কামরুল হাসান

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন, কিন্তু ফোনটা রাখতে গিয়ে তাঁকে খুবই চিন্তিত মনে হলো। তাঁর অবস্থা দেখে জানতে চাইলাম, খারাপ কোনো খবর? ভদ্রলোক অনেক দিনের চেনা, তারপরও কাউকে না বলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বললেন, এক কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ‘অঘটন’ হয়েছে। অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। কী হয়েছে–প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, ডাকাতির মতো বড় কোনো ঘটনা।
‘ডাকাতি’ শব্দটি ক্রাইম রিপোর্টারদের কাছে পানি থেকে মাছকে ডাঙায় তুলে আবার পানিতে ছেড়ে দেওয়ার মতো। মাথায় উত্তেজনা, আমাকে আর পায় কে। খুঁটে খুঁটে জানতে চাইলাম পুরো ঘটনা। নাছোড়বান্দার মতো অবস্থা দেখে ভদ্রলোক বললেন, যে কমিশনারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে, তাঁর নাম জহিরুল হক। তিনি তখন শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক। কাস্টমসের কমিশনাররাই ওই পদে নিয়োগ পেতেন। জহিরুল হক তখন থাকতেন সিদ্ধেশ্বরী রোডে ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। ঘটনা সে বাসায়ই। সেটা ছিল ২০০৩ সালের ২৬ মে।
বেইলি রোডের শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয় থেকে জহিরুল হকের বাসা হাঁটা দূরত্বে। সেই কর্মকর্তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে যেতে মনোয়ারা হাসপাতালের আগে যে বিশাল কমপ্লেক্সটি, তারই নাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার কমপ্লেক্স। এর উল্টো দিকে হাফিজ এস্টেট নামের আরেকটি বড় কমপ্লেক্স। কিন্তু এত আশা নিয়ে সেখানে গিয়ে কোনো লাভ হলো না। কমপ্লেক্সটির নিরাপত্তাকর্মীরা কোনোভাবেই ভেতরে ঢুকতে দিলেন না। অনেক অনুরোধের পর একজন বললেন, রমনা থানা-পুলিশ পাঁচ নিরাপত্তারক্ষীকে ধরে নিয়ে গেছে, যা বলার পুলিশই বলবে। কমিশনার জহিরুল হকের অফিস ও বাসার সব নম্বর বন্ধ, তাঁকেও পেলাম না।
গেলাম রমনা থানায়। তখন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছিলেন মাহবুবুর রহমান, দেখতে যেমন সুদর্শন, তেমনি ভালো ব্যবহার। গিয়ে দেখি, অনেক লোক থানার ভেতরে, ওসি তাঁদের নিয়ে কথা বলছেন। আমাকে দেখে একটু অপেক্ষা করতে বললেন। ঘণ্টাখানেক পর ওসি আমাকে তাঁর কামরায় ডেকে নিয়ে বললেন, জহিরুল হকের বাসায় একদল ডাকাত ঢুকেছিল। জহিরুল হক নিজেও তখন বাসায় ছিলেন। ডাকাত দল তাঁকেসহ পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে একটি রুমে আটকে রাখে। এরপর তিনটা বড় স্যুটকেস নিয়ে চলে যায়। তারা এত দ্রুত সরে পড়ে যে কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। ডাকাত দল এসেছিল একটি বড় গাড়ি নিয়ে। তবে বাসায় ঢোকার সময় সবাই মুখোশ পরে ছিল। সে সময় অবশ্য সিসি ক্যামেরার এত প্রচলন ছিল না। ওসি আরও বললেন, জহিরুল হক তাঁর কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন; কিন্তু লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি।
আমার প্রশ্ন, সেই তিন স্যুটকেসে কী ছিল? ওসি মাহবুব বললেন, সেই ব্যাগে সম্ভবত টাকার বান্ডিল ছিল। কত টাকা হবে? বললেন, তিন-চার কোটি হতে পারে। এত টাকা কোনো মানুষের বাসায় থাকতে পারে, তখন পর্যন্ত সেটা আমার ধারণায় ছিল না। তবে ওসি মাহবুব বারবার অনুরোধ করলেন, মামলা না হওয়া পর্যন্ত আমি যেন টাকার কথা না লিখি। কারণ, বাদী তখন পর্যন্ত থানায় টাকার কথা লিখিতভাবে জানাননি।
পরের দিন সব পত্রিকায় কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ডাকাতির খবর ছাপা হলো, তবে ততটা জোরালো নয়। রিপোর্টে যা ছিল, সবই ভাসা ভাসা। কাস্টমস কর্মকর্তা কারও সঙ্গে কোনো কথাও বলেননি। রমনা থানায় ডাকাতির মামলা হলো, তাতেও টাকার কথা নেই। সে খবর ঢাকায় অবস্থানরত কাস্টমস কর্মকর্তাদের মধ্যে চাউর হয়ে গেল। এক কর্মকর্তা আমাকে তাঁর অফিসে ডেকে নিয়ে বললেন, তাঁর কাছে পাকা খবর ছিল, ভ্যাট প্রত্যর্পণের এই কমিশনার একটি কোম্পানির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। সেই টাকা কোম্পানিটি তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে দেয়। এরপর কোনো এক সন্ত্রাসীর কানে সে খবর পৌঁছে যায়। সেই সন্ত্রাসীই ডাকাত সেজে টাকাগুলো নিয়ে যায়। ওই কর্মকর্তা মজা করে বলেছিলেন, এখন কাস্টমস কমিশনার মামলায় সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করতে পারবেন না। কারণ, মামলায় টাকা উল্লেখ করলে তাঁকে টাকার বৈধতা দেখাতে হবে। টাকার অঙ্ক ছাড়াই মামলা করতে হবে, হলোও তা-ই।
পরের দিন ফলোআপ করতে হবে। গেলাম মহাখালীতে শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরে। ঘণ্টাখানেক বসে থাকলাম। কমিশনারের ব্যক্তিগত সহকারী চন্দনা মণ্ডল বললেন, ‘স্যার মিটিংয়ে।’ মিটিং আর শেষ হয় না। আরও কিছুক্ষণ পর চন্দনা বললেন, কমিশনার আসলে কথা বলতে চান না। নিরাশ হয়ে ফিরে এলাম। আবার গেলাম রমনা থানায়। এবারও ওসি মাহবুব একই কথা বললেন। তবে এবার তিনি বললেন, আটক করা নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে বলেছেন, তাঁরা তিনজনকে ভারী ব্যাগ নামাতে দেখেছেন। কিন্তু তাদের কাউকে চিনতে পারেননি। সেই ব্যাগে কী ছিল, সেটা তাঁরা জানেন না।
ওসি আরও বললেন, ব্যাগে যে টাকা ছিল, তা বিভিন্ন সূত্রে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, কিন্তু লিখিত কিছু তাঁর কাছে নেই। তারপর অনেক দিন তক্কে তক্কে থেকেছি, কিন্তু কমিশনার সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করেননি। অনেক দিন পর পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে মামলাটির তদন্ত শেষ করে।
ওই ঘটনার পর কাস্টমস কর্মকর্তাদের অফিসে গেলেই নানা কথা শোনা যেত। কেউ বলতেন, সেই স্যুটকেসে শুধু টাকা না, সোনাও ছিল। কেউ টাকার পরিমাণ আরও বেশি করে বলতেন। কেউ কেউ তাচ্ছিল্য করে বলতেন, ‘কারুনের ধন এভাবেই বালুতে মিশে যায়।’ আমি নিজেও অনেকবার জহিরুল হকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি; কিন্তু কেন জানি, তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
জহিরুল হকের এই ঘটনা লিখতে গিয়ে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের কয়েক বছর আগের একটি কথা মনে পড়ে গেল। ২০১৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি অমর্ত্য সেন এসেছিলেন ঢাকায় ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানবিক প্রগতি’ বিষয়ে একক বক্তৃতা করতে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সেই বক্তৃতা শুনতে হল উপচে পড়েছিল মানুষে। সে সময় টানা চার দিন আমি তাঁর সঙ্গে ছিলাম। একদিন কথার ফাঁকে জানতে চেয়েছিলাম, অর্থ কেন অনর্থের মূল হতে গেল? অর্থনীতির এই পণ্ডিত সেদিন বলেছিলেন, ‘যে অর্থ মানুষের কল্যাণে ব্যয় হয় না, সেটাই তো অনর্থ।’
আজ মনে হলো, জহিরুল হকদের মতো লোকদের কারণেই হয়তো বাংলা ভাষায় এই প্রবাদটির জন্ম হয়েছিল।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন, কিন্তু ফোনটা রাখতে গিয়ে তাঁকে খুবই চিন্তিত মনে হলো। তাঁর অবস্থা দেখে জানতে চাইলাম, খারাপ কোনো খবর? ভদ্রলোক অনেক দিনের চেনা, তারপরও কাউকে না বলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বললেন, এক কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ‘অঘটন’ হয়েছে। অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। কী হয়েছে–প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, ডাকাতির মতো বড় কোনো ঘটনা।
‘ডাকাতি’ শব্দটি ক্রাইম রিপোর্টারদের কাছে পানি থেকে মাছকে ডাঙায় তুলে আবার পানিতে ছেড়ে দেওয়ার মতো। মাথায় উত্তেজনা, আমাকে আর পায় কে। খুঁটে খুঁটে জানতে চাইলাম পুরো ঘটনা। নাছোড়বান্দার মতো অবস্থা দেখে ভদ্রলোক বললেন, যে কমিশনারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে, তাঁর নাম জহিরুল হক। তিনি তখন শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক। কাস্টমসের কমিশনাররাই ওই পদে নিয়োগ পেতেন। জহিরুল হক তখন থাকতেন সিদ্ধেশ্বরী রোডে ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। ঘটনা সে বাসায়ই। সেটা ছিল ২০০৩ সালের ২৬ মে।
বেইলি রোডের শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয় থেকে জহিরুল হকের বাসা হাঁটা দূরত্বে। সেই কর্মকর্তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে যেতে মনোয়ারা হাসপাতালের আগে যে বিশাল কমপ্লেক্সটি, তারই নাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার কমপ্লেক্স। এর উল্টো দিকে হাফিজ এস্টেট নামের আরেকটি বড় কমপ্লেক্স। কিন্তু এত আশা নিয়ে সেখানে গিয়ে কোনো লাভ হলো না। কমপ্লেক্সটির নিরাপত্তাকর্মীরা কোনোভাবেই ভেতরে ঢুকতে দিলেন না। অনেক অনুরোধের পর একজন বললেন, রমনা থানা-পুলিশ পাঁচ নিরাপত্তারক্ষীকে ধরে নিয়ে গেছে, যা বলার পুলিশই বলবে। কমিশনার জহিরুল হকের অফিস ও বাসার সব নম্বর বন্ধ, তাঁকেও পেলাম না।
গেলাম রমনা থানায়। তখন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছিলেন মাহবুবুর রহমান, দেখতে যেমন সুদর্শন, তেমনি ভালো ব্যবহার। গিয়ে দেখি, অনেক লোক থানার ভেতরে, ওসি তাঁদের নিয়ে কথা বলছেন। আমাকে দেখে একটু অপেক্ষা করতে বললেন। ঘণ্টাখানেক পর ওসি আমাকে তাঁর কামরায় ডেকে নিয়ে বললেন, জহিরুল হকের বাসায় একদল ডাকাত ঢুকেছিল। জহিরুল হক নিজেও তখন বাসায় ছিলেন। ডাকাত দল তাঁকেসহ পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে একটি রুমে আটকে রাখে। এরপর তিনটা বড় স্যুটকেস নিয়ে চলে যায়। তারা এত দ্রুত সরে পড়ে যে কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। ডাকাত দল এসেছিল একটি বড় গাড়ি নিয়ে। তবে বাসায় ঢোকার সময় সবাই মুখোশ পরে ছিল। সে সময় অবশ্য সিসি ক্যামেরার এত প্রচলন ছিল না। ওসি আরও বললেন, জহিরুল হক তাঁর কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন; কিন্তু লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি।
আমার প্রশ্ন, সেই তিন স্যুটকেসে কী ছিল? ওসি মাহবুব বললেন, সেই ব্যাগে সম্ভবত টাকার বান্ডিল ছিল। কত টাকা হবে? বললেন, তিন-চার কোটি হতে পারে। এত টাকা কোনো মানুষের বাসায় থাকতে পারে, তখন পর্যন্ত সেটা আমার ধারণায় ছিল না। তবে ওসি মাহবুব বারবার অনুরোধ করলেন, মামলা না হওয়া পর্যন্ত আমি যেন টাকার কথা না লিখি। কারণ, বাদী তখন পর্যন্ত থানায় টাকার কথা লিখিতভাবে জানাননি।
পরের দিন সব পত্রিকায় কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ডাকাতির খবর ছাপা হলো, তবে ততটা জোরালো নয়। রিপোর্টে যা ছিল, সবই ভাসা ভাসা। কাস্টমস কর্মকর্তা কারও সঙ্গে কোনো কথাও বলেননি। রমনা থানায় ডাকাতির মামলা হলো, তাতেও টাকার কথা নেই। সে খবর ঢাকায় অবস্থানরত কাস্টমস কর্মকর্তাদের মধ্যে চাউর হয়ে গেল। এক কর্মকর্তা আমাকে তাঁর অফিসে ডেকে নিয়ে বললেন, তাঁর কাছে পাকা খবর ছিল, ভ্যাট প্রত্যর্পণের এই কমিশনার একটি কোম্পানির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। সেই টাকা কোম্পানিটি তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে দেয়। এরপর কোনো এক সন্ত্রাসীর কানে সে খবর পৌঁছে যায়। সেই সন্ত্রাসীই ডাকাত সেজে টাকাগুলো নিয়ে যায়। ওই কর্মকর্তা মজা করে বলেছিলেন, এখন কাস্টমস কমিশনার মামলায় সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করতে পারবেন না। কারণ, মামলায় টাকা উল্লেখ করলে তাঁকে টাকার বৈধতা দেখাতে হবে। টাকার অঙ্ক ছাড়াই মামলা করতে হবে, হলোও তা-ই।
পরের দিন ফলোআপ করতে হবে। গেলাম মহাখালীতে শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরে। ঘণ্টাখানেক বসে থাকলাম। কমিশনারের ব্যক্তিগত সহকারী চন্দনা মণ্ডল বললেন, ‘স্যার মিটিংয়ে।’ মিটিং আর শেষ হয় না। আরও কিছুক্ষণ পর চন্দনা বললেন, কমিশনার আসলে কথা বলতে চান না। নিরাশ হয়ে ফিরে এলাম। আবার গেলাম রমনা থানায়। এবারও ওসি মাহবুব একই কথা বললেন। তবে এবার তিনি বললেন, আটক করা নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে বলেছেন, তাঁরা তিনজনকে ভারী ব্যাগ নামাতে দেখেছেন। কিন্তু তাদের কাউকে চিনতে পারেননি। সেই ব্যাগে কী ছিল, সেটা তাঁরা জানেন না।
ওসি আরও বললেন, ব্যাগে যে টাকা ছিল, তা বিভিন্ন সূত্রে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, কিন্তু লিখিত কিছু তাঁর কাছে নেই। তারপর অনেক দিন তক্কে তক্কে থেকেছি, কিন্তু কমিশনার সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করেননি। অনেক দিন পর পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে মামলাটির তদন্ত শেষ করে।
ওই ঘটনার পর কাস্টমস কর্মকর্তাদের অফিসে গেলেই নানা কথা শোনা যেত। কেউ বলতেন, সেই স্যুটকেসে শুধু টাকা না, সোনাও ছিল। কেউ টাকার পরিমাণ আরও বেশি করে বলতেন। কেউ কেউ তাচ্ছিল্য করে বলতেন, ‘কারুনের ধন এভাবেই বালুতে মিশে যায়।’ আমি নিজেও অনেকবার জহিরুল হকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি; কিন্তু কেন জানি, তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
জহিরুল হকের এই ঘটনা লিখতে গিয়ে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের কয়েক বছর আগের একটি কথা মনে পড়ে গেল। ২০১৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি অমর্ত্য সেন এসেছিলেন ঢাকায় ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানবিক প্রগতি’ বিষয়ে একক বক্তৃতা করতে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সেই বক্তৃতা শুনতে হল উপচে পড়েছিল মানুষে। সে সময় টানা চার দিন আমি তাঁর সঙ্গে ছিলাম। একদিন কথার ফাঁকে জানতে চেয়েছিলাম, অর্থ কেন অনর্থের মূল হতে গেল? অর্থনীতির এই পণ্ডিত সেদিন বলেছিলেন, ‘যে অর্থ মানুষের কল্যাণে ব্যয় হয় না, সেটাই তো অনর্থ।’
আজ মনে হলো, জহিরুল হকদের মতো লোকদের কারণেই হয়তো বাংলা ভাষায় এই প্রবাদটির জন্ম হয়েছিল।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
কামরুল হাসান

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন, কিন্তু ফোনটা রাখতে গিয়ে তাঁকে খুবই চিন্তিত মনে হলো। তাঁর অবস্থা দেখে জানতে চাইলাম, খারাপ কোনো খবর? ভদ্রলোক অনেক দিনের চেনা, তারপরও কাউকে না বলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বললেন, এক কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ‘অঘটন’ হয়েছে। অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। কী হয়েছে–প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, ডাকাতির মতো বড় কোনো ঘটনা।
‘ডাকাতি’ শব্দটি ক্রাইম রিপোর্টারদের কাছে পানি থেকে মাছকে ডাঙায় তুলে আবার পানিতে ছেড়ে দেওয়ার মতো। মাথায় উত্তেজনা, আমাকে আর পায় কে। খুঁটে খুঁটে জানতে চাইলাম পুরো ঘটনা। নাছোড়বান্দার মতো অবস্থা দেখে ভদ্রলোক বললেন, যে কমিশনারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে, তাঁর নাম জহিরুল হক। তিনি তখন শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক। কাস্টমসের কমিশনাররাই ওই পদে নিয়োগ পেতেন। জহিরুল হক তখন থাকতেন সিদ্ধেশ্বরী রোডে ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। ঘটনা সে বাসায়ই। সেটা ছিল ২০০৩ সালের ২৬ মে।
বেইলি রোডের শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয় থেকে জহিরুল হকের বাসা হাঁটা দূরত্বে। সেই কর্মকর্তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে যেতে মনোয়ারা হাসপাতালের আগে যে বিশাল কমপ্লেক্সটি, তারই নাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার কমপ্লেক্স। এর উল্টো দিকে হাফিজ এস্টেট নামের আরেকটি বড় কমপ্লেক্স। কিন্তু এত আশা নিয়ে সেখানে গিয়ে কোনো লাভ হলো না। কমপ্লেক্সটির নিরাপত্তাকর্মীরা কোনোভাবেই ভেতরে ঢুকতে দিলেন না। অনেক অনুরোধের পর একজন বললেন, রমনা থানা-পুলিশ পাঁচ নিরাপত্তারক্ষীকে ধরে নিয়ে গেছে, যা বলার পুলিশই বলবে। কমিশনার জহিরুল হকের অফিস ও বাসার সব নম্বর বন্ধ, তাঁকেও পেলাম না।
গেলাম রমনা থানায়। তখন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছিলেন মাহবুবুর রহমান, দেখতে যেমন সুদর্শন, তেমনি ভালো ব্যবহার। গিয়ে দেখি, অনেক লোক থানার ভেতরে, ওসি তাঁদের নিয়ে কথা বলছেন। আমাকে দেখে একটু অপেক্ষা করতে বললেন। ঘণ্টাখানেক পর ওসি আমাকে তাঁর কামরায় ডেকে নিয়ে বললেন, জহিরুল হকের বাসায় একদল ডাকাত ঢুকেছিল। জহিরুল হক নিজেও তখন বাসায় ছিলেন। ডাকাত দল তাঁকেসহ পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে একটি রুমে আটকে রাখে। এরপর তিনটা বড় স্যুটকেস নিয়ে চলে যায়। তারা এত দ্রুত সরে পড়ে যে কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। ডাকাত দল এসেছিল একটি বড় গাড়ি নিয়ে। তবে বাসায় ঢোকার সময় সবাই মুখোশ পরে ছিল। সে সময় অবশ্য সিসি ক্যামেরার এত প্রচলন ছিল না। ওসি আরও বললেন, জহিরুল হক তাঁর কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন; কিন্তু লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি।
আমার প্রশ্ন, সেই তিন স্যুটকেসে কী ছিল? ওসি মাহবুব বললেন, সেই ব্যাগে সম্ভবত টাকার বান্ডিল ছিল। কত টাকা হবে? বললেন, তিন-চার কোটি হতে পারে। এত টাকা কোনো মানুষের বাসায় থাকতে পারে, তখন পর্যন্ত সেটা আমার ধারণায় ছিল না। তবে ওসি মাহবুব বারবার অনুরোধ করলেন, মামলা না হওয়া পর্যন্ত আমি যেন টাকার কথা না লিখি। কারণ, বাদী তখন পর্যন্ত থানায় টাকার কথা লিখিতভাবে জানাননি।
পরের দিন সব পত্রিকায় কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ডাকাতির খবর ছাপা হলো, তবে ততটা জোরালো নয়। রিপোর্টে যা ছিল, সবই ভাসা ভাসা। কাস্টমস কর্মকর্তা কারও সঙ্গে কোনো কথাও বলেননি। রমনা থানায় ডাকাতির মামলা হলো, তাতেও টাকার কথা নেই। সে খবর ঢাকায় অবস্থানরত কাস্টমস কর্মকর্তাদের মধ্যে চাউর হয়ে গেল। এক কর্মকর্তা আমাকে তাঁর অফিসে ডেকে নিয়ে বললেন, তাঁর কাছে পাকা খবর ছিল, ভ্যাট প্রত্যর্পণের এই কমিশনার একটি কোম্পানির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। সেই টাকা কোম্পানিটি তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে দেয়। এরপর কোনো এক সন্ত্রাসীর কানে সে খবর পৌঁছে যায়। সেই সন্ত্রাসীই ডাকাত সেজে টাকাগুলো নিয়ে যায়। ওই কর্মকর্তা মজা করে বলেছিলেন, এখন কাস্টমস কমিশনার মামলায় সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করতে পারবেন না। কারণ, মামলায় টাকা উল্লেখ করলে তাঁকে টাকার বৈধতা দেখাতে হবে। টাকার অঙ্ক ছাড়াই মামলা করতে হবে, হলোও তা-ই।
পরের দিন ফলোআপ করতে হবে। গেলাম মহাখালীতে শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরে। ঘণ্টাখানেক বসে থাকলাম। কমিশনারের ব্যক্তিগত সহকারী চন্দনা মণ্ডল বললেন, ‘স্যার মিটিংয়ে।’ মিটিং আর শেষ হয় না। আরও কিছুক্ষণ পর চন্দনা বললেন, কমিশনার আসলে কথা বলতে চান না। নিরাশ হয়ে ফিরে এলাম। আবার গেলাম রমনা থানায়। এবারও ওসি মাহবুব একই কথা বললেন। তবে এবার তিনি বললেন, আটক করা নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে বলেছেন, তাঁরা তিনজনকে ভারী ব্যাগ নামাতে দেখেছেন। কিন্তু তাদের কাউকে চিনতে পারেননি। সেই ব্যাগে কী ছিল, সেটা তাঁরা জানেন না।
ওসি আরও বললেন, ব্যাগে যে টাকা ছিল, তা বিভিন্ন সূত্রে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, কিন্তু লিখিত কিছু তাঁর কাছে নেই। তারপর অনেক দিন তক্কে তক্কে থেকেছি, কিন্তু কমিশনার সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করেননি। অনেক দিন পর পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে মামলাটির তদন্ত শেষ করে।
ওই ঘটনার পর কাস্টমস কর্মকর্তাদের অফিসে গেলেই নানা কথা শোনা যেত। কেউ বলতেন, সেই স্যুটকেসে শুধু টাকা না, সোনাও ছিল। কেউ টাকার পরিমাণ আরও বেশি করে বলতেন। কেউ কেউ তাচ্ছিল্য করে বলতেন, ‘কারুনের ধন এভাবেই বালুতে মিশে যায়।’ আমি নিজেও অনেকবার জহিরুল হকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি; কিন্তু কেন জানি, তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
জহিরুল হকের এই ঘটনা লিখতে গিয়ে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের কয়েক বছর আগের একটি কথা মনে পড়ে গেল। ২০১৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি অমর্ত্য সেন এসেছিলেন ঢাকায় ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানবিক প্রগতি’ বিষয়ে একক বক্তৃতা করতে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সেই বক্তৃতা শুনতে হল উপচে পড়েছিল মানুষে। সে সময় টানা চার দিন আমি তাঁর সঙ্গে ছিলাম। একদিন কথার ফাঁকে জানতে চেয়েছিলাম, অর্থ কেন অনর্থের মূল হতে গেল? অর্থনীতির এই পণ্ডিত সেদিন বলেছিলেন, ‘যে অর্থ মানুষের কল্যাণে ব্যয় হয় না, সেটাই তো অনর্থ।’
আজ মনে হলো, জহিরুল হকদের মতো লোকদের কারণেই হয়তো বাংলা ভাষায় এই প্রবাদটির জন্ম হয়েছিল।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন, কিন্তু ফোনটা রাখতে গিয়ে তাঁকে খুবই চিন্তিত মনে হলো। তাঁর অবস্থা দেখে জানতে চাইলাম, খারাপ কোনো খবর? ভদ্রলোক অনেক দিনের চেনা, তারপরও কাউকে না বলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বললেন, এক কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ‘অঘটন’ হয়েছে। অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে গেছেন। কী হয়েছে–প্রশ্ন করতেই তিনি বললেন, ডাকাতির মতো বড় কোনো ঘটনা।
‘ডাকাতি’ শব্দটি ক্রাইম রিপোর্টারদের কাছে পানি থেকে মাছকে ডাঙায় তুলে আবার পানিতে ছেড়ে দেওয়ার মতো। মাথায় উত্তেজনা, আমাকে আর পায় কে। খুঁটে খুঁটে জানতে চাইলাম পুরো ঘটনা। নাছোড়বান্দার মতো অবস্থা দেখে ভদ্রলোক বললেন, যে কমিশনারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে, তাঁর নাম জহিরুল হক। তিনি তখন শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক। কাস্টমসের কমিশনাররাই ওই পদে নিয়োগ পেতেন। জহিরুল হক তখন থাকতেন সিদ্ধেশ্বরী রোডে ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। ঘটনা সে বাসায়ই। সেটা ছিল ২০০৩ সালের ২৬ মে।
বেইলি রোডের শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয় থেকে জহিরুল হকের বাসা হাঁটা দূরত্বে। সেই কর্মকর্তার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার অ্যাপার্টমেন্টে। সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দির থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুলে যেতে মনোয়ারা হাসপাতালের আগে যে বিশাল কমপ্লেক্সটি, তারই নাম ইস্টার্ন ফ্লাওয়ার কমপ্লেক্স। এর উল্টো দিকে হাফিজ এস্টেট নামের আরেকটি বড় কমপ্লেক্স। কিন্তু এত আশা নিয়ে সেখানে গিয়ে কোনো লাভ হলো না। কমপ্লেক্সটির নিরাপত্তাকর্মীরা কোনোভাবেই ভেতরে ঢুকতে দিলেন না। অনেক অনুরোধের পর একজন বললেন, রমনা থানা-পুলিশ পাঁচ নিরাপত্তারক্ষীকে ধরে নিয়ে গেছে, যা বলার পুলিশই বলবে। কমিশনার জহিরুল হকের অফিস ও বাসার সব নম্বর বন্ধ, তাঁকেও পেলাম না।
গেলাম রমনা থানায়। তখন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছিলেন মাহবুবুর রহমান, দেখতে যেমন সুদর্শন, তেমনি ভালো ব্যবহার। গিয়ে দেখি, অনেক লোক থানার ভেতরে, ওসি তাঁদের নিয়ে কথা বলছেন। আমাকে দেখে একটু অপেক্ষা করতে বললেন। ঘণ্টাখানেক পর ওসি আমাকে তাঁর কামরায় ডেকে নিয়ে বললেন, জহিরুল হকের বাসায় একদল ডাকাত ঢুকেছিল। জহিরুল হক নিজেও তখন বাসায় ছিলেন। ডাকাত দল তাঁকেসহ পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে একটি রুমে আটকে রাখে। এরপর তিনটা বড় স্যুটকেস নিয়ে চলে যায়। তারা এত দ্রুত সরে পড়ে যে কাউকে শনাক্ত করা যায়নি। ডাকাত দল এসেছিল একটি বড় গাড়ি নিয়ে। তবে বাসায় ঢোকার সময় সবাই মুখোশ পরে ছিল। সে সময় অবশ্য সিসি ক্যামেরার এত প্রচলন ছিল না। ওসি আরও বললেন, জহিরুল হক তাঁর কাছে মৌখিক অভিযোগ করেছেন; কিন্তু লিখিত কোনো অভিযোগ করেননি।
আমার প্রশ্ন, সেই তিন স্যুটকেসে কী ছিল? ওসি মাহবুব বললেন, সেই ব্যাগে সম্ভবত টাকার বান্ডিল ছিল। কত টাকা হবে? বললেন, তিন-চার কোটি হতে পারে। এত টাকা কোনো মানুষের বাসায় থাকতে পারে, তখন পর্যন্ত সেটা আমার ধারণায় ছিল না। তবে ওসি মাহবুব বারবার অনুরোধ করলেন, মামলা না হওয়া পর্যন্ত আমি যেন টাকার কথা না লিখি। কারণ, বাদী তখন পর্যন্ত থানায় টাকার কথা লিখিতভাবে জানাননি।
পরের দিন সব পত্রিকায় কাস্টমস কমিশনারের বাসায় ডাকাতির খবর ছাপা হলো, তবে ততটা জোরালো নয়। রিপোর্টে যা ছিল, সবই ভাসা ভাসা। কাস্টমস কর্মকর্তা কারও সঙ্গে কোনো কথাও বলেননি। রমনা থানায় ডাকাতির মামলা হলো, তাতেও টাকার কথা নেই। সে খবর ঢাকায় অবস্থানরত কাস্টমস কর্মকর্তাদের মধ্যে চাউর হয়ে গেল। এক কর্মকর্তা আমাকে তাঁর অফিসে ডেকে নিয়ে বললেন, তাঁর কাছে পাকা খবর ছিল, ভ্যাট প্রত্যর্পণের এই কমিশনার একটি কোম্পানির কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। সেই টাকা কোম্পানিটি তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে দেয়। এরপর কোনো এক সন্ত্রাসীর কানে সে খবর পৌঁছে যায়। সেই সন্ত্রাসীই ডাকাত সেজে টাকাগুলো নিয়ে যায়। ওই কর্মকর্তা মজা করে বলেছিলেন, এখন কাস্টমস কমিশনার মামলায় সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করতে পারবেন না। কারণ, মামলায় টাকা উল্লেখ করলে তাঁকে টাকার বৈধতা দেখাতে হবে। টাকার অঙ্ক ছাড়াই মামলা করতে হবে, হলোও তা-ই।
পরের দিন ফলোআপ করতে হবে। গেলাম মহাখালীতে শুল্ক রেয়াত ও প্রত্যর্পণ পরিদপ্তরে। ঘণ্টাখানেক বসে থাকলাম। কমিশনারের ব্যক্তিগত সহকারী চন্দনা মণ্ডল বললেন, ‘স্যার মিটিংয়ে।’ মিটিং আর শেষ হয় না। আরও কিছুক্ষণ পর চন্দনা বললেন, কমিশনার আসলে কথা বলতে চান না। নিরাশ হয়ে ফিরে এলাম। আবার গেলাম রমনা থানায়। এবারও ওসি মাহবুব একই কথা বললেন। তবে এবার তিনি বললেন, আটক করা নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁকে বলেছেন, তাঁরা তিনজনকে ভারী ব্যাগ নামাতে দেখেছেন। কিন্তু তাদের কাউকে চিনতে পারেননি। সেই ব্যাগে কী ছিল, সেটা তাঁরা জানেন না।
ওসি আরও বললেন, ব্যাগে যে টাকা ছিল, তা বিভিন্ন সূত্রে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন, কিন্তু লিখিত কিছু তাঁর কাছে নেই। তারপর অনেক দিন তক্কে তক্কে থেকেছি, কিন্তু কমিশনার সেই টাকার কথা আর উল্লেখ করেননি। অনেক দিন পর পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে মামলাটির তদন্ত শেষ করে।
ওই ঘটনার পর কাস্টমস কর্মকর্তাদের অফিসে গেলেই নানা কথা শোনা যেত। কেউ বলতেন, সেই স্যুটকেসে শুধু টাকা না, সোনাও ছিল। কেউ টাকার পরিমাণ আরও বেশি করে বলতেন। কেউ কেউ তাচ্ছিল্য করে বলতেন, ‘কারুনের ধন এভাবেই বালুতে মিশে যায়।’ আমি নিজেও অনেকবার জহিরুল হকের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি; কিন্তু কেন জানি, তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
জহিরুল হকের এই ঘটনা লিখতে গিয়ে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের কয়েক বছর আগের একটি কথা মনে পড়ে গেল। ২০১৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি অমর্ত্য সেন এসেছিলেন ঢাকায় ‘অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানবিক প্রগতি’ বিষয়ে একক বক্তৃতা করতে। কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সেই বক্তৃতা শুনতে হল উপচে পড়েছিল মানুষে। সে সময় টানা চার দিন আমি তাঁর সঙ্গে ছিলাম। একদিন কথার ফাঁকে জানতে চেয়েছিলাম, অর্থ কেন অনর্থের মূল হতে গেল? অর্থনীতির এই পণ্ডিত সেদিন বলেছিলেন, ‘যে অর্থ মানুষের কল্যাণে ব্যয় হয় না, সেটাই তো অনর্থ।’
আজ মনে হলো, জহিরুল হকদের মতো লোকদের কারণেই হয়তো বাংলা ভাষায় এই প্রবাদটির জন্ম হয়েছিল।
আষাঢ়ে নয় সম্পর্কিত আরও পড়ুন:

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত বুধবার ভোররাতে দুই গ্রুপ মাদক কারবারির সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ (২০)। পরিবারের দাবি, দুপক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে জাহিদের পায়ের কাছে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এ সময় স্প্লিন্টার তাঁর ঘাড় ও পিঠে বিদ্ধ হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে। সংঘর্ষের পর ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করে র্যাব, পুলিশ ও সেনাবাহিনী। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও তিনটি তাজা গুলিসহ বিপুল পরিমাণ দেশি অস্ত্র ও পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়।
জাহিদের ভগ্নিপতি মো. উজ্জ্বল জানান, রাজধানীর কল্যাণপুরে মিজান টাওয়ারে একটি মোবাইল ফোন সার্ভিসিংয়ের দোকানে কাজ করতেন জাহিদ। বুধবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সময় তাঁরা সংঘর্ষের মধ্যে পড়েন। পরে হাসপাতালে জাহিদের মৃত্যু হয়।
তবে পুলিশ বলছে, ককটেল তৈরির সময় বিস্ফোরণে নিহত হন জাহিদ।

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন
১৭ জুন ২০২৩
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

বিদেশ থেকে পার্সেল এসেছে—এমন দাবি করে কাস্টমস থেকে তা ছাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
গতকাল সোমবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের কুনিপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই তরুণের নাম মো. নূরে আলম ওরফে তুহিন (২৪)।
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
পরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাতে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা আদায় করেন নূরে আলম। টাকা পাওয়ার পর নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেন তিনি।
ভুক্তভোগী আদালতের শরণাপন্ন হলে রামপুরা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডির সাইবার পুলিশ সেন্টার। পরে নূরে আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সিআইডি জানায়, প্রতারক চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন
১৭ জুন ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

জুয়া ও প্রতারণায় জড়িত থাকায় ৫০ হাজারের বেশি এমএফএস (মোবাইলভিত্তিক আর্থিক লেনদেন সেবা) অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করেছে বিএফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট)। ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এই নম্বরগুলো স্থগিত করা হয়।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিটিআরসি ভবনে ‘অনলাইন জুয়া প্রতিরোধে করণীয়’ শীর্ষক এক সভায় বিএফআইইউর প্রতিনিধি এ তথ্য জানান।
সভায় ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, ডিজিএফআই (ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স), এনএসআই (ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স), এনটিএমসি (ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার), সিআইডি (ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট), বিএফআইইউ, এমএফএস ও মোবাইল অপারেটরদের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত) করা হয়েছে, সেগুলো থেকে কোথায় কোথায় টাকা লেনদেন করা হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
ডিজিএফআই প্রতিনিধি জানান, অনলাইন জুয়ার মতো আর্থিক নানা প্রতারণায় বেনামি সিম ব্যবহার করা হচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র ভুয়া সিম বিক্রি করছে। মানুষের আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হচ্ছে। বিকাশের অ্যাপ নকল করা হয়েছে। নাগরিকদের ডেটাবেইস ডার্ক ওয়েবে পাওয়া যাচ্ছে। এটা নিয়ে নানা অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, সরকার সতর্ক করার পরও অনেক গণমাধ্যমের অনলাইন পোর্টালে এখনো জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার করা হচ্ছে। এ ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচার করলে যেকোনো মুহূর্তে বিনা নোটিশে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের পোর্টাল বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রায় সব কটি মিডিয়ার পোর্টালে এখনো অনিরাপদ কনটেন্ট আসে। জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এখান থেকে তারা টাকা পায়।
১৯ অক্টোবর পর্যন্ত জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে গণমাধ্যমগুলো তা মানছে না বলে অভিযোগ করেন বিশেষ সহকারী। তিনি বলেন, বেশ কিছু অনলাইন পোর্টাল জুয়ার বিজ্ঞাপন ও অনিরাপদ কনটেন্ট বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আমরা যেকোনো মুহূর্তে বন্ধ করে দেব। যেহেতু একাধিক নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আমরা পাবলিকলি কোনো নোটিশ দেব না।’
অনলাইন জুয়া বন্ধে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। তিনি জানান, সরকারের হিসাবে গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৮২০টি এমএফএস নম্বর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৩৩১টি ওয়েব পোর্টালের লিংক পাওয়া গেছে।
সরকারের চ্যালেঞ্জ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, যখনই একটা নম্বর ব্লক করা হয়, তখন এর চেয়ে বেশিসংখ্যক বা সমসংখ্যক নম্বর ব্যবহার করে সিগন্যাল-হোয়াটসঅ্যাপের মতো গ্রুপগুলোয় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। আইপি পরিবর্তন করে ওয়েবসাইটের নাম একটু পরিবর্তন করা হয়। এভাবে নতুন ওয়েবসাইট বানিয়ে আবার শুরু করা হয়। এমএফএস, ওয়েব লিংক বন্ধ করার পর এ চক্রগুলো আবার অ্যাপ তৈরি ফেলে। অ্যাপগুলো অনেক ক্ষেত্রেই পাবলিশড নয়, এপিকে হিসেবে ব্যবহার করে।

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন
১৭ জুন ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৬ দিন আগেনিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

দেশে বসেই আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় ছিলেন তাঁরা। ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। শুধু নিজেরাই নন, এই দম্পতি অন্যদেরও এ কাজে যুক্ত করতেন বলে অভিযোগ। অবশেষে সেই আলোচিত যুগলকে বান্দরবানে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
আজ সোমবার ভোরে বান্দরবান সদর উপজেলার হাজীপাড়ার বালাঘাটা এলাকা থেকে সিআইডির এলআইসি ও সাইবার পুলিশ সেন্টার (সিপিসি) ইউনিটের সদস্যরা এই যুগলকে গ্রেপ্তার করেন। গ্রেপ্তার হওয়া যুগল হলেন মুহাম্মদ আজিম (২৮) ও তাঁর স্ত্রী বৃষ্টি (২৮)। আজ বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় সিআইডি।
গ্রেপ্তার আজিমের বাড়ি চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বুরুমছড়া গ্রামে এবং বৃষ্টির বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার আন্ধারমানিক (খালপাড়) গ্রামে।
সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই যুগল ২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক এক পর্নো সাইটে প্রথম ভিডিও আপলোড করেন। এরপর এক বছরের মধ্যে তাঁরা ১১২টি ভিডিও আপলোড করেছেন, যেগুলো বিশ্বব্যাপী ২ কোটি ৬৭ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে।
এই যুগল এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন যে, ২০২৫ সালের অক্টোবর মাসে আন্তর্জাতিক পারফর্মার র্যাঙ্কিংয়ে তাঁদের অবস্থান উঠে আসে অষ্টম স্থানে। ভিডিও আপলোড ছাড়াও তাঁরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম—বিশেষ করে, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও টেলিগ্রামের মাধ্যমে নিজেদের কর্মকাণ্ডের প্রচারণা চালাতেন। এসব প্ল্যাটফর্মে নতুনদের এ কাজে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হতো।
তদন্তকারীরা বলছেন, আগ্রহীদের ‘ক্রিয়েটর’ হিসেবে যুক্ত করতে তাঁরা টেলিগ্রাম চ্যানেলে নানা প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিতেন। নতুন কেউ যুক্ত হলে তাঁকে নগদ অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হতো। কেউ যোগাযোগ করলে তাঁদের ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উৎসাহিত করতেন আজিম ও বৃষ্টি।
সিআইডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই যুগল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারেননি। তবে অনলাইনে তাঁদের বিলাসবহুল জীবনধারার নানা ছবি পাওয়া যায়, যা সমাজে নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে। এসব কার্যক্রম সামাজিক ও নৈতিকভাবে যেমন উদ্বেগজনক, তেমনি দেশের প্রচলিত আইনেরও লঙ্ঘন।
অভিযানের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, ক্যামেরা, ট্রাইপডসহ ভিডিও ধারণের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। একই সঙ্গে আদালতে সোপর্দ করে রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছে সিআইডি।
সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পর্নোগ্রাফি ছড়িয়ে দেওয়ার সঙ্গে যুক্ত অন্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

ঢাকার নিউ বেইলি রোডে সুইস বেকারির পেছনের যে ভবনে এখন আর্টিসান আর অঞ্জন’স ফ্যাশন, সেখানেই ছিল শুল্ক গোয়েন্দার কার্যালয়। একদিন বিকেলে সেই অফিসে এক সহকারী পরিচালকের রুমে বসে গল্প করছি। হঠাৎ সেই কর্মকর্তার ল্যান্ডফোন বেজে উঠল। যথারীতি তিনি ফোন ধরলেন
১৭ জুন ২০২৩
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে ‘মাদক কারবারিদের’ দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ককটেল বিস্ফোরণে জাহিদ নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ইবনে মিজান আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২ দিন আগে
এক বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি জানিয়েছে, নূরে আলম একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। তিনি ফেসবুকে এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, তাঁর নামে বিদেশ থেকে একটি পার্সেল এসেছে, যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাস্টম হাউসে জমা আছে। পার্সেল ছাড়াতে টাকা লাগবে—এ দাবি করে পার্সেলের ছবিও পাঠান তিনি।
৫ দিন আগে
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সভায় উপস্থিত বিএফআইইউ প্রতিনিধি বলেন, এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে জুয়া ও প্রতারণা বন্ধে বিটিআরসির (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) মাধ্যমে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বৈঠক করে তাদের কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হবে। যেসব অ্যাকাউন্ট ব্লক (স্থগিত)
৫ দিন আগে