Ajker Patrika

দীঘলিয়ায় দলিল লেখকদের কল রেকর্ডে ঘুষ কেলেঙ্কারি ফাঁস 

দিঘলিয়া (খুলনা) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৩ জানুয়ারি ২০২২, ১৩: ৪৪
Thumbnail image

খুলনার দীঘলিয়া উপজেলার দলিল লেখকদের কথোপকথনের কল রেকর্ডে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ঘুষ কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস হয়েছে। বিশেষ করে এই কথোপকথনে দলিল লেখকেরা রেজিস্ট্রি বাবদ প্রতি লাখে সাব-রেজিস্ট্রারকে ৫০০ টাকা করে ঘুষ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। একই সঙ্গে তাঁরা এভাবে আর ঘুষ দেবেন না বলেও ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্তের বিষয়েও মোবাইলে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। 

জানা যায়, দলিল লেখকদের বিষয়টি ফাঁস হওয়ায় সাব-রেজিস্ট্রার দলিল করার ক্ষেত্রে দীর্ঘ বছরের প্রচলিত নিয়ম পরিবর্তন করে ‘কাগুজে নিয়ম’ চালু করেন। আর এ কারণেই ক্ষুব্ধ হয়ে দলিল লেখকেরা প্রতিবাদস্বরূপ দলিল লেখা বন্ধ করে দেন। এভাবে সাব-রেজিস্ট্রার ও দলিল লেখকদের পরস্পরবিরোধী অবস্থানের কারণে দীঘলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গত তিন সপ্তাহ যাবৎ দলিল রেজিস্ট্রি বন্ধ রয়েছে। 

অন্যদিকে, সাব-রেজিস্ট্রার ও দলিল লেখকদের পরস্পরবিরোধী অবস্থানের মধ্যেই হঠাৎ করে গতকাল বুধবার দলিল লেখকেরা সংবাদ সম্মেলন করে স্ববিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। কল রেকর্ডে সাব-রেজিস্ট্রার শুভ্রা রাণী বাড়ৈর বিরুদ্ধে ঘুষের আলোচনা হয়। কথোপকথনে দলিল লেখকেরা সবাই সাব-রেজিস্ট্রারের ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি এক বাক্যে স্বীকার এবং তা বন্ধের ব্যাপারে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। 

কিন্তু হঠাৎ করে কী কারণে তাঁরা সংবাদ সম্মেলন করে স্ববিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন, সে বিষয় নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে দীঘলিয়া দলিল লেখক সমিতির সভাপতি মোড়ল মফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সমিতির নামে দলিল লেখকদের কর্মবিরতির বিষয়টি স্বীকার করেন। 

দীঘলিয়া সাব-রেজিস্ট্রার শুভ্রা রাণী বাড়ৈ ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তবে অফিসে লেনদেনের বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার না করলেও ‘সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের বিষয়টি বোঝেন তো’ বলে এড়িয়ে যান। 

এ বিষয়ে জেলা রেজিস্ট্রার দিপক কুমার সরকার বলেন, দীঘলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রির জন্য অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে দলিল লেখকদের একটি রসিদ প্রদানের কথা বলা হয়েছে। সেখানে অর্থ গ্রহণের সব লিপিবদ্ধ থাকবে। 

প্রসঙ্গত, এরই মধ্যে দীঘলিয়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দলিলের ভ্রম (ভুল) সংশোধনের জন্য অর্থ দাবি এবং অসদাচরণের অভিযোগের তদন্ত শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি দীঘলিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। তদন্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর সাব-রেজিস্ট্রার মো. আনোয়ার হোসেন। অভিযোগ রয়েছে, সাব-রেজিস্ট্রার শুভ্রা রাণী বাড়ৈ এবং অফিসের পেশকার (কেরানি) মো. আব্দুল গণি ১৩টি দলিলের ভুল সংশোধনের জন্য দলিলপ্রতি ৫ হাজার টাকা অর্থ দাবি করেন। একই সঙ্গে দলিল লেখক ফেরদাউস লিটুর বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত