Ajker Patrika

আ. লীগ কর্মীদের জামিন করানোয় হুমকির মুখে আত্মগোপনে ছাত্রদল নেতা

ইসলামপুর (জামালপুর) প্রতিনিধি  
আপডেট : ২২ এপ্রিল ২০২৫, ১১: ৩৯
ছাত্রদল নেতা হাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত
ছাত্রদল নেতা হাফিজুর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

জামালপুরের ইসলামপুরে আওয়ামী লীগ কর্মীদের জামিন করানোর অভিযোগে ভয়ভীতি ও হুমকির মুখে আত্মগোপনে রয়েছেন হাফিজুর রহমান নামে এক ছাত্রদল নেতা। তিনি উপজেলার গোয়ালেরচর ইউনিয়নের সভারচর কারীপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং জেলা ছাত্রদলের সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।

ভুক্তভোগী হাফিজুর অভিযোগ করে বলেন, ‘মামলার তিন আসামিকে জামিন করানোর দায়ে আমাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি এলাকায় ফিরতে পারছি না।’

অন্যদিকে স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা বলছেন, হাফিজুর দলীয় আস্থার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে আওয়ামী লীগ কর্মীদের জামিন করিয়ে আত্মগোপনে চলে গেছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সরকারের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচির সময় দেশীয় অস্ত্র ও বিস্ফোরক নিয়ে সভারচর এলাকায় মিছিল করেন আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। ওই ঘটনায় ছাত্রদল নেতা হাফিজুর বাদী হয়ে সাবেক ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান দুলালের ছোট ভাই ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ মোরশেদুর রহমান মাসুম খানসহ ১২৮ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২২০ জনকে আসামি করে ইসলামপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন।

পরে ১৫ এপ্রিল জামালপুর আদালতে হাজির হয়ে হাফিজুর ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছামিউল হক ফারাজী, ফুরকান মিয়া ও উবাইদুরের জামিনে ‘অনাপত্তি আবেদন’ দাখিল করলে আদালত তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জামিনের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর রাতেই হাফিজুরের মালিকানাধীন মহলগিরী চৌরাস্তা এলাকার ইকরা আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কোচিং সেন্টারে তালা ঝুলিয়ে দেয় ও প্রাচীর ভাঙচুর করে বিক্ষুব্ধ বিএনপি কর্মীরা। পরদিন গোয়ালেরচর ইউনিয়ন বিএনপির জরুরি বৈঠকে হাফিজুরের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সেকান্দর আলী। উপস্থিত ছিলেন সভাপতি আব্দুল করিম মেম্বার, সিনিয়র সহসভাপতি শহিদুল্লাহ মেম্বার, সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক, প্রচার সম্পাদক তোজাম্মেল হক তোতা এবং যুবদলের আহ্বায়ক সেলিম মাস্টার।

বক্তারা বলেন, আওয়ামী লীগ কর্মীদের জামিন করানোর বিষয়টি দলের নীতির পরিপন্থী। হাফিজুরকে জবাবদিহি করতে হবে।

এ বিষয়ে হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ছামিউল একজন শিক্ষক, উবাইদুর আমার বন্ধু এবং তাঁর ভাই ফুরকানও ওই মামলার আসামি। তাঁরা কেউ আওয়ামী লীগের পদে নেই বা ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। বিএনপির দুঃসময়ে তাঁদের ঘরেই আশ্রয় নিয়েছি। তাই মানবিক কারণে অনাপত্তি জানিয়েছি। এরপরই আমার কোচিং সেন্টারে হামলা হয়, হুমকি দেওয়া হয়। আমি এখন নিরাপত্তার অভাবে আত্মগোপনে রয়েছি।’

তবে গোয়ালেরচর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘ঘটনার পর জরুরি বৈঠক হয়েছে। সিনিয়র নেতাদের পরামর্শে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে কাউকে হুমকি দেওয়া হয়নি।’

উল্লেখ্য, এর আগেও চরপুটিমারী ইউনিয়নের দক্ষিণ শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি আইয়ুব আলী ২৪ জন আওয়ামী লীগ কর্মীকে জামিন করালে গত ৩০ নভেম্বর তাঁকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত