Ajker Patrika

নারী চিকিৎসকের ব্যাগে হেরোইন দিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ

লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ১০ অক্টোবর ২০২৩, ১৯: ৪১
Thumbnail image

নাটোরের লালপুরে একটি ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্সের পরিচালকের বিরুদ্ধে মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে নারী চিকিৎসককে হেনস্তা ও ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার রাতে এ ঘটনায় তিনজনের বিরুদ্ধে লালপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই চিকিৎসক। 

অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার হাসপাতালের পরিচালক ও জোত দৈবকী গ্রামের বাসিন্দা একাব্বর হোসেন শান্ত (৩৭), তাঁর স্ত্রী রহিমা বেগম (৩০) ও বালিতিতা রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আলমগীর হোসেনের স্ত্রী কল্পনা বেগম (২৮)। 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অবস্থিত মানবকল্যাণ মডেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্সে কর্মরত ছিলেন ওই চিকিৎসক। গত ৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় ঢাকা জোনের ডিবি পুলিশের পরিচয়ে এক ব্যক্তি ও ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্সের পরিচালক একাব্বর হোসেন শান্ত তল্লাশির নামে তাঁর ভ্যানিটি ব্যাগে হেরোইন জাতীয় বস্তু দেন। এরপর মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করা হয়।

টাকা দিতে নারাজ হলে শান্ত তাঁকে রাতভর একটি কক্ষে আটকে রাখেন। এ সময় ওই নারীকে কুপ্রস্তাব দিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন তিনি। বিষয়টি অন্যদের জানানোর চেষ্টা করলে ঘটনার সব সিসিটিভি ফুটেজ এবং অন্যান্য প্রমাণ সরিয়ে নেন শান্ত। এ ঘটনায় রহিমা বেগম ও স্টাফ কল্পনা বেগম সহযোগিতা করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। 

অভিযোগকারী ওই নারী চিকিৎসক জানান, শান্তর উপস্থিতিতে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি জোর করে তাঁর ব্যাগ তল্লাশি করেন। তাতে কিছু না পেয়ে পকেট থেকে পাউডার জাতীয় দুটি প্যাকেট বের করে মাদক মামলার ভয় দেখান। তখন শান্ত বিষয়টি দেখবেন বলে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অসম্মতি জানালে তাঁকে আটকে রাখেন। 

অভিযোগের বিষয়ে মানবকল্যাণ মডেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্সের পরিচালক মো. একাব্বর হোসেন শান্ত বলেন, ‘আমার হাসপাতালের ওই নারী চিকিৎসক হঠাৎ করে গত বুধবার (৪ অক্টোবর) ভোর ৬টার দিকে হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। পরে আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন।’ 

লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. উজ্জ্বল হোসেন লিখিত অভিযোগের বিষয় নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

উল্লেখ্য, গত বুধবার (৪ অক্টোবর) হাসপাতালটি পরিদর্শন করে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে এ ঘোষণা দেন লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কে এম শাহাব উদ্দিন। নাটোরের সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ মশিউর রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী মানবকল্যাণ মডেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্স পরিদর্শনকালে হাসপাতালটিতে রোগী ভর্তি থাকলেও সেখানে কোনো ডাক্তার ছিলেন না। এ ছাড়া বিভিন্ন অনিয়ম থাকায় হাসপাতালটি সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। 

এর আগে গত বছর ২৪ আগস্ট দিবাগত রাত সোয়া ১২টার দিকে এই হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে শিশু জন্মদানের সময় শারমিন আক্তার (১৯) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত