Ajker Patrika

গোমস্তাপুর

সেতু নির্মাণের ৬ মাসেই সংযোগ সড়কে ধস

  • প্রায় আড়াই কোটি টাকা প্রাক্কলনে সেতুটি নির্মাণ করে এলজিইডি।
  • সংযোগ সড়কের সঙ্গে সীমানা খুঁটিও ধসে পড়েছে।
আব্দুল বাশির, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
আপডেট : ২৩ জুলাই ২০২৫, ০৮: ৩২
গোমস্তাপুরের খড়কাডাঙ্গা গ্রামে কুমিরডোপ বিলে নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়কে ধস। ছবি: আজকের পত্রিকা
গোমস্তাপুরের খড়কাডাঙ্গা গ্রামে কুমিরডোপ বিলে নির্মিত সেতুর সংযোগ সড়কে ধস। ছবি: আজকের পত্রিকা

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলায় প্রায় আড়াই কোটি টাকা প্রাক্কলনে একটি সেতু নির্মাণ করেছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার ছয় মাসও টেকেনি সংযোগ সড়ক। সড়কের সেতু লাগোয়া বড় একটি অংশ খুঁটিসহ ধসে পড়েছে। সড়ক সংকুচিত হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে যানবাহনের যাত্রীদের। বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনাও ঘটছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ করায় সড়কে এই ধস দেখা দিয়েছে। তবে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী বলেছেন, বৃষ্টির কারণে সংযোগ সড়ক ধসে গেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করার জন্য তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, এলজিইডির অধীনে প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রোলার ব্রিজ প্রকল্পের অধীনে রাধানগর ইউপি থেকে (ডোবার মোড়) আক্কেলপুর-জশৈল খড়কাডাঙ্গা আঞ্চলিক সড়কে বিলের মধ্যে এই সেতু নির্মাণ করা হয়। সেতুটির অবস্থান খড়কাডাঙ্গা গ্রামে কুমির ডোপ বিলে। ১৫ মিটার দৈর্ঘ্য আরসিসি সেতুটি নির্মাণে বরাদ্দ করা হয় ২ কোটি ৪৩ লাখ ৫১ হাজার ৮৪৭ টাকা। এতে অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংক। প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজ চলার সময় সেতুর পাশের জায়গা ভেঙে একাধিক যানবাহন খাদে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। এরপর জোড়াতালি দিয়ে তড়িঘড়ি করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শেষ করেছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, একটি বিলের মধ্যে জশৈল থেকে আক্কেলপুর আঞ্চলিক সড়ক নির্মাণ করা হয়। সড়কটিতে সংযোগ সেতু হিসেবে এই নির্মাণকাজ করা হয়। বর্ষা মৌসুম এলেই বিলের সড়কটি পানিতে ডুবে যায়। কিন্তু অল্প বৃষ্টিতেই সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে যাচ্ছে। উপড়ে পড়ছে সীমানা খুঁটি। সেখানে পানিতে ডুবে গেলে সেই সেতু আর সড়ক চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে।

স্থানীয় বাসিন্দা দামঈল গ্রামের আব্দুল আলিম বলেন, চার থেকে পাঁচ মাস কাজ শেষ করা হলো। তাতে বন্যা আসার আগেই সেতুটির পিলার ভেঙে গেছে। সব পিলার ভেঙে কাত হয়ে পড়ে আছে। এ ছাড়া সংযোগ সড়ক ভেঙে যাচ্ছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অনিয়ম-দুর্নীতি করে সেতুটি নির্মাণ করেছে।

মো. মোস্তাকিম নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, প্রায় আড়াই কোটি টাকার সেতুর সংযোগ সড়ক এক বছরও গেল না। তার আগেই ভেঙে যাচ্ছে।

অভিযোগের বিষয়ে সেতু নির্মাণের ঠিকাদার আব্দুল মান্নানের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি। তাঁর হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠিয়ে বক্তব্য জানতে চাওয়া হলেও তিনি তাতে সাড়া দেননি।

এ বিষয়ে গোমস্তাপুর উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. আছহাবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে এ সময় কিছু কিছু সড়কে ভাঙন দেখা দেয়। সে জন্য আগে থেকেই ঠিকাদারদের জামানত নিয়ে রাখা হয়। সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তা মেরামত করার জন্য একাধিকবার বলা হয়েছে। আশা করছি, ঠিকাদার দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত করবেন।’

আছহাবুর রহমান আরও বলেন, ‘আমি সেতুটি নির্মাণের সময় একাধিকবার সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। সেতু নির্মাণে কোনো অনিয়ম-দুর্নীতি হয়নি। আর নতুন সড়ক করলে মাটি কিছুটা ফাঁপা থাকে, যার কারণে ভাঙন দেখা দেয়।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত