Ajker Patrika

সড়কে ৯৩ খুঁটি, ঝুঁকিতে চলাচল

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
গাইবান্ধা জেলা শহরের ডিবি রোডে বৈদ্যুতিক খুঁটির সারি। সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা
গাইবান্ধা জেলা শহরের ডিবি রোডে বৈদ্যুতিক খুঁটির সারি। সম্প্রতি তোলা ছবি। আজকের পত্রিকা

গাইবান্ধা শহরে ৯৩টি বিদ্যুতের খুঁটির জন্য ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন পথচারী, যাত্রী ও যানবাহনের চালকেরা। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাঁদের। জানা গেছে, বিদ্যুৎ বিভাগকে টাকা দেওয়ার পরও সড়কে থাকা ৪৪টি বৈদ্যুতিক খুঁটি এখনো সরানো হয়নি। জেলা শহরের পশ্চিমে পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে পূর্বে রেলগেট পর্যন্ত এসব খুঁটিতে বিদ্যুৎ-সংযোগ রয়েছে। এদিকে একই অংশের দক্ষিণ পাশে ৪৯টি খুঁটি স্থাপিত হয়েছে। সেগুলোতেও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

আট বছর আগে খুঁটি সরানোর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে টাকা পরিশোধ করা হয় বলে জানা যায়। গাইবান্ধা সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গাইবান্ধা শহরের পূর্ব দিকে বড় মসজিদ থেকে পশ্চিমে পুলিশ সুপারের কার্যালয় পর্যন্ত প্রায় আড়াই কিলোমিটার চার লেন সড়ক নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ১১৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সড়ক নির্মাণে ৬ কোটি ও জমি অধিগ্রহণের জন্য ১১১ কোটি টাকা। ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স এই কাজের দায়িত্ব পায়। ২০২১ সালের ৩০ জুনের মধ্যে চার লেন সড়ক নির্মাণকাজ শেষ করার কথা ছিল। সওজের বেঁধে দেওয়া সময় অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করতে পারেনি। ফলে একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ শেষ করার সময় বাড়ানো হয়। কিছু কাজ অসমাপ্ত রেখে ২০২২ সালের প্রথম দিকে চার লেন সড়ক নির্মাণকাজ শেষ করা হয়। সড়ক প্রশস্ত হওয়ায় দুই পাশের বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর প্রয়োজন দেখা দেয়। কাজ শুরুর আগেই ২০১৭ সালের প্রথম দিকে বিদ্যুৎ বিভাগকে ৮৭ লাখ টাকা পরিশোধ করে সড়ক বিভাগ। টাকা পরিশোধের আট বছর হয়েছে, কিন্তু বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো এখনো সরানো হয়নি।

বাসচালক শাহিন মিয়া বলেন, ‘এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শহরে চার লেনবিশিষ্ট সড়ক নির্মাণ করা হয়। কিন্তু মূল সড়ক ঘেঁষে খুঁটি থাকায় যানবাহন চালানোর সময় আমরা ঝুঁকির মধ্যে থাকি।’

ব্যবসায়ী আবুল কালাম বলেন, ‘উত্তর পাশের সড়ক থেকে খুঁটি না সরানোর কারণে সংলগ্ন ব্যবসায়ীরা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। যেখানে খুঁটি আছে, সেখানে কখনো সড়ক দিয়ে, কখনো দোকানপাট ঘেঁষে যানবাহন চলাচল করছে। ফলে সার্বক্ষণিকভাবে আমাদের সতর্ক থাকতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ-ব্যবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।’

ফকিরপাড়ার বাসিন্দা রতন মিয়া বলেন, ‘সড়কের দক্ষিণ পাশেও নকশাবহির্ভূতভাবে মূল সড়ক ঘেঁষে খুঁটি বসানো হয়েছে। এসব খুঁটির দক্ষিণ পাশ দিয়ে পাকা নর্দমা নির্মিত হয়েছে। আগে থেকেই নর্দমার দক্ষিণ পাশ দিয়ে খুঁটি ছিল। অথচ নর্দমার দক্ষিণ পাশে খুঁটি বসানোর কথা। অর্থাৎ খুঁটি ও মূল সড়কের মাঝখানে নর্দমা হওয়ার কথা। এসব খুঁটির কারণে ফুটপাত দিয়ে চলাচল করতে ভয় লাগে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল বুধবার গাইবান্ধা বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-২-এর (নেসকো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসিফ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সড়ক সম্প্রসারণে ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতার কারণে জমির মালিকেরা বিদ্যুতের খুঁটি সরিয়ে অন্যত্র বসাতে বাধা দিচ্ছেন। এ জন্য খুঁটি সরানো সম্ভব হচ্ছে না। প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করা হলে আগামীকাল থেকে কাজ শুরু করব।’

এ বিষয়ে গাইবান্ধা সওজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পিয়াস কুমার সেন বলেন, ‘সড়ক থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানোর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে কয়েকবার চিঠি দিয়েছি। এ ছাড়া বিভিন্ন কমিটির মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ বিভাগ খুঁটিগুলো সরানোর কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত