Ajker Patrika

‘আধাপাহা ধান না কাডলে আত্তি সাবাড় কইরা দিব’

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
‘আধাপাহা ধান না কাডলে আত্তি সাবাড় কইরা দিব’

‘ধার-দেনা কইরা এক একর জমিতে বোরো আবাদ করছিলাম। এইবার ফলনও ভালা হইছিল। ধান পাকতে আরও এক সপাহ লাগব। কিন্তু কষ্টের ধান বাঁচাইতে অহন তো আর কোনো উপায় নাই। আত্তির (হাতির) ডরে আধাপাহা ধান কাডুন লাগতাছে। না কাডলে যেকোনো সুমু আত্তি সব ধান সাবাড় কইরা দিব।’ খেতের আধা-পাকা ধান কেটে বাড়ি নেওয়ার পথে কথাগুলো বলেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও স্থলবন্দরের পাথরভাঙার শ্রমিক জুলহাস উদ্দিন (৫৫)।

বন্য হাতির আক্রমণ জুলহাস উদ্দিন একা ক্ষতিগ্রস্ত নন। নালিতাবাড়ী উপজেলার নাকুগাঁও সীমান্তবর্তী এলাকার শতাধিক কৃষক খেতের আধা পাকা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন। হাতির পালকে প্রতিরোধ করতে তাঁরা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

বন বিভাগ ও স্থানীয় কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের নাকুগাঁও গ্রামের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা ১৫০ একর জমিতে বোরো ধান আবাদ করেছেন শতাধিক কৃষক। ওই এলাকায় ধান পাকতে আরও এক থেকে দুই সপ্তাহ লাগবে। কিন্তু এসব জমির পশ্চিমে উপজেলার পোড়াগাঁও ইউনিয়নের চৌকিদার টিলা ও বুরুঙ্গায় পাহাড়ি জঙ্গলে পাঁচ দিন ধরে ৩৫-৪০টি বন্য হাতি অবস্থান করছে।

গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে পাহাড় থেকে মধুটিলা ইকোপার্ক ও পূর্ব শমশ্চূড়া এলাকায় হাতির পাল ধানখেতে নেমে আসে। দেখতে পেয়ে এলাকার লোকজন মশাল জ্বালিয়ে, ঢাকঢোল পিটিয়ে হাতির পালকে প্রতিরোধ করেন। পরে পালটি জঙ্গলে চলে যায়। পরদিন সকাল থেকে জমি থেকে আধা পাকা ধান কেটে নিয়ে আসছেন বলে জানান কৃষকেরা।

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নাঁকুগাও গ্রামে আধা পাকা ধান কাটছেন কৃষকেরানাকুগাঁও গ্রামের পাথরভাঙা শ্রমিক আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, তিনি দেড় একর জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছেন। ফসল পাকতে ও কাটতে আরও এক থেকে দেড় সপ্তাহ লাগবে। কিন্তু হাতির আক্রমণের ভয়ে নিরুপায় হয়ে আধা পাকা ফসল কেটে আনছেন।

মো. নুরুজ্জামান নামের নাকুগাঁও গ্রামের আরেক কৃষক বলেন, ‘ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে আমার ৫০ শতাংশ জমির আধা পাকা ধান কেটে বাড়িতে এনেছি। ধানপাকা পর্যন্ত অপেক্ষা করলে তা হাতির পেটে চলে যেত।’

বন বিভাগের মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘হাতির পালটি পাঁচ দিন ধরে উপজেলার বুরুঙ্গা, চৌকিদারটিলা ও ডালুকোনা পাহাড়ি জঙ্গলে অবস্থান করছে। তাই ফসল রক্ষায় স্থানীয় কৃষকেরা খেত থেকে আধা পাকা ধান কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। যদি হাতির আক্রমণে ফসলের কোনো ক্ষতি হয়, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারিভাবে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। হাতি রক্ষায় বন বিভাগের নজরদারি আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘ভারতে ঢুকে’ পাকিস্তানি সেনাদের গুলি, সীমান্তে সংঘাত গড়াল ষষ্ঠ দিনে

বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তাঁর প্রেমিকাকে ধর্ষণ করলেন ছাত্রদল নেতা

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে না নেওয়ার প্রস্তাব র‍্যাব ডিজির

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

পরিপাকতন্ত্রের ওষুধের পেছনেই মানুষের ব্যয় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত