Ajker Patrika

৭ হাঁড়ি ‘কাঁচা পয়সা’ ও স্বর্ণমুদ্রার লোভে ১৩ লাখ খোয়ালেন ব্যবসায়ী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৩, ২০: ২৬
Thumbnail image

তিন হাঁড়ি কাঁচা পয়সা ও চার হাঁড়ি স্বর্ণমুদ্রার লোভে পড়ে ১৩ লাখ টাকা খুইয়েছেন এক ব্যবসায়ী। মো. ইয়াছিন (২৬) নামে ওই ব্যবসায়ী কিশোরগঞ্জের পাটধা গাবতলী এলাকায় ব্যবসা করেন। 

ইয়াছিন গত ৪ এপ্রিল ব্যবসায়িক কাজে ঢাকায় আসেন। মগবাজারের সুইট স্লিপ আবাসিক হোটেলে ওঠেন। সেখানে থাকাকালীন গত ৫ এপ্রিল রাত ১২টার দিকে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে তাঁর মোবাইল নম্বরে ফোনকল আসে। ইয়াছিন রিসিভ করার পর অপর পাশ থেকে বলে— তুমি সাত হাঁড়ি সম্পদ পাবে, এর মধ্যে তিন হাঁড়ি কাঁচা পয়সা, চার হাঁড়ি স্বর্ণমুদ্রা। এর জন্য ‘এই গোপন সংবাদের কথা কাউকে বলা যাবে না’সহ পাঁচটি শর্ত দেয় অপর পাশের ব্যক্তি।

ইয়াছিন সব শর্তে রাজি হন। পরের দিন ৬ এপ্রিল একই নম্বর থেকে ফোনকল আসে। ইয়াছিনকে শর্ত অনুযায়ী মাজারে সাতটি জায়নামাজের জন্য ৪৭ হাজার টাকা বিকাশ করে পাঠান। এরপর ইফতারের কথা বলে ১ লাখ ৬৫ হাজার, স্বর্ণের পুতুলের কথা বলে টাঙ্গাইল এলেঙ্গা ব্রিজের নিচে ৫ লাখ টাকা রেখে আসতে বলে। ইয়াছিন কথামতো সেই টাকা দেন। এরপর স্বর্ণের তিনটি হাঁড়ি ভেঙে গেছে বলে সাপকে দুধ খাওয়ানোর জন্য ১ লাখ ৫৩ হাজার টাকা, হাঁড়ির ভেতর স্বর্ণ জমাট বেঁধে গেছে বলে তিন ভরি স্বর্ণের দাম ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং আরও প্রলোভন দেখিয়ে ৩ লাখ ৬০ হাজার এবং সর্বশেষ ১ লাখ টাকা দেন ব্যবসায়ী ইয়াছিন। এপ্রিল ও মে মাসজুড়ে মোট ১৩ লাখ ২০ হাজার টাকা দেন তিনি।

সবশেষ এক লাখ টাকা দেওয়ার পর ইয়াছিন বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ইয়াছিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিষয়টি আমি প্রথমে বুঝতে পারিনি। ফোনে এমনভাবে কথা বলত, মনে হয়েছে সে জিনের বাদশাহ। এ রকম চক্করে আমি কখনো পড়িনি। ব্যবসার সব টাকা আমি তাদের দিয়ে দিয়েছি।’ 

প্রতারণার বিষয়টি বোঝার পর গত ৮ জুন রাজধানীর রমনা থানায় ইয়াছিন একটি প্রতারণার মামলা করেন। মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ তদন্ত শুরু করে। মোবাইল ফোন নম্বরের সূত্র ধরে গত ৯ জুন গাইবান্ধা থেকে মো. উজ্জ্বল মিয়া নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে। উজ্জ্বলের বাড়ি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের কমলা নারায়ণপুর গ্রামে। 

এ ব্যাপারে ডিবি সাইবারের অতিরিক্ত উপকমিশনার সাইফুর রহমান আজাদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উজ্জ্বল দেড় বছর ধরে এমন প্রতারণা করছে। সে তার ভাই রুবেলের কাছ থেকে এই প্রতারণা শিখেছে। জিনের বাদশাহ পরিচয়ে ফোন দেয়। সহজ সরল অনেকেই তার ফাঁদে পা দেয়। সে তার অপরাধের কথা স্বীকার করেছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত