Ajker Patrika

৩ মাসের শর্তের পরে ৪৯ মাসেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি ইসলামপুর জাতীয় পার্টির কমিটি

এম. কে. দোলন বিশ্বাস, ইসলামপুর (জামালপুর)
৩ মাসের শর্তের পরে ৪৯ মাসেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি ইসলামপুর জাতীয় পার্টির কমিটি

ব্যবসায়ী মোস্তফা আল মাহমুদকে আহ্বায়ক এবং জিল্লুর রহমান বিপুকে প্রধান যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৪ বছর আগে ইসলামপুর উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। শর্ত ছিল এই আহ্বায়ক কমিটি তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবে। তবে এরই মধ্যে সাড়ে ৪৯ মাস পার হয়ে গেলেও ওই আহ্বায়ক কমিটি দিয়েই চলছে এখানকার জাতীয় পার্টির কার্যক্রম, পূর্ণাঙ্গ হয়নি কমিটি। 

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০১৭ সালের ১৪ ডিসেম্বর জামালপুর জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল এহসান এবং সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন খানের সুপারিশে জেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক কমিটি হয়। সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী এম এ সাত্তার দলের ইসলামপুর উপজেলা শাখার এ আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেন। 

ওই কমিটিতে অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল রেজাউল করিম খানকে প্রধান উপদেষ্টা করা হয়। অন্যান্য যুগ্ম আহ্বায়কদের মধ্যে রয়েছেন আব্দুস সালাম ঘুনু, হাফিজুর রহমান জেমস, আনোয়ার হোসেন, ফেরদৌস রহমান সরকার, মমতাজুর রহমান, এস এম শাহ আলী, সাহাবদ্দিন আলী, আবু তাহের ও সাইফুল ইসলাম। এ ছাড়া ওই কমিটিতে আরও ৩০ জনকে সদস্য করা হয়। আহ্বায়ক কমিটির শর্ত ছিল তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে তা ঘোষণা করা। কিন্তু ৪৯ মাসেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেননি দায়িত্বশীলরা। 

দলের নেতা-কর্মীরা জানান, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-২ ইসলামপুর আসন থেকে লাঙল প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়ার লক্ষ্যে মোস্তফা আল মাহমুদকে পার্টির ইসলামপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক করেছিলেন। এরই মধ্যে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মোস্তফা আল মাহমুদকে। এ ছাড়া তিনি জামালপুর জেলা জাতীয় পার্টিরও আহ্বায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বেশির ভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করলেও মাঝে মধ্যে নিজ এলাকা ইসলামপুরে এসে দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেন মোস্তফা আল মাহমুদ। 

উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহমুদুল্লাহ বলেন, `ইসলামপুর আসন থেকে লাঙল প্রতীকে মনোনয়ন দেওয়ার উদ্দেশ্য মোস্তফা আল মাহমুদকে দলের উপজেলা শাখার আহ্বায়ক করা হয়। মোস্তফা আল মাহমুদও নির্বাচনী মাঠ জমিয়ে ছিলেন। কমিটি গঠনে বিলম্ব হলেও মোস্তফা আল মাহমুদের দক্ষ নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থেকে দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। 

উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক কমিটির প্রধান যুগ্ম আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান বিপু বলেন, তিন মাসের কমিটি এরই মধ্যে সাড়ে ৪৯ মাস অতিবাহিত করছে। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাদের কথা আমলে নেননি মোস্তফা আল মাহমুদ। তাঁর গাফিলতির জন্যই কমিটি তামাদি হয়েছে। এ ছাড়া দীর্ঘ সময়েও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন না করায় দিনদিন দলের সাংগঠনিক অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ের দিকে যাচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের প্রয়োজন। 

উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মোস্তফা আল মাহমুদ জানান, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামপুর আসন থেকে দলের হাইকমান্ডের নির্দেশনায় প্রচারণার শেষ মুহূর্তে নির্বাচন থেকে আমাকে সরে দাঁড়ালেও নির্বাচনী কাজে ব্যস্ত থাকায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা যায়নি। পরবর্তীতে চলমান বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতির মধ্যে জাতীয় পার্টির মতো একটি গণমানুষের রাজনৈতিক দলের সম্মেলন করা শোভনীয় নয়। সে কারণেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে বিলম্ব হচ্ছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্তরের কমিটি সম্পূর্ণ হয়েছে। আশা রাখি, শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হবে। এখানকার জাতীয় পার্টির সংগঠন অত্যন্ত শক্তিশালী এবং নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ বলেও তিনি উল্লেখ করেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত