Ajker Patrika

গাংনীতে ভিজিডি চাল আত্মসাতের অভিযোগ, মৃত ব্যক্তির নামেও বরাদ্দ!

গাংনী (মেহেরপুর) প্রতিনিধি 
রাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সারগিদুল ইসলাম। ফাইল ছবি
রাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সারগিদুল ইসলাম। ফাইল ছবি

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সারগিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে মৃত ব্যক্তির নামে চাল বিতরণসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ভিজিডি (ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট প্রোগ্রাম) ও ভিজিএফের (ঈদ উপহারের চাল) চাল বরাদ্দ থেকে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বঞ্চিত করে আত্মসাৎ করেছেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর একটি মামলার কারণে রাইপুর ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সাকলায়েন সেপু আত্মগোপনে চলে গেলে শালদহ ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সারগিদুল ইসলাম জোরপূর্বক প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এর পর থেকেই শুরু হয় নানা অনিয়ম।

চলতি বছর ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকার দরিদ্র ও অসচ্ছলদের জন্য প্রত্যেককে ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়। রাইপুর ইউনিয়নে এ বরাদ্দ ছিল মোট ৩ হাজার ২০০ জনের জন্য। কিন্তু প্যানেল চেয়ারম্যান কর্তৃক জমা দেওয়া তালিকায় গোপালনগরের মৃত মোফাজ্জেল হকের নামও ছিল, যিনি ২০২৩ সালের ৭ এপ্রিল মারা গেছেন। অভিযোগ রয়েছে, এ ধরনের মৃত ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করে চাল আত্মসাৎ করা হয়েছে।

মৃত মোফাজ্জেল হকের ছেলে মিনারুল ইসলাম বলেন, ‘বাবা গত বছর মারা গেছেন। তবে আমার জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে গ্রামের একজনের মাধ্যমে ১০ কেজি চাল পেয়েছি। মেপে দেখিনি, যা দিয়েছে, তাই নিয়ে এসেছি।’

চাঁদপুর গ্রামের আবুছদ্দীন জানান, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল বরাদ্দ থাকার কথা থাকলেও গত পাঁচ মাসে তিনি পেয়েছেন মাত্র তিন মাসের চাল।

একই অভিযোগ করেছেন রেকসোনা খাতুন নামের আরও এক ভুক্তভোগী। তাঁর ভাষ্য, ‘ভিজিডি কার্ডে পাঁচ মাসের চাল বরাদ্দ ছিল, কিন্তু আমি পেয়েছি তিন মাসের চাল। বাকিটা কোথায় গেল, জানি না।’

তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্যানেল চেয়ারম্যান সারগিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির নামে কার্ড ১ নম্বর ওয়ার্ডে হয়েছে। বিষয়টি আমি জানি না। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উঠেছে, সবই মিথ্যা ও বানোয়াট।’

এ বিষয়ে রাইপুর ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আতিয়ার রহমান আজাদ বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির নামে চালের কার্ড হয়েছে—এটা সত্যি। তবে এ বিষয়ে চেয়ারম্যান ভালো বলতে পারবেন।’

গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘মৃত ব্যক্তির নামে চাল বিতরণের বিষয়টি আমাদের কানে এসেছে। এটি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হবে। তবে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত