আসাদুজ্জামান নূর, ঢাকা
বাজার নয়, যেন শোকস্তব্ধ প্রার্থনার ঘর। দাম নয়, নামছে মনোবল; ভেঙে পড়ছে আত্মবিশ্বাস। চায়ের দোকানেও এখন শেয়ার নিয়ে আলোচনা নেই, সামাজিক মাধ্যমেও নেই কৌতূহল— সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে পুঁজিবাজার থেকে। কারণ, প্রতিদিন সূচক নয়, ভাঙছে হাজার হাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর স্বপ্ন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স নেমে এসেছে ৪,৭৮১ পয়েন্টে, যা ২০২০ সালের ২৪ আগস্টের পর অর্থাৎ গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। মাত্র তিন কার্যদিবসে সূচক কমেছে ১৪০ পয়েন্টের বেশি। ওই সময় সূচক ছিল ৪,৭৬২ পয়েন্টে। টানা দরপতনের এই ধারা বাজার থেকে উধাও করে দিচ্ছে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস ও মূলধন—একসঙ্গে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয় মাত্র ২৯৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার, আগের দিনের তুলনায় যা কেবল ২ কোটি বাড়তি। অথচ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির পাল্লা বেড়েছে বহু গুণ। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে ৩১৭ টির শেয়ারের দর কমেছে, অপরিবর্তিত ছিল ৩৬ টি, আর মাত্র ৪২টি কোম্পানির দর বেড়েছে, অর্থাৎ ৯৫ শতাংশের বেশি শেয়ারের দর পড়ে গেছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও একই দৃশ্য। সার্বিক সূচক ১৬৩ পয়েন্ট পড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৮,৩৬৫ পয়েন্টে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পতন শুধুই অর্থনৈতিক সূচকের নয়, এটা নীতিনির্ধারকদের ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ। বিনিয়োগকারীদের আস্থার অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে বাজারে ইতিবাচক খবরে কোনো সাড়া নেই, নেতিবাচকে হাহাকার।
বিআরবি সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল গভর্নর বললেন, পুঁজিবাজার দেখার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের নয়। কিন্তু গত এক দশকে ব্যাংকগুলোর পেইড-আপ ক্যাপিটাল যে পরিমাণে বেড়েছে, সেটা কোথা থেকে এসেছে? সেটা এসেছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকেই। তাঁর মতো একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য আশা করা যায় না।’
আলমগীর হোসেন আরও বলেন, ‘বাজার পতনের পেছনে মার্জিন ঋণের সেল প্রেশার গুরুত্বপূর্ণ কারণ। বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী নেগেটিভ ইক্যুইটি আর বাড়ানো যাবে না, ফলে ব্রোকাররা বাধ্য হয়ে শেয়ার বিক্রি করছে। এতে বাজারে বিক্রির চাপ বাড়ছে, দর নামছে, আস্থাহীনতা বাড়ছে।’
এদিকে বাজারের এই সংকটময় মুহূর্তে সরকারের পক্ষ থেকে ডাকা হয় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আশার সঞ্চার হয়েছিল। কিন্তু যেভাবে বৈঠক পরিচালিত হলো এবং যেসব নির্দেশনা এল—তা কার্যত আস্থার জায়গা পুনর্গঠনের বদলে আরও অবনতির ইঙ্গিত দিয়েছে।
বৈঠকে পুঁজিবাজার সংস্কারের জন্য পাঁচটি নির্দেশনা আসে—সরকারি কোম্পানি তালিকাভুক্ত করা, দেশি-বিদেশি বড় কোম্পানি আনা, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, ব্যাংকনির্ভরতা কমিয়ে বন্ড ব্যবস্থার প্রসার এবং বিদেশি বিশেষজ্ঞ এনে সংস্কার।
কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসবের কিছুই বাস্তবসম্মত নয়। একাধিক বাজারসংশ্লিষ্ট অংশীজন মনে করছেন, সিদ্ধান্তগুলো পুরোনো এবং অকার্যকর।
বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি মনে করি, বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ আনার দরকার নেই। বাকি যেগুলো উনি বলেছেন, সেগুলো তো আমরা বহু বছর ধরেই বলে আসছি। ভালো কোম্পানি আনতে হলে করহারে পার্থক্য করতে হবে, প্রণোদনা দিতে হবে। বিদেশি বিশেষজ্ঞ এনে কিছু হবে না।’
একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বৈঠকের পরও যখন বাজার নেতিবাচক থাকে, বিনিয়োগকারীরা হতাশ থাকেন—তখন বুঝতে হবে, এটি দীর্ঘমেয়াদি খারাপ সংকেত।
পুঁজিবাজার নিয়ে গভীর হতাশা ব্যক্ত করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও। সানী মাহমুদ নামে একজন বলেন, ‘৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আমরা ভেবেছিলাম এবার বাজারে সুবাতাস বইবে। বিএসইসি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করবে। কিন্তু তারা নিজেদের ঘর সামলাতেই ব্যর্থ। এ কমিশনের দ্বারা কোনো কিছুই সম্ভব নয়।’
বর্তমানে বাজারে প্রতিনিয়ত যেসব শেয়ার বিক্রি হচ্ছে, তার বড় অংশই মার্জিন ঋণের দায়ে বাধ্যতামূলক বিক্রি। এতে করে বাজারের ওপর চাপ বাড়ছে, দরপতন বাড়ছে, আর পুঁজি হারানো বিনিয়োগকারীরা আরও দ্রুত মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। তথ্য ও সিদ্ধান্তের এই শূন্যতায় বাজার এখন দাঁড়িয়ে আছে এক অনিশ্চিত অতলে। শুধু সূচক নয়, ধসে পড়ছে আস্থা, প্রজ্ঞা আর নেতৃত্বের বিশ্বাসযোগ্যতাও।
বাজার নয়, যেন শোকস্তব্ধ প্রার্থনার ঘর। দাম নয়, নামছে মনোবল; ভেঙে পড়ছে আত্মবিশ্বাস। চায়ের দোকানেও এখন শেয়ার নিয়ে আলোচনা নেই, সামাজিক মাধ্যমেও নেই কৌতূহল— সবাই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে পুঁজিবাজার থেকে। কারণ, প্রতিদিন সূচক নয়, ভাঙছে হাজার হাজার ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর স্বপ্ন।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স নেমে এসেছে ৪,৭৮১ পয়েন্টে, যা ২০২০ সালের ২৪ আগস্টের পর অর্থাৎ গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। মাত্র তিন কার্যদিবসে সূচক কমেছে ১৪০ পয়েন্টের বেশি। ওই সময় সূচক ছিল ৪,৭৬২ পয়েন্টে। টানা দরপতনের এই ধারা বাজার থেকে উধাও করে দিচ্ছে বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস ও মূলধন—একসঙ্গে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয় মাত্র ২৯৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকার, আগের দিনের তুলনায় যা কেবল ২ কোটি বাড়তি। অথচ বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির পাল্লা বেড়েছে বহু গুণ। ৩৯৫ কোম্পানির মধ্যে ৩১৭ টির শেয়ারের দর কমেছে, অপরিবর্তিত ছিল ৩৬ টি, আর মাত্র ৪২টি কোম্পানির দর বেড়েছে, অর্থাৎ ৯৫ শতাংশের বেশি শেয়ারের দর পড়ে গেছে। চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও একই দৃশ্য। সার্বিক সূচক ১৬৩ পয়েন্ট পড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৮,৩৬৫ পয়েন্টে।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পতন শুধুই অর্থনৈতিক সূচকের নয়, এটা নীতিনির্ধারকদের ব্যর্থতার বহিঃপ্রকাশ। বিনিয়োগকারীদের আস্থার অবস্থা এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে বাজারে ইতিবাচক খবরে কোনো সাড়া নেই, নেতিবাচকে হাহাকার।
বিআরবি সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল গভর্নর বললেন, পুঁজিবাজার দেখার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের নয়। কিন্তু গত এক দশকে ব্যাংকগুলোর পেইড-আপ ক্যাপিটাল যে পরিমাণে বেড়েছে, সেটা কোথা থেকে এসেছে? সেটা এসেছে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকেই। তাঁর মতো একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে এ ধরনের বক্তব্য আশা করা যায় না।’
আলমগীর হোসেন আরও বলেন, ‘বাজার পতনের পেছনে মার্জিন ঋণের সেল প্রেশার গুরুত্বপূর্ণ কারণ। বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী নেগেটিভ ইক্যুইটি আর বাড়ানো যাবে না, ফলে ব্রোকাররা বাধ্য হয়ে শেয়ার বিক্রি করছে। এতে বাজারে বিক্রির চাপ বাড়ছে, দর নামছে, আস্থাহীনতা বাড়ছে।’
এদিকে বাজারের এই সংকটময় মুহূর্তে সরকারের পক্ষ থেকে ডাকা হয় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকের খবরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আশার সঞ্চার হয়েছিল। কিন্তু যেভাবে বৈঠক পরিচালিত হলো এবং যেসব নির্দেশনা এল—তা কার্যত আস্থার জায়গা পুনর্গঠনের বদলে আরও অবনতির ইঙ্গিত দিয়েছে।
বৈঠকে পুঁজিবাজার সংস্কারের জন্য পাঁচটি নির্দেশনা আসে—সরকারি কোম্পানি তালিকাভুক্ত করা, দেশি-বিদেশি বড় কোম্পানি আনা, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, ব্যাংকনির্ভরতা কমিয়ে বন্ড ব্যবস্থার প্রসার এবং বিদেশি বিশেষজ্ঞ এনে সংস্কার।
কিন্তু সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসবের কিছুই বাস্তবসম্মত নয়। একাধিক বাজারসংশ্লিষ্ট অংশীজন মনে করছেন, সিদ্ধান্তগুলো পুরোনো এবং অকার্যকর।
বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি মনে করি, বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ আনার দরকার নেই। বাকি যেগুলো উনি বলেছেন, সেগুলো তো আমরা বহু বছর ধরেই বলে আসছি। ভালো কোম্পানি আনতে হলে করহারে পার্থক্য করতে হবে, প্রণোদনা দিতে হবে। বিদেশি বিশেষজ্ঞ এনে কিছু হবে না।’
একটি মার্চেন্ট ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বৈঠকের পরও যখন বাজার নেতিবাচক থাকে, বিনিয়োগকারীরা হতাশ থাকেন—তখন বুঝতে হবে, এটি দীর্ঘমেয়াদি খারাপ সংকেত।
পুঁজিবাজার নিয়ে গভীর হতাশা ব্যক্ত করেছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও। সানী মাহমুদ নামে একজন বলেন, ‘৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আমরা ভেবেছিলাম এবার বাজারে সুবাতাস বইবে। বিএসইসি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত হয়ে কাজ করবে। কিন্তু তারা নিজেদের ঘর সামলাতেই ব্যর্থ। এ কমিশনের দ্বারা কোনো কিছুই সম্ভব নয়।’
বর্তমানে বাজারে প্রতিনিয়ত যেসব শেয়ার বিক্রি হচ্ছে, তার বড় অংশই মার্জিন ঋণের দায়ে বাধ্যতামূলক বিক্রি। এতে করে বাজারের ওপর চাপ বাড়ছে, দরপতন বাড়ছে, আর পুঁজি হারানো বিনিয়োগকারীরা আরও দ্রুত মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। তথ্য ও সিদ্ধান্তের এই শূন্যতায় বাজার এখন দাঁড়িয়ে আছে এক অনিশ্চিত অতলে। শুধু সূচক নয়, ধসে পড়ছে আস্থা, প্রজ্ঞা আর নেতৃত্বের বিশ্বাসযোগ্যতাও।
বিগত সরকারের আমলে বঞ্চিত ৭ হাজার ২১৫ কর্মকর্তাকে সুপার নিউমারারি পদোন্নতি দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংক। একসঙ্গে এত কর্মকর্তার পদোন্নতির বিষয় নিয়ে এবার তদন্ত শুরু করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি)। এতে পদবিসহ সুযোগ-সুবিধা হারানোর আতঙ্কে রয়েছেন পদোন্নতি পাওয়া...
১ ঘণ্টা আগেবিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সম্মেলন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। অথচ এ দেশে আসা এক জাপানি বিনিয়োগকারী চরম প্রতারণা ও বিচারিক দীর্ঘসূত্রতার শিকার হয়ে বিনিয়োগ গুটিয়ে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবছেন...
২ ঘণ্টা আগেএবি ব্যাংকের ৮১৩তম বোর্ড সভায় বিশিষ্ট ব্যাংকার কাইজার এ. চৌধুরী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এ. চৌধুরীর বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সিইও এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্য হিসেবে কাজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগেমালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার আলোচনা শুরুর আগে বাংলাদেশের ‘অভিযোগ প্রত্যাহার’ চেয়ে কূটনৈতিক চাপ বাড়াচ্ছে কুয়ালালামপুর। মানব পাচার সংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের র্যাংকিংয়ে উন্নতি আনতে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশকে প্রেরিত এক চিঠিতে বলেছে, ঢাকা থেকে আসা অনেক অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন ও অসমর্থিত’..
৪ ঘণ্টা আগে