Ajker Patrika

মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকাণ্ডের ৬ বছর পর রহস্য উদঘাটন ছাড়াই আদালতে প্রতিবেদন জমা

প্রতিনিধি
মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকাণ্ডের ৬ বছর পর রহস্য উদঘাটন ছাড়াই আদালতে প্রতিবেদন জমা

সখীপুর (টাঙ্গাইল): একজন বৃদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা হঠাৎ (৬৬) বাড়ি থেকে নিখোঁজ। নিখোঁজের পাঁচদিন পর বাড়ির কাছের একটি বনের পাশে পাওয়া যায় গলা, পায়ের রগ ও শরীরের বিশেষ অঙ্গ কাটা ক্ষত-বিক্ষত লাশ। পরে নিহতের ছেলে রফিকুল ইসলাম অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় মামলা করেন। ২০১৪ সালের নভেম্বরে টাঙ্গাইলের সখীপুরে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, ২০১৪ সালের ২৭ নভেম্বর বিকেলে উপজেলার গড়গোবিন্দপুর গ্রামের গ্যাস স্টেশন এলাকার নিজ বাড়ি থেকে মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামাল নিখোঁজ হন। পরে ১ ডিসেম্বর এলাকার একটি নির্জন বনের পাশ থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ মামলা তদন্ত করেন সখীপুর থানা পুলিশের দু’জন উপ-পরিদর্শক (এসআই), টাঙ্গাইল ডিবি’র চার কর্মকর্তা, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশেনের (পিবিআই) দুই কর্মকর্তা ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দুই কর্মকর্তা। এ ১০ কর্মকর্তা মিলে ৬ বছর ধরে তদন্ত করেও ঘটনার কোনো কুলকিনারা করতে পারেননি। অবশেষে রহস্য উদঘাটন ছাড়াই সিআইডি’র পরিদর্শক আতাউর রহমান চলতি বছরের মার্চে মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেন। গত ৫ মে (বুধবার) মামলার বাদী রফিকুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

একটি হত্যাকাণ্ডের কোনো তথ্য উদঘাটন করতে না পারা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার এম ওসমান গণি বলেন, ‘পুলিশ, ডিবি, সিআইডিও যদি হত্যার রহস্য বের করতে না পারে, আমরা আর কোথায় যাবো!’ মুক্তিযোদ্ধারা বলছেন, ‘তবে কি টাঙ্গাইলের সখীপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামালের খুনের ঘটনা একটি পারফেক্ট হত্যাকাণ্ড!’

তবে নিহতের ছেলে রফিকুল মনে করেন, কোনো হত্যাকাণ্ডই পারফেক্ট হতে পারেনা। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা হত্যার রহস্য উন্মোচনে যথেষ্ট আন্তরিক ছিল না। অধিকাংশ কর্মকর্তা তাঁর সঙ্গে কথাই বলেনি; সন্দেহভাজন হিসেবে যাদের নাম বলা হয়েছে, তাদের কাউকে আটক বা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি বলেও অভিযোগ তাঁর। তবে, কোন একদিন অপরাধী ঠিকই ধরা পড়বে বলে তিনি আশাবাদী। খুনের রহস্য উদঘাটনে তিনি আবার আদালতে আবেদন করবেন।

এ মামলার সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডি’র পরিদর্শক আতাউর রহমান সাংবাদিকদের জানান, আমার আগেও বিভিন্ন সংস্থার ৯জন কর্মকর্তা মামলাটি তদন্ত করেছেন। এক বছর আগে মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। সাক্ষ্য প্রমাণ ও তথ্য উপাত্ত না থাকায় মামলাটির প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। নতুন করে কোনো সূত্র পাওয়া গেলে পুনরায় তদন্ত চলতে পারবে।

প্রসঙ্গত, মোস্তফা কামাল ছিলেন টাঙ্গাইলের সখীপুরে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক। ১৯৭১ সালে সখীপুরে প্রথম যে ১০জন মুক্তিযোদ্ধা সংঘবদ্ধ হন, তাঁদের মধ্যে তিনি ছিলেন। পরে তাঁরা কাদেরিয়া বাহিনীতে যোগ দেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত