Ajker Patrika

গরু নিয়ে বিক্ষোভ, ঘেরাও প্রাণিসম্পদ কার্যালয়

রংপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ মে ২০২২, ১৫: ৪২
Thumbnail image

সরাসরি খামারি পর্যায়ে রাষ্ট্রীয় সহায়তা, গোখাদ্যের দাম কমানো ও দুধের মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে নগরীতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন খামারিরা। এ সময় আসন্ন বাজেটে পশুখাদ্যে ভর্তুকি দেওয়াসহ ছয় দফা দাবি জানিয়ে প্রাণিসম্পদ কার্যালয় ঘেরাও করা হয়।

গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর স্টেশন রোডে প্রাণিসম্পদ কার্যালয় চত্বরে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। খামারিদের সংগঠন ‘রংপুর ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের’ উদ্যোগে কর্মসূচিতে খামারিদের অনেকেই দূরদূরান্ত থেকে গরু নিয়ে এসে অংশ নেন।

খামারিরা অভিযোগ করেন, গোখাদ্যের দাম বাড়ছে। তাতে করে গরু পালন করা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। পশুখাদ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ আনুষঙ্গিক খরচ বেশি হওয়ায় অনেক খামারি বাধ্য হয়ে গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন। কয়েক মাসের ব্যবধানে খামারগুলোতে গরুর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। দুই মাস আগে যে গোখাদ্যের দাম প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা ছিল, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা। এই অবস্থায় দুধের উৎপাদন খরচ প্রতি কেজিতে ৬০ টাকার বেশি দাঁড়িয়েছে।

খামারিরা আরও অভিযোগ করেন, এখন দুধ বিক্রি করে লোকসান হচ্ছে। বর্তমানে মিল্ক ভিটা, প্রাণ, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান খামারিদের কাছ থেকে লিটারপ্রতি দুধ নিচ্ছে ৩৫ থেকে ৩৮ টাকায়। এতে প্রতি লিটারে ২০ টাকা করে লোকসান হচ্ছে। পশুখাদ্যের দামের সঙ্গে সমন্বয় করে দুধের মূল্য বাড়ানো দরকার।

কর্মসূচিতে রংপুর ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এস এম আসিফুল ইসলাম আসন্ন বাজেটে গোখাদ্যে ভর্তুকি দিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘ভর্তুকি ছাড়া এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখা কষ্টকর হবে। করোনা মহামারির সময় থেকে আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারছি না। একটার পর একটা সমস্যা ও সংকটে আমাদের খামারিদের অবস্থা দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে চাওয়া, দুধের দাম বাড়ানো ও সরকারি উদ্যোগে খামারিদের রেশনিং পদ্ধতিতে পশুখাদ্য সরবরাহ করার ব্যবস্থা করা হোক।’

সংগঠনের সভাপতি লতিফুর ইসলাম মিলন বলেন, ‘জেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার খামারি রয়েছেন। গত সাত থেকে আট মাসে অনেকেই তাঁদের খামার থেকে গরু বিক্রি করে দিয়েছেন। পশুখাদ্যের দাম অস্বাভাবিক বাড়ায় আমাদের প্রান্তিক খামারিরা সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন। সামনে কোরবানির ঈদ, তারপরও খামারিরা গরু ধরে রাখতে পারছে না। আর কত দিন আমরা ভর্তুকি দিয়ে চলব? সরাসরি খামারি পর্যায়ে রাষ্ট্রীয় সহায়তা দিতে হবে। একই সঙ্গে বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে উৎপাদিত দুধের মূল্য বৃদ্ধি করতে হবে।’

ঘেরাও কর্মসূচি চলাকালে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সহসভাপতি মুইব ইবনে ফেরদৌস শান্ত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম, ওয়েজ করনী বাবু, খামারি শরিফুল ইসলাম, আজম পারভেজ, মোখলেছুর রহমান প্রমুখ।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় পরিচালক ওয়ালিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘খামারিদের দাবি-দাওয়ার বিষয়গুলো নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব। এখানে আমার করার কিছু নেই। তাঁদের দাবিগুলো সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ভেবে দেখবে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে খামারিদের দাবিগুলোর যৌক্তিকতা রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত