Ajker Patrika

ফসল বাঁচাতে নিষিদ্ধ পলিথিন

চারঘাট প্রতিনিধি
আপডেট : ১২ মার্চ ২০২২, ১১: ৪১
Thumbnail image

চারঘাট উপজেলার মাঠজুড়ে শোভা পাচ্ছে বোরো ধান ও গম। কৃষকেরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন ফসলের খেতে। তবে অনেক কৃষক পাখি ও ইঁদুর থেকে ফসল রক্ষায় ব্যবহার করছেন ক্ষতিকর নিষিদ্ধ পলিথিন। এতে ফসল রক্ষা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসলি জমি। ফসলের সুরক্ষা দেওয়া শেষে পলিথিনগুলো জমিতে পড়ে থাকছে। এতে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নিমপাড়া, শলুয়া, সরদহসহ সব কটি ইউনিয়নের বিভিন্ন ধান ও গমের জমিতে বাঁশের ছোট ছোট খুঁটির মাথায় বাঁধা রয়েছে বিভিন্ন রঙের পলিথিন। জমিতে শত শত পলিথিন বাঁধা বাঁশের লাঠি পোঁতা রয়েছে। দূর থেকে মনে হবে সাদা বক বসে আছে।

স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ধান রোপণের পর খেতে পাখি বসে ধানের চারা নষ্ট করে ফেলে। এ জন্য জমিতে পলিথিন বেঁধে দেওয়া হয়েছে, যাতে পাখি ভয়ে না বসে। তাঁরা জানান, বক, শালিক, মাছরাঙাসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ধানের জমিতে বসে ধানের চারা নষ্ট করে ফেলে। আবার অনেক জমিতে এখন গম পরিপক্ব হচ্ছে। ইঁদুর গমের দানা খেয়ে ফেলছে। এ জন্য তাঁরা পলিথিন টাঙিয়ে রোধ করার চেষ্টা করছেন।

অথচ কৃষিবিদেরা বলছেন, পলিথিন এমন একটি পদার্থ, যা মাটির সঙ্গে মিশতে শত শত বছর সময় লাগে। এটি মাটির অভ্যন্তরে গেলেও ক্ষয় হয় না বা মিশে যায় না। পলিথিনের রাসায়নিক পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট করে।

ভাটপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কাদের বলেন, ‘পাখির অত্যাচারে খেতে পলিথিন দিয়েছি।’ পলিথিন তো খুবই ক্ষতিকারক, তবু কেন ব্যবহার করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে তো কেউ আমাকে বলেনি। আমি মূর্খ মানুষ, এত কিছু জানি না।’

শলুয়া গ্রামের কৃষক মুনসুর আলী বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে জমিতে গম করেছি। অথচ ইঁদুর খেয়ে ফেলছে। এ জন্য বাধ্য হয়ে পলিথিন টাঙিয়েছি। বাতাসের সঙ্গে পলিথিন উড়লে শব্দের সৃষ্টি হয়। তখন ইঁদুর পালিয়ে যায়। এতে ভালো ফল পাচ্ছি, তবে পলিথিন জমির ক্ষতি করবে, এটা জানতাম না।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফুন নাহার বলেন, ‘ফসলি জমিতে ক্ষতিকর পলিথিন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষেধ। পাখি বসার জন্য জমিতে কাঠ ও বাঁশের লাঠি পুঁতে পাখি বসার ব্যবস্থা করতে হবে। পাখি ক্ষতিকর পোকামাকড় খেয়ে ফসল ভালো রাখে। তবে কোনো কোনো অঞ্চলে পাখি ও ইঁদুরের পরিমাণ বেশি থাকায় পলিথিন বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। এটা করা যাবে না। বিষয়টি নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে কৃষকদের সচেতন করা হবে।’

পরিবেশ অধিদপ্তরের রাজশাহী কার্যালয়ের উপপরিচালক মাহমুদা পারভীন বলেন, নিষিদ্ধ পলিথিন ফসলি জমিতে ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্টের পাশাপাশি পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। কারণ, পলিথিন সহজে মাটির সঙ্গে মেশে না। তাই এ বিষয়ে এখনই কৃষকদের সচেতন করা উচিত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত