Ajker Patrika

ঈশ্বরদীতে রেললাইনে আগুন–গাড়ি ভাঙচুর, যুবলীগের ধাওয়া

পাবনা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ০০: ৩০
ঈশ্বরদীতে রেললাইনে আগুন–গাড়ি ভাঙচুর, যুবলীগের ধাওয়া

পাবনার ঈশ্বরদীর রেলগেটে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ, রেললাইনে আগুন, একটি ট্রাক ও একটি মাইক্রোবাস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর অবরোধ সমর্থনে মিছিলকারী ও স্থানীয় যুবলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, পৌর বিএনপি নেতার ব্যক্তিগত কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। এতে কেউ আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। 

বিএনপি ও জামায়াতের ডাকা দ্বিতীয় দফা অবরোধের প্রথম দিন আজ রোববার সন্ধ্যায় ঈশ্বরদী শহরের রেলগেটে এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে শহরে দুই প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। এ ছাড়া র‍্যাব পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও টহল দিচ্ছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে বেশ কয়েকজন যুবক রেলগেট এলাকায় অবরোধের সমর্থনে মিছিল করে। এ সময় রেললাইনে আগুন জ্বালিয়ে কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় তারা। তারপর একটি ট্রাক ও একটি মাইক্রোবাসের গ্লাস ভাঙচুর করা হয়।

ভাঙচুর করা ট্রাকঘটনা জানতে পেরে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শিরহান শরীফ তমাল, উপজেলা যুবলীগ কর্মী মিলন চৌধুরী, তৌহিদুজ্জামান দোলন বিশ্বাস, স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক মাসুদ রানাসহ যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের শতাধিক নেতাকর্মীরা ধাওয়া দিলে অবরোধের সমর্থকেরা পিছু হটে। 

এর কিছুক্ষণ পরই অবরোধ বিরোধীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে রেলগেটস্থ পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুর ব্যক্তিগত অফিস ও পশ্চিটেংরি এলাকায় যুবদল কর্মী মেহেদী হাসানের ব্যক্তিগত অফিস ভাঙচুর করে। বর্তমানে জাকারিয়া পিন্টু কারাগারে আছেন। 

খবর পেয়ে পুলিশ, বিজিবি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাসহ ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) টিএম রাহসিন কবির ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। 

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় বিজিবিসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাভাঙচুর করা ট্রাকচালক সুমন হোসেন জানান, তিনি রেলগেট অতিক্রমকালে তাঁর ট্রাকের সামনের কাচ ভেঙে দেয় অবরোধের সমর্থনে বিক্ষোভকারীরা। 

এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের সদস্য মিলন চৌধুরী বলেন, শান্ত ঈশ্বরদীকে অশান্ত করার জন্য যারা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। 

ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ মিন্টু বলেন, ধ্বংসাত্মক রাজনীতির অংশ হিসেবে অগ্নি সন্ত্রাসীরা চোরের মতো ককটেল ফাটিয়ে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। বিস্ফোরণের পর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়। 

পৌরসভা মেয়র ইছাহক আলী মালিথা বলেন, ‘শান্ত শহরে বিএনপি নেতাকর্মীরা আজ সন্ধ্যায় হঠাৎ করে রেলগেটের ব্যস্ততম এলাকায় গাড়ি ভাঙচুরের পর বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। আমরা বিএনপির এই আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মিছিল করেছি।’ 

এ বিষয়ে পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ফজলুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি। 

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অরবিন্দ সরকার বলেন, ‘কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছি। রেললাইনে আগুন তাৎক্ষণিক নিভিয়ে ফেলা হয়। পুলিশ যাওয়ার আগেই তারা পালিয়ে যায়। পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’ 

পুলিশের রিকুইজিশন করা একটি হায়েস গাড়ির গ্লাস ভাঙচুর করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। 

ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী জানান, এ ঘটনায় পুলিশ সতর্ক অবস্থায় আছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও টহল পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। 

ঈশ্বরদী ইউএনও সুবীর কুমার দাস জানান, শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ইতিমধ্যে দুই প্লাটুন বিজিবি নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়া র‍্যাব ও পুলিশ সদস্যরা শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত