Ajker Patrika

দাম বাড়ায় আলুচাষির স্বস্তি

আনিসুল হক জুয়েল, দিনাজপুর
আপডেট : ১৭ মার্চ ২০২২, ১৬: ৪১
দাম বাড়ায় আলুচাষির স্বস্তি

হতাশায় থাকা আলুচাষিদের মুখে স্বস্তির হাসি ফুটতে শুরু করেছে। গত দুই সপ্তাহে কেজিপ্রতি আলুর দাম বেড়েছে ৩-৫ টাকা। তবে সার্বিক বাজার পরিস্থিতিতে আলুর দাম আর কমার কোনো লক্ষণ নেই বলে জানান বাজার-সংশ্লিষ্টরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্র জানায়, এ বছর ৪৭ হাজার ৩৯০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে। হেক্টরপ্রতি ফলন ২৩ মেট্রিক টন প্রায়। সে অনুযায়ী জেলায় মোট উৎপাদিত আলুর পরিমাণ প্রায় ১১ লাখ মেট্রিক টন। জেলার ১৩টি আলুর হিমাগারের ধারণ ক্ষমতা ১ লাখ ৬ হাজার মেট্রিক টন। দিনাজপুর থেকে ইতিমধ্যে ৪ হাজার মেট্রিক টন আলু রপ্তানি করা হয়েছে। এ বছর জেলা থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন আলু রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।

সরেজমিন জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কৃষি বিভাগের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূলত কয়েকটি কারণে বাড়ছে আলুর দাম। প্রথমত, বাজারে সবজিসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় তুলনামূলক দাম কম হওয়ায় চাহিদা বেড়েছে আলুর। দ্বিতীয়ত, দীর্ঘমেয়াদি সংরক্ষণের জন্য হিমাগারে রাখা শুরু হওয়া। তৃতীয়ত, আলু রপ্তানি শুরু হওয়া। পাশাপাশি ডিজেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ার কারণেও আলুর দাম বেড়েছে।

এদিকে, দাম বাড়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন আলুচাষিদের অনেকেই। তাঁদের অভিযোগ, ‘প্রয়োজনের তাগিদে তারা ইতিমধ্যেই আলু বিক্রি করে দিয়েছেন। আলু এখন কৃষকের হাত পেরিয়ে মজুতদার ও ব্যবসায়ীদের হাতে। তাই দাম বাড়লেও লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না তাঁরা।’

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার আউলিয়া পুকুর গ্রামের কৃষক মোহসিন আলী বলেন, ‘আগাম আলু চাষ করে এবার খরচটাও ঠিকমতো তুলতে পারি নাই। শুরুতেই আলুর দাম ছিল না, কৃষকের হাত থেকে যখন পাইকারদের হাতে আলু চলে গেল, তখন আলুর দাম বেড়ে গেল। পাইকারেরা কৃষকের কাছে কম দামে আলু কিনে বেশি দামে বিক্রি করে। সমস্যা শুধু আমাদের কৃষকের, আমার ন্যায্য মূল্য পাই না আমাদের উৎপাদিত ফসলের।’

একই উপজেলার খুনিয়াদীঘি গ্রামের কৃষক মোকসেদুল শুরুতেই নতুন আলু বিক্রি করেছি ৬ টাকা কেজি দরে, এখন সেই আলু বাজরে ১৫-২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আমার আলু শুরুতেই বিক্রি করে দিয়েছি। এখন আলুর বাজার ভালো। কী এমন হলো যে এক মাসের ব্যবধানে আলুর দাম কেজি প্রতি ১০ থেকে ১২ টাকা বেড়ে গেল।

বিরল উপজেলার আলুচাষি মতিউর রহমান জানান, তিনি এস্টারিস্ট জাতের আলু আবাদ করেছেন। বর্তমানে সাড়ে ১২ থেকে ১৩ টাকা কেজি দরে আলু ‍বিক্রি হচ্ছে। গত এক মাসে দাম বেড়েছে। শুরু থেকে এ রকম দাম থাকলে আমরা লাভবান হতাম। পাশাপাশি যেহেতু আমাদের দেশে প্রচুর পরিমাণে আলু আবাদ হয়, সেহেতু বেশি পরিমাণে রপ্তানি হলে কৃষকেরা উপকৃত হতো।

জেলা কৃষি বিভাগের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) খালেদুর রহমান জানান, জেলার ১৩টি আলুর হিমাগারের ধারণক্ষমতা ১ লাখ ৬ হাজার মেট্রিক টন। গত বছর আলু সংরক্ষণ করে পরবর্তী সময়ে কৃষকেরা ভালো দাম পেয়েছেন। আশা করি, এ বছরও তাঁরা লাভবান হবেন। দিনাজপুর থেকে ইতিমধ্যে ৪ হাজার মেট্রিক টন আলু রপ্তানি হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বছর জেলা থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন আলু রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ, নেপাল, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়াতে আলু রপ্তানি হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ডিএনসিসির পদ ছাড়লেন এস্তোনিয়ার নাগরিক আমিনুল ইসলাম

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল নিয়ে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা, চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ

এনআইডির নাম ও জন্মতারিখ সংশোধনের দায়িত্বে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তারা

কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর অতর্কিত গুলি, নিহত ২৬

পদত্যাগ করব না, আলোচনা করে সমাধান করব: কুয়েট উপাচার্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত