Ajker Patrika

এটাই তো কোচের মুনশিয়ানা

আপডেট : ০১ জুন ২০২৩, ১১: ৪৮
Thumbnail image

গত মার্চে আলফাজ আহমেদ যখন দলের দায়িত্ব নিলেন, মোহামেডান তখন লিগে ১০ ম্যাচে ১২ পয়েন্টে টেবিলের ছয়ে। সেখান থেকে সাদা-কালোদের পয়েন্ট টেবিলের তিনে তুলেছেন তিনি, মোহামেডানকে জিতিয়েছেন ফেডারেশন কাপ। মাত্র তিন মাসে কীভাবে বদলে দিলেন মোহামেডানকে? আজকের পত্রিকাকে সবিস্তারে জানিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক তারকা ফরোয়ার্ড। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন নাজিম আল শমষের

প্রশ্ন: গত তিন মাসে আক্রমণাত্মক এক মোহামেডানকে আমরা দেখছি। বদলে দেওয়ার প্রক্রিয়াটা আসলে কী ছিল?
আলফাজ আহমেদ: মোহামেডানের দায়িত্ব নেওয়ার পর সবার আগে কাজ করেছি ফিটনেস নিয়ে। খেলোয়াড়দের স্ট্যামিনা বাড়িয়েছি, দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে সম্পর্কটা মজবুত করেছি। এই তিনটি বিষয় নিয়ে আলাদাভাবে কাজ করেছি; যেটা আমাদের ছিল না। খেলোয়াড়েরা যে পরিশ্রম করেছে, সেটা অবিশ্বাস্য! তারা যে ক্লাবের হয়ে একটা শিরোপা চায় এবং সেই শিরোপা জিততে তাঁরা সর্বোচ্চ পরিশ্রম আর অনুশীলন হাসিমুখে মেনে নিয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, তারা আসলেই কঠিন অনুশীলন করেছে। 

প্রশ্ন: তাহলে আগের কোচ শফিকুল ইসলাম মানিকের সময়ে খেলোয়াড়দের ফিটনেস আর সম্পর্ক ভালো ছিল না? 
আলফাজ: অবশ্যই ছিল না। দলের ফিটনেস-স্ট্যামিনা বলে কিছুই ছিল না। এগুলো নিয়ে এখনো কাজ করছি। কুমিল্লার ম্যাচ দেখুন, খেলোয়াড়েরা ১২০ মিনিট খেলেছে। এই শক্তিটা কোথা থেকে এসেছে? কঠিন পরিশ্রম ছাড়া এভাবে খেলা সম্ভব নয়। এই পর্যায়ে আসতে তারা নিজেরাই পরিশ্রম করেছে। আমি শুধু তাদের সমর্থন জুগিয়েছি। 

প্রশ্ন: খেলোয়াড়দের ফিটনেসে কেন এত ঘাটতি ছিল? 
আলফাজ: সেটা বলতে পারব না। খেলোয়াড়দের জন্য আলাদা ফিটনেস ট্রেনারও আনা হয়েছিল। সে শুধু একই ধরনের অনুশীলন করাত। কোনো বৈচিত্র্য ছিল না। খেলোয়াড়দের শক্তি কিংবা দম বাড়াতে সেই ট্রেনার কোনো কাজ করেনি। আগের কোচের অধীনে আমিও ছিলাম, ফিটনেস ট্রেনারও ছিল। তাঁকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হতো। এ বিষয়ে আমার কিছুই করার ছিল না। এখন আমাদের আলাদা কোনো ফিটনেস কোচ নেই। আমার সহকারী আবদুল কাইয়ুম সেন্টু ও গোলরক্ষক কোচ ছাইদ হাসান কানন ভাই। আমরা মিলেই দলটার দেখাশোনা করি, যা করার নিজেরা করি।

প্রশ্ন: প্রায় এক নতুন দলকে নিয়ে মোহামেডানকে শুধু মৌসুমের অর্ধেকটা সময় লড়াই করতে দেখা যায়। এদের কি পরের মৌসুমে ধরে রাখতে পারবেন? 
আলফাজ: এখানে তো আমার ধরে রাখার কিছু নেই। এটা সম্পূর্ণ ক্লাবের বিষয়। কর্মকর্তাদের বিষয়। আমি এই খেলোয়াড়দের টাকা দিতে পারব না। ক্লাব এখনো আমার সঙ্গে কথাই বলেনি, পরের মৌসুমে কোচ হিসেবে থাকব কি না, সে রকম চুক্তিও করা হয়নি। আমার সঙ্গে কোনো পরামর্শ হয়নি। কর্মকর্তারা চিন্তা করছেন, কীভাবে এগোনো যায়। তাঁরা ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন, এই দলকে তাঁরা ধরে রাখতে চান। এখন বিষয়টি সম্পূর্ণ ক্লাবের। তাঁরাই জানেন, কী করতে চান। 

প্রশ্ন: গত পরশু আবাহনীর বিপক্ষে প্রথমার্ধে মোহামেডানকে চেনাই যায়নি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর মিনিট থেকে দলটা যেন একেবারেই পাল্টে গেল। দ্বিতীয়ার্ধে আপনি কী কৌশলে খেলার ধরন বদলে দিলেন? 
আলফাজ: এটাই তো একজন কোচের মুনশিয়ানা। পরের অর্ধে আমি যে কৌশল আর পরিকল্পনা সাজিয়েছি, সব ম্যাচে কাজে লেগেছে।

প্রশ্ন: ফাইনালের পর আবাহনী কোচ মারিও লেমোস বলছিলেন, দ্বিতীয়ার্ধে তাঁর দলকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। প্রথমার্ধের উজ্জীবিত আবাহনীকে আপনি কীভাবে আটকে দিলেন?
আলফাজ: ম্যাচটা বেলা ৩টা ১৫ মিনিটে শুরু হয়েছিল। কুমিল্লায় ওই সময় অনেক গরম ছিল। প্রথম ৪৫ মিনিটে আবাহনীর দুই উইং ব্যাক রহমত মিয়া ও আলমগীর রানা খুব বেশি ওভারল্যাপ করে উঠে আসছিল। দ্বিতীয়ার্ধে দুই উইং ব্যাক যেন আক্রমণে অবদান রাখতে না পারে, বাড়তি ফরোয়ার্ড নামিয়ে তাদের উল্টো চাপে ফেলে দিয়েছি। 

প্রশ্ন: মোহামেডান আগামীবার কয়টা শিরোপা জিততে পারে বলে মনে হয়?
আলফাজ: এটা আসলে ক্লাবের ওপরই নির্ভর করছে। যদি তারা ভালো মানের একটা দল গড়তে পারে, তাহলে অবশ্যই আমরা শিরোপা জিতব। আমার ব্যক্তিগত প্রত্যাশা, মোহামেডান ভালো একটা দল গড়ুক। চ্যাম্পিয়ন হতে লড়াই করুক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত