Ajker Patrika

নারীদের জয় যেখানে

সম্পাদকীয়
নারীদের জয় যেখানে

ভারতকে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৬ নারী সাফের শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। নারীদের এই জয়ে তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছে গর্বিত দেশবাসী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোই এর প্রমাণ দেয়। সত্যিই এ খবর আনন্দের, সুখের ও গৌরবের। এর আগেও বহুবার চমক দেখিয়েছে আমাদের মেয়েরা। শুধু ফুটবলে নয়, ক্রিকেটেও।

এই তো মাসখানেক আগে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ সাফ ফাইনালে বাংলাদেশের নারী ফুটবল দল ভারতের সঙ্গে খেলায় সমতা এনেছিল। আক্ষরিক অর্থে কিন্তু এই জয় বাংলাদেশেরই। কেননা স্টেডিয়াম পর্যন্ত আসতে দেশের এই মেয়েরা যে যুদ্ধ করেছেন, তাতে জয়লাভ করতেই হয়েছে তাঁদের। খেলার মাঠে সমতা বা শিরোপার জয় তো শুধু দর্শকের।

ভুলে গেলে চলবে না, কী পরিমাণ প্রতিকূলতা জয় করতে হয়েছিল ময়মনসিংহের কলসিন্দুরের মেয়েদের। দরিদ্র পরিবার থেকে ফুটবল অনুশীলনে আসা মেয়েদের খেলার সরঞ্জাম কেনার কোনো সামর্থ্য ছিল না, শুনতে হতো অনেকের কটু কথা। কিন্তু ছিল ফুটবল খেলার অদম্য ইচ্ছা। এই ইচ্ছাকে পুঁজি করেই স্বপ্নের পথে হেঁটেছেন তহুরা, কৃষ্ণা, সানজিদা, মারিয়ারা। সাফ জয়ের পর জাতীয় দলেও জায়গা করে নিয়েছেন তাঁরা।

তাঁদের মতোই বেশির ভাগ নারী দরিদ্র পরিবার থেকেই আসে খেলার অঙ্গনে। তাঁদের না থাকে আর্থিক সামর্থ্য, না থাকে সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা। ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের তুলনায় পুরুষদের দিকেই যেন নজর বেশি। অথচ বর্তমান পরিস্থিতি বলছে জনপ্রিয় দুই খেলা ক্রিকেট ও ফুটবলে বাংলাদেশের জন্য সাফল্য এনে দিচ্ছে নারীরাই। পুরুষদের পারফরম্যান্স আশাহত করছে দর্শকদের। তবে এ কথা স্বীকার করতে হবে, আঞ্চলিক ক্ষেত্রে পুরুষ ফুটবলারদের দক্ষতার প্রমাণ মিলছে। সেটা আগেও মিলেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তা প্রকাশ পাচ্ছে না। তাই এখানেও নারীরা এগিয়ে আছেন।

ঘরে হোক, শিক্ষালয়ে হোক কিংবা পেশাগত জীবনে—নানা ক্ষেত্রে নারীরা সফল হচ্ছেন। তবে ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের এমন সফলতা কিন্তু বিরল, কারণ তাঁদের অংশগ্রহণ কম। তাই তাঁরা যেন উৎসাহ হারিয়ে না ফেলেন, এমন কিছু করা যাবে না। তাঁদের প্রতিটি সাফল্যের জয়জয়কার করতে হবে যেন তাঁরা অদম্য স্পৃহা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারেন, সাফল্যের ঝুলি ভারী করতে পারেন।

পরিশ্রম আর মেধার মিশেলে কী করে সাফল্য ছিনিয়ে আনতে হয়, সেই প্রমাণ আমাদের মেয়েরা বারবার দিয়ে আসছেন। যে খেলা হয়েছে সেদিন নেপালের কাঠমান্ডুতে, অনূর্ধ্ব-১৬ নারী দল সেখানেও এর ব্যতিক্রম করেনি। সমতা থেকে ভাগ্যের লড়াইয়ে জিতে যায় ইয়ারজানরা।

ইয়ারজানদের মতো নারী খেলোয়াড়েরা যেন তাদের ক্যারিয়ার ধরে রাখতে পারে, সে জন্য পৃষ্ঠপোষকতার এতটুকু ঘাটতি হলে চলবে না। পুরুষ বা নারী বিবেচনায় নয়, তাদের সম্মানী নির্ধারণ করা হোক দক্ষতা বিবেচনায়। নয়তো এ কারণেও ঝরে যেতে পারে অনেকের ক্রীড়াজীবন। আর আমাদের মেয়েরা খেলাধুলা থেকে সরে গেলে সফলতার ভার কমে যাবে, দর্শকদের মন চলে যাবে ক্রীড়াঙ্গন ছেড়ে অন্য কোথাও। দেশের অর্জনের জন্য খেলাধুলাকে জিইয়ে রাখতে হলে এই মেয়েদের পৃষ্ঠপোষকতা বড্ড প্রয়োজন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বন্দর-করিডর আপনার এখতিয়ারে নেই, বিদেশি উপদেষ্টাকে বিদায় করুন: ইউনূসকে সালাহউদ্দিন

জামায়াতের কেউ ইমাম-মুয়াজ্জিন হতে পারবে না: আটঘরিয়ায় হাবিব

আলটিমেটাম শেষ হওয়ার আগেই আসতে পারে অন্তর্বর্তী প্রশাসনের ঘোষণা

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প স্থবির

দায়িত্ব পেয়েই ‘অনিয়ম-দুর্নীতিতে’ মাসুদ রানা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত