারণ মেলা শেষে যে জিলাপি কিনেই বাড়ি ফিরতে হয়। আরও আছে ঝুড়ি (কানমুচরি) মেলার ঐতিহ্য।

কুষ্টিয়া জেলা থেকে কাঠের তৈরি খেলনা এনেছেন বুলবুল হোসেন। তিনি বলেন, প্রায় ১০ বছর ধরে এই মেলায় কাঠের খেলনা বিক্রি করে আসছেন তাঁরা। গত দুই বছর করোনার সময় বেচাকেনা ভালো হয়নি। এবার ভালো বেচাকেনা হবে সেই আশায় আছেন।

মেলায় এসেছেন রাজশাহী নগরীর কাশিয়াডাঙার রুবেল হক। তিনি বললেন, ‘প্রাচীন ঐতিহ্য ধরে রেখেছে দুর্গাপুরের ঘোড়াদহ মেলাটি। প্রতিবছরই আসি। এখনো কত দর্শনার্থী। আমি আসি ঐতিহ্যবাহী চিকন জিলাপি ও সখিন কিছু জিনিসপত্র নিতে।’

উজালখলসী গ্রামের প্রবীণ শিক্ষক ইয়াছিন আলী বলেন, ‘শত শত বছর ধরে আশ্বিন মাসের শেষ দিনে রাইচাঁদ নদী তীরে ব্যবসায়ীরা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে যান। গত ১০-১২ বছর থেকে ঘোড়াদহের মেলার আদলে পাশের গ্রামগুলোতেও মেলা বসে।

ঘোড়াদহ মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি শিক্ষক আব্দুল মজিদ মণ্ডল বলেন, শত বছরের পুরোনো মেলা এটি। এ জন্য আগাম কোনো ঘোষণা দেওয়া হয় না। দূরদূরান্তের মানুষ আসে মেলায় যোগ দিতে। সব রকমের সুবিধা রাখতে আয়োজক কমিটি প্রায় এক মাস আগে থেকে সব প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। এবারও নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে মেলা কমিটি। এবারও মেলাটি বসেছে গত রোববার ৩১ আশ্বিন। আজ মঙ্গলবার মেলা শেষ হলেও আসবাবপত্রের দোকানগুলো থাকবে মাসব্যাপী। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত