Ajker Patrika

কানাডায় মুসলিম হত্যায় বিক্ষোভ

কানাডায় মুসলিম হত্যায় বিক্ষোভ

ঢাকা: কানাডায় একই পরিবারের চার মুসলিম সদস্যকে ট্রাক চাপা দিয়ে হত্যার প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ রাস্তা নেমে এসেছেন। গত শুক্রবার দেশটির ওন্টারিওর এর লন্ডন শহরে ‘ঘৃণাকারীদের এই দেশে কোনো ঠাঁই নেই’ প্লাকার্ড নিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। এই হত্যাকাণ্ডকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও।

স্ত্রী, দুই ছেলে মেয়ে ও মাকে নিয়ে গত রোববার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে হাটতে বের হয়েছিলেন সালমান আফজাল। ওন্টারিওর লন্ডন শহরে রাস্তা পারাপারের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ঠিক এমন সময় ২০ বছর বয়স্ক নাথানিয়েল ভেলটম্যান সজোরে তাঁদের ওপর ট্রাক উঠিয়ে দেন। ট্রাকে পিষ্ট হয়ে সালমান আফজাল, স্ত্রী মাদিহা, মেয়ে ইয়ামনা ও ৭৪ বছর বয়স্ক মা মারা যান। আর নয় বছরের ছেলে ফায়েজ মারাত্মক আঘাত পায়। ফায়েজ বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। ন্যাথানিয়েল ভেলটম্যান শুধু মুসলিম বিদ্বেষের কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁদের হত্যা করেন। অন্টেনিও পুলিশ একটি শপিং মলের পার্কিং এলাকা থেকে ভেলটম্যানকে আটক করেন।

তদন্তকারী পুলিশ কর্মকর্তা পল রাইট বলেন, ‘এটি পূর্ব পরিকল্পিত এবং বিদ্বেষ থেকে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’

রোববারের এই হত্যাকাণ্ড কানাডার সকল মানুষকে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। বিশেষ করে ইসলাম বিদ্বেষ, ক্রমবর্ধমান বর্ণবাদ ও ঘৃণা থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সামাল দিতে কানাডার নীতি নির্ধারকদের প্রতি জোরালো দাবিতে পরিণত হয়েছে।

এই জঘন্য মুসলিম হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে গত শুক্রবার হাজার হাজার মানুষ প্ল্যাকার্ড নিয়ে রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। হত্যাকাণ্ডের স্থান থেকে সাত কিলোমিটার বিক্ষোভ মিছিল করে এই ঘৃণ্য কর্মের প্রতিবাদ জানান কানাডার বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণের মানুষ। মিছিলে অংশ নেওয়া আব্দুল্লাহ আল জারাদ বলেন, ‘আমার এই মিছিলে কতজন অংশ নিলাম সেটা বড় বিষয় নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো লন্ডনের সকল ধর্ম, বর্ণের মানুষ রাস্তায় নেমে একসঙ্গে এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাচ্ছে। ঘৃণাকারীদের এ দেশে কোনো ঠাঁই নেই।’

লন্ডনে প্রায় ৩০ হাজার মুসলমানের বাস। মর্মান্তিক এই হত্যাকাণ্ডের স্মরণে মিছিল শেষে সবাই এক মিনিট নীরবতা পালন করেন এবং ঘটনার নিন্দা জানান। ওন্টারিও ছাড়াও টরেন্টো, মন্ট্রিল, অটোয়া ও কুইবেক শহরে এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সমাবেশ করতে করেছে কানাডার জনগণ।

মুসলিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি দাগ কেটেছে রাজনীতিবিদদের মনেও। রাজনীতিবিদেরা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ইসলামভীতি ও বর্ণবাদী আচরণ কঠোরভাবে দমন করতে সরকারে প্রতি আহ্বান জানান।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেন, ‘এটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। উগ্রপন্থী ও অনলাইনে বিদ্বেষ ছড়ানোদের কঠোরভাবে দমন করার অঙ্গীকার করছি।’

ভেলটম্যানকে গত বৃহস্পতিবার কোর্টে তোলা হয়। আগামীকাল আবারও তাঁকে কোর্টে আনা হবে। তাঁর বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে একটি হত্যাচেষ্টার মামলা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত