Ajker Patrika

রাজশাহীতে মেয়েকে উত্ত্যক্ত, বাবাকে খুন: মামলার ২৪ ঘণ্টা পরও গ্রেপ্তার নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
আকরাম হোসেন হত্যার ঘটনায় আসামিদের বিচার দাবিতে বৃহস্পতিবার লাশ নিয়ে মানববন্ধন করে রাজশাহী নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা
আকরাম হোসেন হত্যার ঘটনায় আসামিদের বিচার দাবিতে বৃহস্পতিবার লাশ নিয়ে মানববন্ধন করে রাজশাহী নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজশাহী মহানগরীতে মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা আকরাম হোসেনকে খুনের ঘটনার মাস্টারমাইন্ড নান্টু ও তাঁর সহযোগীদের সম্পর্কে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে, নান্টু তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর করা নারী নির্যাতন মামলার আসামি। এ ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা মাদক বিক্রেতা ও সেবনকারী।

এদিকে হত্যার ঘটনায় মামলা করার পর ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও পুলিশ আজ শুক্রবার পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

রাজশাহী নগরীর তালাইমারি এলাকায় গত বুধবার রাত ১০টায় নান্টু ও তাঁর সহযোগীরা আকরামকে পিটিয়ে ও ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যা করেন।

স্থানীয় সূত্র বলেছে, মাদক সেবন ও বিক্রিসহ নানা অপরাধে সংশ্লিষ্টতার কারণে আট বছর আগে নান্টুর প্রথম স্ত্রী তাঁকে তালাক দেন। এরপর নান্টু দ্বিতীয় বিয়ে করেন। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করায় দ্বিতীয় স্ত্রীও তিন মাস আগে তাঁকে ছেড়ে চলে যান। পাশাপাশি নান্টুর বিরুদ্ধে মহানগরীর বোয়ালিয়া থানায় মামলা করেন দ্বিতীয় স্ত্রী। নান্টুর দ্বিতীয় স্ত্রীর পক্ষে ছয় বছর ও দেড় বছরের দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে।

আকরাম হোসেন হত্যা মামলার আরেক আসামি নান্টুর অন্যতম সহযোগী নাহিদ একটি হত্যা মামলার আসামি। নান্টু, নাহিদসহ এ মামলার অন্য আসামি বিশাল, খোকন মিয়া, তাসিন হোসেন, অমি ও শিশির সবার বাড়ি তালাইমারি এলাকায়। তাঁরা সবাই তালাইমারি শহীদ মিনারসংলগ্ন স্কুল ভবনের নিচে পদ্মা নদীর পাড়ে ইয়াবা, গাঁজাসহ মাদক বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নিহত আকরামের ছেলে অনন্ত বলেন, দুই মাস আগে থেকে নান্টু তাঁর বোনকে উত্ত্যক্ত করছেন। বাড়ি থেকে স্কুল কিংবা কোচিংয়ের জন্য বের হলেই পিছু নিতেন নান্টু ও তাঁর সহযোগীরা। আকরাম বিষয়টি জানার পর নান্টুর পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন নান্টু। আকরাম ও অনন্তকে হত্যার হুমকি দেন। সর্বশেষ বুধবার বিকেলে তাঁর বোনকে আবারও উত্ত্যক্ত করেন নান্টু।

নিহত আকরাম হোসেনের স্ত্রী মুক্তি বেগম বলেন, ‘মেয়েকে আবার উত্ত্যক্ত করার কারণে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেন আমার স্বামী। রাত ১০টার দিকে আরও কয়েকজন বখাটেকে সঙ্গে নিয়ে এসে প্রথমে সে আমার ছেলে অনন্তকে মারধর করে। ছেলের চিৎকার শুনে ছুটে গেলে আমার স্বামীকে ঘিরে ধরে হামলাকারীরা। একপর্যায়ে তাঁর মাথায় ইট দিয়ে আঘাত করা হয়।’

নিহত আকরামের মেয়ে রাজশাহী মহানগরীর অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় থেকে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার ছিল তার ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা। বাবার নিথর দেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে হাজির হয় মেয়েটি। নিহত আকরাম পেশায় ছিলেন বাসচালক।

বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহাম্মেদ বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহত আকরামের ছেলে অনন্ত সাতজনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় আরও চার-পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। আশা করছি, দ্রুততার সঙ্গে তাঁদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

লুটপাটে শেষ ৫ কোটির প্রকল্প

‘ওরা সোনার তৈরি, আমরা মাটির’, কারখানার ভেতর আত্মহত্যার আগে শ্রমিকের ফেসবুক পোস্ট

যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫ হাজার শিক্ষার্থীর ভিসা বাতিল, বেশির ভাগই ভারতীয়, আছে বাংলাদেশিও

আওয়ামী লীগকেও পথভ্রষ্ট করেছেন শেখ হাসিনা

গণহত্যার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা ও বাংলাদেশের ক্ষতিপূরণ দাবির উল্লেখ নেই পাকিস্তানের বিবৃতিতে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত