Ajker Patrika

গলতে পারে গ্রিনল্যান্ডের সব বরফ, ২৫ ফুট পানিতে তলাবে সৈকত!

গলতে পারে গ্রিনল্যান্ডের সব বরফ, ২৫ ফুট পানিতে তলাবে সৈকত!

বরফ গলার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এখন খুব সাধারণ ঘটনা। গ্রিনল্যান্ডের বরফের বেলায়ও এটি খুব ভালোভাবে খাটে। তবে গ্রিনল্যান্ড নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখন যে আশঙ্কাটি করছেন সেটা রীতিমতো ভীতিপ্রদ। তাঁদের ধারণা কোনো এক সময় গ্রিনল্যান্ডের বেশির ভাগ অংশ জুড়ে বিছিয়ে থাকা বরফের পুরো চাদরটাই গলে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যেতে পারে ২০ থেকে ২৫ ফুট।

নতুন এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত ১১ লাখ বছরের একটি উষ্ণ সময়ের মধ্যে গ্রিনল্যান্ডের বিশাল বরফের চাদরের শুধু প্রান্ত নয় কেন্দ্র পর্যন্ত গলে যায়। এতে বহু প্রাণী ও উদ্ভিদের বাসস্থান একটি শুষ্ক এবং অনুর্বর তুন্দ্রা অঞ্চল তলিয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সে গত ৫ আগস্ট প্রকাশিত এক নতুন গবেষণাপত্রে এ সব তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ।

শুরুর দিকের এই বরফ গলনের সময় এখনকার তুলনায় কম গ্রিনহাউস গ্যাস ছিল পরিবেশে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এখন বায়ুমণ্ডলে বেশি কার্বন-ডাই-অক্সাইড থাকায় আগের ধারণার চেয়ে বরফ গলার ঝুঁকি আরও বেশি।

‘গ্রিনল্যান্ডে এভাবে বরফে আচ্ছাদিত অবস্থায় আছে প্রায় ২৭ লাখ বছর ধরে। আর এখন আমাদের হাতে কিছু প্রমাণ এসেছে, যাতে মনে হয় বরফের এ চাদরটি ভঙ্গুর।’ বলেন ভারমন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিজ্ঞানী ও নতুন এই গবেষণায় যৌথভাবে নেতৃত্ব দেওয়া পল বিয়ারম্যান। 

গবেষকেরা ২০১৪ সাল থেকে গ্রিনল্যান্ড বরফের চাদরের নিচের উপাদান নিয়ে গবেষণা করছেন। তাঁরা একটি বরফের তলদেশ থেকে পলি সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেন। এর নাম দেওয়া হয় জিআইএসপি২। প্রায় ৩০ বছর আগে বরফের চাঁইয়ের কেন্দ্র থেকে এটি সংগ্রহ করা হয়।

আর এক আউন্সের এই পলি নমুনাতে আছে গ্রিনল্যান্ডের অতীত কেমন ছিল তার সূত্র। যখন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে রাখা হয় ছোট্ট এই কণাটিকে, তখন একটি পোকার চোখ, একটি আর্কটিক পপি বীজ, উইলো গাছের অংশ, ছত্রাক এবং শেওলার অস্তিত্ব প্রকাশ পায়। বিয়ারম্যান একে উল্লেখ করেছেন, ‘বরফের নিচের হিমায়িত বাস্তুতন্ত্র’ বলে।

গবেষকদের ধারণা, এই জীবাশ্ম বা ফসিলগুলো নিশ্চিত করে গ্রিনল্যান্ড তার ৯০ শতাংশ বরফের চাদর হারিয়ে গিয়েছিল অতীতে।

‘বরফের চাদের মাঝখানে এই ফসিল পাওয়া হলো অতীতে গ্রিনল্যান্ডের বরফ অদৃশ্য হওয়ার নিশ্চিত প্রমাণ,’ বলেন বিয়ারম্যান, ‘আর বরফের চাদরের মাঝখানের অংশ হারানোর অর্থ এর পুরোটাই হারানো।’

একসময় গ্রিনল্যান্ডের কেন্দ্র ছিল এমন পাথুরে তুন্দ্রা অঞ্চলের মতোই। উত্তর-পশ্চিম গ্রিনল্যান্ড থেকে তোলা। ছবি: পল বিয়ারম্যানতিনি বলেন, অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য ‘ভঙ্গুর গ্রিনল্যান্ড’ নামের তত্ত্বটিকে সমর্থন করে। এর অর্থ মানুষের প্রভাব ছাড়াই গঠনের পর প্রাকৃতিকভাবে অন্তত একবার বরফের এ চাদর গলেছে।’

ছয় লাখ ৫৬ হাজার বর্গমাইলের গ্রিনল্যান্ডের বরফের চাদর দ্বীপটির ৮০ শতাংশ এলাকা নিয়ে আছে। 

গ্রিনল্যান্ডের বরফের ক্ষতির মানচিত্র তৈরি করা নাসা জানিয়েছে, বলেছে যে বরফের এই চাদর ‘গত কয়েক বছরে দ্রুত হ্রাস পেয়েছে’ এবং বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা প্রতি বছর প্রায় ০.০৩ ইঞ্চি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। বিয়ারম্যানের মতে বর্তমানে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির প্রথম কারণ গ্রিনল্যান্ডের গলতে থাকা বরফ।

এই বিজ্ঞানী বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়নের প্রাথমিক বছরগুলিতে, পর্বতের হিমবাহগুলি বেশিরভাগ বরফ গলা এবং মহাসাগরে পানি যোগ করার কারণ ছিল। তবে এখন এ কাজটি করছে গ্রিনল্যান্ড।’

যদিও পুরো গ্রিনল্যান্ডের বরফ গলে যাওয়ার জন্য কয়েক হাজার বছরও লাগতে পারে, তবে এর পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে জানান। লাখ লাখ মানুষ তাদের বাড়িঘর এবং ব্যবসা হারাতে পারে। আমাদের পছন্দের এবং প্রিয় স্থানগুলি হারিয়ে যাবে।

‘এখন আমাকে যদি জিজ্ঞাসা করেন কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ? আমি বলব, আপনার প্রিয় সৈকতটি ২৫ ফুট জলের নিচে চলে গেছে, এটা একবার চিন্তা করুন তো!’ বলেন বিয়ারম্যান

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বায়ুদূষণ বাড়ছে ঢাকায়, ঝুঁকিতে শিশু-বয়স্কদের স্বাস্থ্য

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ২০
ছবি: আজকের পত্রিকা
ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানী শহর ঢাকায় দূষণ কমছেই না। বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে ঢাকা। প্রতিবছর শীতকাল শুরুর আগেই ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়তে শুরু করে।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ রোববার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল ১৬৯। সে হিসাবে বাতাসের মান ‘সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর’। এই স্কোর নিয়ে ঢাকা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে চতুর্থ স্থানে রয়েছে।

একিউআই মানদণ্ড অনুসারে, ১৫১ থেকে ২০০ স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনা করা হয়। এই স্তরে সাধারণ জনগোষ্ঠীর সদস্যরা অসুস্থতা অনুভব করতে পারেন এবং সংবেদনশীল গোষ্ঠীর (যেমন শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগী) জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে, এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, ৩৮০ একিউআই স্কোর নিয়ে পাকিস্তানের লাহোর এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এই শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ (Hazardous) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে।

আজ সকাল ৮টা ২০ মিনিটে আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ ১০ দূষিত শহরের তালিকার বাকি শহরগুলো হলো —

(বায়ুমানের দ্রুত পরিবর্তনের কারণে র‍্যাঙ্কিংয়ে পরিবর্তন হতে পারে)

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ভারতের দিল্লি (২৯১, খুবই অস্বাস্থ্যকর)। তৃতীয় স্থানে রয়েছে উজবেকিস্তানের তাসখন্দ (১৭৫, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)। চতুর্থ স্থানে রয়েছে ঢাকা এবং পঞ্চম স্থানে পাকিস্তানের করাচি (১৬১,সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।

শীর্ষ দশের অন্যান্য শহর:

৬. কায়রো, মিসর (১৫৮)

৭. বাকু, আজারবাইজান (১৫৭)

৮. কাম্পালা, উগান্ডা (১৫২)

৯. দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত (১৪৯)

১০. কলকাতা, ভারত (১৪৩)

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

নিম্নচাপ শক্তিশালী হয়ে রূপ নিতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে, ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১৩: ২২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

ঢাকাসহ সারা দেশে বৃষ্টির প্রবণতা কমে এসেছে। ফলে আবহাওয়া শুষ্ক, বেড়েছে তাপমাত্রা। তবে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে নিম্নচাপ। এটি গভীর নিম্নচাপ থেকে আরও শক্তিশালী হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। এর প্রভাবে ২৮ অক্টোবর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত নিম্নচাপটি পশ্চিম-উত্তর ও পশ্চিম-দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তর ও পশ্চিম-দক্ষিণে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।

নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।

এ জন্য চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

আজ রাজধানী ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকাসহ সারা দেশে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকলেও আবহাওয়া শুষ্ক থাকবে। তবে চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। কাল সোমবার থেকে আবহাওয়া প্রায় একই রকম থাকবে। তবে ২৮ অক্টোবর সন্ধ্যা থেকে চট্টগ্রাম ছাড়াও রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এ সময় সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।

বৃষ্টির এই ধারা ২৯ অক্টোবরও অব্যাহত থাকতে পারে। ৩০ অক্টোবর থেকে আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তবে গভীর নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলেও এটির বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা কম বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। আজ সকালে আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, গভীর নিম্নচাপ থেকে ঘূর্ণিঝড় যা-ই হোক না কেন, আপাতত এর গতিবিধিতে মনে হচ্ছে এটি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এর প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ মেঘলা থাকলেও বৃষ্টির দেখা মিলবে না

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৫৪
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ শনিবার ঢাকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আজকের আবহাওয়া মূলত শুষ্ক থাকতে পারে এবং আকাশ থাকবে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, বর্তমানে রাজধানী এবং এর আশপাশ এলাকার ওপর দিয়ে উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হচ্ছে।

আজ সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৮৮ শতাংশ।

আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেখানে গতকালকের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় কোনো বৃষ্টির রেকর্ড করা হয়নি, যার ফলে আবহাওয়া শুষ্ক থাকার প্রবণতা বজায় রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

শুষ্ক দিন শুরু: সকাল থেকেই ঢাকার বাতাস ‘অস্বাস্থ্যকর’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ৫৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা আবারও বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান নিয়েছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ছিল ১৬৯। সে হিসাবে বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’। এই স্কোর নিয়ে ঢাকা বর্তমানে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে দূষিত শহরগুলোর মধ্যে পঞ্চম স্থানে রয়েছে।

প্রতিবছর শীতকাল শুরুর আগেই ঢাকার বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়তে শুরু করে।

একিউআই মানদণ্ড অনুসারে, ১৫১ থেকে ২০০ স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বিবেচনা করা হয়। এই স্তরে সাধারণ জনগোষ্ঠীর সদস্যরা অসুস্থতা অনুভব করতে পারেন এবং সংবেদনশীল গোষ্ঠীর (যেমন শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসযন্ত্রের রোগী) জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকি অনেক বেশি থাকে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে, এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, লাহোর (পাকিস্তান) ৩৬০ একিউআই স্কোর নিয়ে এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে। এই শহরের বাতাসকে ‘বিপজ্জনক’ (Hazardous) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়েছে। এরপরে রয়েছে ভারতের দিল্লি ও কলকাতা।

শীর্ষ দূষণের ১০ শহর:

আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ সকাল ৯টার কাছাকাছি সময়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি দূষিত শহরের তালিকা নিচে দেওয়া হলো (বায়ুমানের দ্রুত পরিবর্তনের কারণে র‍্যাঙ্কিংয়ে পরিবর্তন হতে পারে) :

তালিকায় শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর (৩৬০, বিপজ্জনক), এরপরে আছে ভারতের দুটি শহর—দিল্লি (২৭০, খুবই অস্বাস্থ্যকর) এবং কলকাতা (১৮৯, খুবই অস্বাস্থ্যকর)। এরপর ১৭৮ নিয়ে চীনের রাজধানী বেইজিং রয়েছে চতুর্থ অবস্থানে।

শীর্ষ দশের অন্যান্য শহর:

৫. ঢাকা, বাংলাদেশ (১৬৯)

৬. তাশকেন্ত, উজবেকিস্তান (১৫৬)

৭. করাচি, পাকিস্তান ( ১৫৪)

৮. কাম্পালা, উগান্ডা (১৩৯)

৯. দুবাই, সংযুক্ত আরব আমিরাত ( ১২৯)

১০. কুয়েত সিটি, কুয়েত (১১৭)

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত