Ajker Patrika

ভোটাররা এলাকায় নেই, ভোট নিয়ে সংশয়

প্রতিনিধি (বগুড়া) সারিয়াকান্দি   
ভোটাররা এলাকায় নেই, ভোট নিয়ে সংশয়

বগুড়া সারিয়াকান্দির চালুয়াবাড়ী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা বিভিন্ন সময় নদীভাঙনে যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা তাদের বাড়িঘর নিয়ে অন্যত্র চলে গেছে। ফলে অবাধ সুষ্ঠু ভোটগ্রহণ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ভোটার এলাকার পুনর্বিন্যাসের আবেদন জানিয়েছেন এলাকাবাসী। 

ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডটি ফাজিলপুর গ্রামের ভোটারদের নিয়ে গঠিত। এ গ্রামটি গত ২০১৬ সালে নদীভাঙনে যমুনাগর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়েছে। ওয়ার্ডটির সর্বমোট ভোটার সংখ্যা ৫৫০ জন। নদীভাঙনের শিকার ভোটাররা এখন গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা, গাইবান্ধা সদর এবং জুমারবাড়ীতে বসতবাড়ি করেছেন। এলাকাটির ইউ পি সদস্য আব্দুল হাই বলেন, আসছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণা আমার বাইরের জেলায় চালাতে হবে, সেখানেই মাইকিং করে ভোট প্রার্থনা করতে হবে। 

২নং ওয়ার্ডটি বওলাডাঙ্গা গ্রামের ভোটারদের নিয়ে গঠিত। এ গ্রামটি গত ২০১৭ সালে যমুনাগর্ভে সম্পূর্ণ বিলীন হয়েছে। ওয়ার্ডটির সর্বমোট ভোটার সংখ্যা ৯৫০ জন। নদীভাঙনের শিকার হয়ে এ এলাকার ভোটাররা শেরপুরের নয়মাইল, পানিতলা এবং দাড়িদহ এলাকায় বাড়িঘর করেছেন। এ ওয়ার্ডের ইউ পি সদস্য খোরশেদ আলম জানান, নিজের এলাকা ছেড়ে ভোট প্রার্থনা করতে আমাকে বাইরের এলাকায় যেতে হবে। বাইরের এলাকাতেই নির্বাচনের পোস্টার লাগাতে হবে। 

ইউনিয়নের আউচারপাড়া, চর চালুয়াবাড়ী এবং সুজালীপাড়ার ভোটারদের নিয়ে গঠিত হয়েছে ৩নং ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডের ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ১০০ জন। এদের মধ্যে ৭০০ জন ভোটার নদীভাঙনের শিকার হয়ে পার্শ্ববর্তী সোনাতলা উপজেলার চরপাড়া, কলেজ স্টেশন এবং শেরপুর পানিতলায় বসতবাড়ি গড়ে তুলেছেন। এ ইউনিয়নের ইউ পি সদস্য রেজাউল করিম বলেন, বাইরের এলাকা হতে ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে আসতে চায় না। তাদের বুঝিয়ে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে আসতে অনেক অর্থ অপচয় হবে। 

শিমুলতলা, ভাঙ্গরগাছা এবং তেলিগাড়ী গ্রামের ভোটারদের নিয়ে ৪ নং ওয়ার্ড গঠিত। এর মধ্যে ভাঙরগাছা ২০১৯ সালে, তেলিগাড়ী ২০১৭ সালে নদীভাঙনে সম্পূর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। শিমুলতলা গ্রামেরও আংশিক নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ওয়ার্ডটির সর্বমোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৪৭৫ জন। এর মধ্যে ৫০০ জন ভোটার সোনাতলা উপজেলার সুখানপুকুর এবং কলেজ স্টেশন এলাকায় বসতবাড়ি গড়ে তুলেছেন। এ ওয়ার্ডের ইউ পি সদস্য জাহিদ হাসান জানান, ভোটারদের বাড়ি খুঁজে বের করে ভোট প্রার্থনা করতে অনেক সমস্যায় পরতে হবে। 

ইউনিয়নের চরদলিকা এবং হাটবাড়ী চরের বাসিন্দাদের নিয়ে ৬নং ওয়ার্ডটি গঠিত হয়েছে। ২০১৮ সাল হতে ভাঙন শুরু হয়ে চরদলিকা চরটি বর্তমানে সম্পূর্ণ নদীগর্ভে চলে গেছে। গত বছর এবং চলতি বছর যমুনা নদীতে হাটবাড়ী চরেরও আংশিক নদীগর্ভে চলে গেছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা এখন জামালপুর জেলার ইসলামপুরের কালিরচর, চর নোয়ারপাড়া, গুঠাইল এলাকায় বসতভিটা গড়ে তুলেছেন। এ ওয়ার্ডের ১ হাজার ২০০ জন ভোটারের মধ্যে ৮০০ জন ভোটারই অন্যত্র বসতভিটা গড়ে তুলেছেন। এ ওয়ার্ডের ইউ পি সদস্য ফরিদুল ইসলাম বলেন, অন্য জেলায় গিয়ে প্রচারণা চালাতে অনেক সমস্যায় পরার সম্ভাবনা রয়েছে।

এছাড়াও ৭ এবং ৮ নং ওয়ার্ডের মানিকদাইড় চরের আংশিক এলাকাবাসী জামালপুরের মাদারগন্জ এলাকায় বসতবাড়ি গড়ে তুলেছেন। স্থানীয় চালুয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শওকত আলী জানান, আমার ইউনিয়নের সর্বমোট ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ৫০০ জন। এর মধ্যে অধিকাংশ ভোটাররাই বাইরের বিভিন্ন জেলায় বসবাস করছেন। ভোটকেন্দ্রের সীমানা পুনর্বিন্যাসের জন্য এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছেন। 

সারিয়াকান্দি উপজেলার নির্বাচন অফিসার মো. সাখাওয়াত হোসেন আজকের পত্রিকাকে জানান, এ বিষয়ে এলাকাবাসীর আবেদনপত্র মোতাবেক বিষয়টির সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

১০০ বছর পর জানা গেল, ‘অপ্রয়োজনীয়’ প্রত্যঙ্গটি নারীর প্রজননের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

‘এই টাকা দিয়ে কী হয়, আমি এত চাপ নিচ্ছি, লাখ পাঁচেক দিতে বলো’, ওসির অডিও ফাঁস

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল, যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের এপিএস মোয়াজ্জেমকে অব্যাহতি

পারভেজ হত্যায় অংশ নেয় ছাত্র, অছাত্র ও কিশোর গ্যাং সদস্য

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত