Ajker Patrika

সাবিত্রী এখন এশিয়ার শীর্ষ ধনী নারী

মারুফ ইসলাম
আপডেট : ২০ আগস্ট ২০২২, ২১: ৩৪
সাবিত্রী এখন এশিয়ার শীর্ষ ধনী নারী

স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখেই ছিলেন সাবিত্রী জিন্দাল। কিন্তু ২০০৫ সালের এক বিপর্যয় তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। তাঁকে নাম লেখাতে হয় রাজনীতিতে। একই সঙ্গে হয়ে উঠতে হয় ব্যবসায়ী। সেই পথ ধরে একদিন যে তিনি শীর্ষ ধনীর তালিকায়ও নাম লিখে ফেলবেন, তা হয়তো ভাবেননি সাবিত্রী।

কিন্তু সময় ও শ্রম যদি একত্র হয়, তবে কত অভাবনীয় ঘটনাই–না ঘটে পৃথিবীতে। সাবিত্রীর ক্ষেত্রেও ঘটেছে তা-ই।

২০০৫ সালে এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান সাবিত্রীর স্বামী ওম প্রকাশ জিন্দাল ওরফে ও পি জিন্দাল। তিনি ছিলেন বিশ্বখ্যাত জিন্দাল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। পাশাপাশি রাজনীতিতেও সক্রিয় ছিলেন ওম প্রকাশ। তিনি ছিলেন হরিয়ানা সরকারের মন্ত্রী।

ও পি জিন্দালের মৃত্যুর পর তাঁর রাজনীতি ও রেখে যাওয়া ব্যবসা এ দুটি সামলাতে এগিয়ে আসতে হয় সাবিত্রী জিন্দালকে। সে জন্য হাল ধরেন স্বামীর রেখে যাওয়া খ্যাতি ও প্রতিপত্তির। জিন্দাল গ্রুপের চেয়ারপারসন হন এবং যোগ দেন কংগ্রেসের রাজনীতিতে। তাঁর স্বামীর আসন থেকে নির্বাচন করে জয়ী হন হরিয়ানা বিধানসভায়। পরে রাজ্য সরকারের মন্ত্রীও হয়েছিলেন তিনি।

এই সাফল্যের পর ব্যবসায়ী হিসেবেও সাবিত্রী যে সাফল্যের শীর্ষ ছোঁবেন, তা হয়তো ভাবনায় ছিল না কারও। সম্প্রতি ব্লুমবার্গ বিলিয়নিয়ার্স ইনডেক্সের প্রতিবেদন জানিয়েছে, সাবিত্রী জিন্দাল এখন এশিয়ার শীর্ষ ধনী নারী। এর আগে আসনটি ছিল চীনের নারী ব্যবসায়ী ইয়াং হুইয়ানের দখলে।

৭২ বছর বয়সী সাবিত্রীর সম্পদ এখন ১১ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। তিনি ভারতের শীর্ষ ১০ ধনীর একজন। তাঁর নাম উঠেছে বিশ্বখ্যাত ফোর্বস ম্যাগাজিনের শীর্ষ ধনীর তালিকায়ও। বিশ্বব্যাপী বিলিয়নিয়ারের তালিকায় ২০২০ সালে ৩৪৯ নম্বরে ছিলেন তিনি। ২০২২ সালে ১২৬ নম্বরে উঠে আসে সাবিত্রী জিন্দালের নাম।

অথচ দুই বছর আগেও জিন্দাল গ্রুপের ব্যবসা অতটা ভালো ছিল না। ২০২০ সালের এপ্রিলে করোনা মহামারির সময় জিন্দাল গ্রুপের সম্পদ ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার কমে গিয়েছিল। সেখান থেকে ২০২০ সালের এপ্রিলে সম্পদ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে।

কীভাবে সম্ভব হলো? নিজের পরিশ্রম তো ছিলই, তার সঙ্গে যোগ হয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। এই যুদ্ধ রাতারাতি বাড়িয়ে দিয়েছে পণ্যের দাম। ফলে ফুলেফেঁপে ওঠে জিন্দাল গ্রুপের ব্যবসা। জিন্দাল গ্রুপের ব্যবসা মূলত ধাতব পদার্থ উৎপাদন।

গত শতকের পঞ্চাশের দশকে আসামের তিনসুকিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন সাবিত্রী জিন্দাল। ১৯৭০ সালে বিয়ে করেছিলেন ও পি জিন্দালকে। তারপর ঘর-সংসারই সামলেছেন মূলত। ওম প্রকাশের মৃত্যুর পর সামলাতে হয় তাঁর রেখে যাওয়া ব্যবসা ও রাজনীতি। সেই থেকে নিজেকে ক্রমেই ভেঙেচুরে সামনে এগোতে এগোতে আজকের শীর্ষ অবস্থানে এসেছেন সাবিত্রী জিন্দাল।

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, এনডিটিভি ও ব্লুমবার্গ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত