Ajker Patrika

বাকরুদ্ধ গাওসুলের পরিবার

আনোয়ার হোসেন, মনিরামপুর
আপডেট : ১৩ জুন ২০২২, ১২: ৪৪
বাকরুদ্ধ গাওসুলের পরিবার

ঢাকায় বার্ন ইউনিট থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে বৃদ্ধা মা আর ছয় মাসের শিশু সন্তানকে দেখার বড় সাধ ছিল চট্টগ্রামের বিএম কন্টেইনার ডিপোতে অগ্নিদগ্ধ ফায়ার সার্ভিস কর্মী গাওসুল আজমের (২৪)। তাঁর সে সাধ মিটল না। আট দিন কৃত্রিম শ্বাস প্রশ্বাসে (লাইফ সাপোর্ট) থাকার পর মৃত্যুর কাছে হার মানলেন গাওসুল। গত শনিবার দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

গাওসুল আজম যশোরের মনিরামপুর উপজেলার খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামের আজগার আলীর একমাত্র ছেলে। বৃদ্ধা বাবা মা ছাড়াও তাঁর ঘরে ছিল স্ত্রী ও ছয় মাসের শিশু ছেলে।

অকালেই সন্তান হারিয়ে বাকরুদ্ধ গাওসুল আজমের মা-বাবা। স্বামী হারিয়ে নির্বাক স্ত্রীও। মৃত্যুর খবর শুনে বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

এদিকে গতকাল রোববার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে গাওসুলের মরদেহ নেওয়া হয় ফায়ার সার্ভিসের সদর দপ্তর ঢাকার সিদ্দিক বাজারে। সেখানে প্রথম জানাজা শেষে ফায়ার সার্ভিসের অ্যাম্বুলেন্সযোগে তাঁর মরদেহ নিয়ে মনিরামপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন স্বজনেরা।

গাওসুল আজমের ভগ্নিপতি মিজানুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ (রোববার) রাত ১০টার দিকে আমরা মরদেহ নিয়ে মনিরামপুরের খাটুয়াডাঙায় পৌঁছাতে পারব বলে আশা করছি। গ্রামে কবর খোঁড়াসহ সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। রাতেই দ্বিতীয় জানাজা শেষে গাওসুলের দাফন সম্পন্ন হবে।’

এদিকে সোমবার ভোরে গাওসুল আজমের মৃত্যুর খবর খাটুয়াডাঙায় পৌঁছুলে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। একমাত্র ছেলের মৃত্যুর কথা শুনে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা আসিয়া বেগম। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন স্ত্রী কাকলী খাতুন।

মিজানুর রহমান বলেন, ‘গত সপ্তাহে শনিবার রাতে অগ্নিদগ্ধ গাওসুলকে ঢাকা মেডিকেলের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে আনা হয়। শরীরের ৭০ ভাগ দগ্ধ হওয়ায় সেখানে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসা চলছিল তাঁর। শুরু থেকে আমি ভাইয়ের সঙ্গে হাসপাতালে ছিলাম। হাসপাতালে মোট পাঁচবার অস্পষ্ট কথা বলেছেন গাওসুল। গত শুক্রবার দুপুরে আমার সঙ্গে শেষ কথা হয়। প্রথমে বাবা আজগার আলীর সঙ্গে কথা বলতে চান তিনি। বাবার সঙ্গে কথা শেষে বৃদ্ধা মা আসিয়া বেগম ও ৬ মাসের শিশু ছেলে সিয়াম কেমন আছেন জানতে চান।’

গাউছুলের মামাতো ভাই রমজান আলী বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর থেকে বাড়ির কারও চোখে ঘুম নেই। সবাই দুশ্চিন্তায় নাওয়া-খাওয়া ছেড়ে দিয়েছিলেন। এর মধ্যে ভোর ৪টার দিকে খবর আসে, ভাই মারা গেছেন। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছিলেন গাওছুল ভাই। মামার চাষের জমিও নেই। কীভাবে যে এখন তাদের সংসার চলবে, আল্লাহ জানেন।’

মনিরামপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রণব কুমার বলেন, ‘আমাকে সদর দপ্তর থেকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। আমরা গাওসুলের মরদেহ গ্রহণসহ যাবতীয় কাজ সম্পাদনের জন্য প্রস্তুত আছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তৃতীয়বার বিধ্বস্ত হলো বিমানবাহিনীর এফ-৭, এই চীনা যুদ্ধবিমানের বৈশিষ্ট্য কী

উত্তরায় বিমান বিধ্বস্ত: পাইলটসহ নিহত ২২, আহত দেড় শতাধিক, মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক

৯ লাখ টন চাল কিনবে বাংলাদেশ, আশায় বুক বাঁধছেন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা

উত্তরায় বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত

পাইলটের মা-বাবাকে বিমানবাহিনীর উড়োজাহাজে নেওয়া হলো ঢাকায়

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত