Ajker Patrika

বাঘায় পারিবারিক বাগানে মিলল নতুন জাতের আম

গোলাম তোফাজ্জল কবীর মিলন, বাঘা (রাজশাহী)
আপডেট : ১৮ মে ২০২২, ১৮: ১৪
বাঘায় পারিবারিক বাগানে মিলল নতুন জাতের আম

রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বলিহার গ্রামে একটি পারিবারিক বাগানে নতুন জাতের আমের সন্ধান পাওয়া গেছে। বাগানটিতে এ জাতের চারটি গাছ চিহ্নিত করেছে উপজেলা কৃষি অফিস।

বাগানটির মালিক বাঘা পৌরসভার মেয়র আব্দুর রাজ্জাক। দুটি গাছে এবার আম এসেছে। আঁশ নেই, আঁটি ছোট, পাল্পের পরিমাণ বেশি এবং অনন্য ঘ্রাণ রয়েছে এই আমে। পাকে মে মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে। স্বাদে খিরসাপাত বা হিমসাগরের মতো। পাকার পর প্রায় ১০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়। এ জাতের গাছে প্রতিবছর সমান পরিমাণ আম ধরে। 

আমটির উৎপত্তিস্থলের সঙ্গে মিল রেখে উপজেলা কৃষি কার্যালয় নামকরণ করতে চাইছে ‘বাঘাশাহী’। এরই মধ্যে নিবন্ধনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তারা।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ‘বাঘাশাহী’ আমের গাছের পাতা কিছুটা সরু। ফনিয়া আমের মতো। বড় আকারের গাছ। বর্তমানে গাছগুলোর বয়স প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছর। আম দেখতে সুন্দর, খেতে সুস্বাদু, আঁশবিহীন ছোট আঁটি, পাল্পের পরিমাণ বেশি, অনন্য ঘ্রাণ।

বাগানমালিক বাঘা পৌরসভার মেয়র আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘বাগানে এই জাতের একটি আমগাছ ছিল। আমার বাবা মৃত আলহাজ হাসমতুল্লাহ লাগিয়েছিলেন। এ গাছের বয়স ৩০ থেকে ৪০ বছর। এখন এ জাতের চারটি আমগাছ আছে। এ গাছের আম কোনো দিন বিক্রি করিনি। নিজেরা খাই। ঘরে এই আম রাখলে ঘ্রাণ বোঝা যায়। খেতে মিষ্টি। একটি গাছে ১৩ থেকে ১৫ মণ আম হয়। এবার দুটি গাছের আম বিক্রি করেছি ২১ হাজার টাকায়।  এলাকায় লোকজন গাছটি গুটি আমগাছ হিসেবে জানে। পারিবারিকভাবে এই আমকে “সমাসি আম” বলি আমরা।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ সুলতান জানান, আগাম জাতের একটি নতুন আম ‘বাঘাশাহী’। এই আমটির নিজস্ব ঘ্রাণ আছে। সুমিষ্ট খিরসাপাত আমের মতো। তিনি এই আম খেয়ে ‘বাঘাশাহী’ নামে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছেন। এই আম বৈশাখ মাসের শেষ সপ্তাহে সংগ্রহ করা যায়, বাজারে এ সময় তেমন সুমিষ্ট আম সাধারণত আসে না। ফলে ‘বাঘাশাহী’ আমের ব্যাপক চাহিদা থাকবে। 

কৃষি কর্মকর্তা শফিউল্লাহ বলেন, ‘এই আম দেখতে আম্রপালির মতো। এই আমে কোনো আঁশ নেই এবং আঁটি ছোট। ফলে এর পাল্পের পরিমাণ অনেক বেশি। আমাদের দেশে উৎপাদিত অন্যান্য আম পাকার পরে তিন-চার দিনের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু এই আম পাকার পরে সাত-আট দিন পর্যন্ত ভালো থাকে। এই আম পাকার পরে খুব আকর্ষণীয় রং ধারণ করে। “অলটারনেট বিয়ারিং”-এর কারণে যেখানে অন্যান্য আমগাছে এক বছর ভালো আম হলেও পরের বছর তেমন আম হয় না, কিন্তু এই জাতের আম প্রতিবছর সমান ধরে, সেটাও একটি ভালো বৈশিষ্ট্য।’

এই কৃষি কর্মকর্তা জানান, এই গাছের চারা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন সরকারি নার্সারিতে সায়ন সংগ্রহ করে দেওয়া হবে। সেই চারা দুই-তিন বছরের মধ্যে সবাই সরকারি দামে কিনতে পারবেন। যেহেতু এই আমগাছটি বাঘায় অবস্থিত এবং ভবিষ্যতে এর জনপ্রিয়তার কথা চিন্তা করে এর নামকরণ করা হয়েছে ‘বাঘাশাহী’। আগামী বছর এ জাতের চারা বিভিন্ন সরকারি নার্সারিতে যাতে পাওয়া যায়, সে ব্যাপারে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত