Ajker Patrika

পানির নিচে শত বিঘার ধান

হোসাইন ময়নুল, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) 
আপডেট : ১৯ মে ২০২২, ১৬: ৩৯
Thumbnail image

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় হাওরে পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় ১০০ বিঘা জমির ধান ডুবে গেছে। পেকে গেলেও কাটতে পারছেন না কৃষক। উপজেলার বাঙালা ইউনিয়নের বিনায়েকপুর হাওরে (লটাগাড়ি বিল) এ জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার বিনায়েকপুর হাওরে অন্তত ১০০ বিঘা জমির ধান পেকে গেছে। কিন্তু খেতে পানি জমে থাকায় অতিরিক্ত মজুরি দিয়েও মিলছে না ধানকাটা শ্রমিক। এ অবস্থায় উৎপাদন খরচের তুলনায় বাজারমূল্য অপেক্ষাকৃত কম হওয়ায় ধান কাটবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই এলাকার অনেক কৃষক।

এদিকে বিনায়েকপুর মধ্যপাড়া থেকে হাওরে যাওয়ার এক কিলোমিটার রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ায় হাওর থেকে ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়েও অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন চাষিরা।

বিনায়েকপুর হাওরে মধ্যপাড়া গ্রামের ইউনুস আলীর তিন বিঘা, মোতালেব মোল্লার সাড়ে চার বিঘা, আফসার মোল্লার দুই বিঘা, আশরাফ মোল্লার আড়াই বিঘা, আমজাদ হোসেনের আট বিঘা, ইউসুফের দুই বিঘা, ইয়াকুবের দুই বিঘা, আল্লেকের এক বিঘা, মোকসেদের দুই বিঘা জমির পাকা ধান কাটার অভাবে খেতেই নষ্ট হচ্ছে। তাঁরা কেউ আর ধান কাটতে আগ্রহী নন।

সরেজমিনে স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা হলে তাঁরা জানান, বিনায়েকপুর হাওরে সব মিলিয়ে অন্তত ১০০ বিঘা জমি রয়েছে। নিষ্কাশনব্যবস্থা না থাকায় এসব জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

এতে অতিরিক্ত মজুরি দিয়েও পানিতে ডুবে থাকা ধান কাটতে রাজি হচ্ছেন না কৃষিশ্রমিকেরা। অনেকেই আবার বাড়তি খরচের কথা চিন্তা করে জমি থেকে ধান না কাটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বিনায়েকপুর গ্রামের কৃষক মোতালেব মোল্লা জানান, চলতি মৌসুমে ওই হাওরে সাড়ে চার বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছেন। ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু হাওরে পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে জমির পাকা ধান ডুবে গেছে। ধান কাটতে অতিরিক্ত মজুরি দিয়েও শ্রমিক মিলছে না। অপরদিকে, ধানের বাজারমূল্য কম থাকায় এবার বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বেন চাষিরা।

একই গ্রামের কৃষক মো. ইউনুস আলী জানান, এক বিঘা খেতের ধান কাটতে শ্রমিককে দিতে হচ্ছে ৭ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে এক বিঘায় উৎপাদন খরচ পড়ছে ১০ হাজার টাকা। বর্তমান বাজারমূল্যে এক বিঘা জমির ধান বিক্রি করে পাওয়া যায় ১৬ হাজার টাকা।

এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবর্ণা ইয়াসমিন আজকের পত্রিকাকে জানান, চলতি বছর বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩০ হাজার ২০০ হেক্টর জমি। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৩২ হাজার ৮০ মেট্রিক টন। ধানের ফলন ভালো হয়েছে। বৃষ্টির কারণে হাওরের কিছু জমি ডুবে গেছে। তবে আবহাওয়া ভালো হলে ডুবে যাওয়া ধানগুলো কাটার উপযোগী হবে। এতে কৃষক খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। এ ছাড়া কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে হাওরে ধান কাটা হচ্ছে, এতে খরচ কমছে চাষিদের। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত